নয়াদিল্লি, 19 সেপ্টেম্বর: সংসদের উভয় কক্ষে মহিলা সংরক্ষণ বিল সর্বসম্মতিক্রমে পাশ করার জন্য সাংসদদের কাছে আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ মঙ্গলবার তিনি বলেন, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে 'নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম'-কে আইনে পরিণত করতে হবে ৷ আর তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাঁর সরকার ৷ এ দিকে, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল নয়া মহিলা সংরক্ষণ বিলটি পেশ করার পর, আজকের মতো মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন ৷ তবে এই বিলের কৃতিত্ব তাঁদেরই বলে দাবি করেছে কংগ্রেস ৷
নতুন সংসদ ভবনে প্রথম অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন যে, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মহিলা সংরক্ষণ বিলটিতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে এবং এটা জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, এটি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে । মোদির কথায়, "বহু বছর ধরে নারী সংরক্ষণ নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক হয়েছে । নারী সংরক্ষণ নিয়ে এর আগে সংসদেও অনেক প্রচেষ্টা হয়েছে । 1996 সালে এই সংক্রান্ত প্রথম বিল আনা হয়েছিল । অটল বিহারী বাজপেয়ির আমলে বহুবার মহিলা সংরক্ষণ বিল আনা হয়েছে কিন্তু এর জন্য সংখ্যা সংগ্রহ করা যায়নি এবং স্বপ্নটি অপূর্ণ থেকে যায় ৷"
মোদির কথায়, "নারীদের ক্ষমতা দেওয়ার সেই কাজের জন্য এবং এই ধরনের অনেক মহৎ কাজের জন্য, ঈশ্বর আমাকে বেছে নিয়েছেন । আবারও আমাদের সরকার এই দিকে একটি পদক্ষেপ করেছে । গতকাল মন্ত্রিসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । সেপ্টেম্বরের এই 19 তারিখ ইতিহাসে খোদিত হতে চলেছে ৷"
নতুন সংসদ ভবনের লোকসভায় মোদি এ দিন বলেন, যখন মহিলারা প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন নীতি তৈরিতে তাঁদের সর্বাধিক অবদান রাখা প্রয়োজন ৷ নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রেও মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মনে করেন নমো ৷ তাঁর কথায়, "নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে, সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংশোধনী বিল পেশ করছে । বিলটির লক্ষ্য হল, লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় নারীদের অংশগ্রহণ সম্প্রসারিত করা । 'নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম'-এর মাধ্যমে, আমাদের গণতন্ত্র মজবুত হোক ৷ আমি এ জন্য আমাদের মা, বোন এবং কন্যাদের অভিনন্দন জানাই । আমি তাঁদের আশ্বাস দিচ্ছি যে, এই বিলটি আইনে পরিণত হওয়া নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ... আমি উভয় কক্ষের সকল সদস্যকে অনুরোধ করছি, সর্বসম্মতিক্রমে এই বিলটি পাশ করার জন্য ৷"
আরও পড়ুন: ভারত নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের জন্য প্রস্তুত, মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর
এ দিকে, মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন ৷ তবে রাজ্যসভায় কংগ্রেস দাবি করে যে, এই বিলের কৃতিত্ব তাদেরই ৷ রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "...ওরা আমাদের কৃতিত্ব দেয় না ৷ কিন্তু আমি তাদের নজরে আনতে চাই যে, মহিলা সংরক্ষণ বিল ইতিমধ্যে 2010 সালে পাশ হয়েছে কিন্তু এটি থামিয়ে রাখা হয়... ৷" তিনি আরও বলেন, "তফসিলি জাতিদের মধ্যে মহিলাদের শিক্ষার হার কম এবং সেই কারণেই রাজনৈতিক দলগুলির দুর্বল মহিলাদের বেছে নেওয়ার অভ্যেস রয়েছে এবং তারা তাঁদের বেছে নেবে না, যাঁরা শিক্ষিত এবং লড়াই করতে পারে ৷"
এ দিকে, খাড়গের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ৷ তিনি বলেন, "বিরোধী দলনেতা হিসেবে আমরা আপনাকে সম্মান করি ৷ কিন্তু সমস্ত দল কার্যকর নয় এমন মহিলাদের বেছে নেয়, এই বিবৃতি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় । আমাদের দল, প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা আমরা সবার ক্ষমতায়ন হয়েছে ৷ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু একজন ক্ষমতাশালী মহিলা...৷"