নয়াদিল্লি, 13 এপ্রিল: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় রোজগার মেলায় 71 হাজার জনকে চাকরির নিয়োগপত্র বিতরণ করেছেন ৷ ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, স্টার্টআপগুলি দেশে 40 লক্ষেরও বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাকরি তৈরি করেছে । আর যুবসমাজকে আরও উন্নত করতে এবং তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার প্রতি সরকার কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেটাই প্রতিফলিত হল রাষ্ট্রীয় রোজগার মেলায় ৷ তিনি আরও জানান, ভারতের অর্থনীতি বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে ৷ নিউ ইন্ডিয়ায় যে ধরনের নীতি ও কৌশল নেওয়া হচ্ছে, তার থেকেই নতুন সম্ভাবনা ও সুযোগের দিগন্ত খুলে যাচ্ছে ৷
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে 70 হাজার চাকরি দেওয়া হল ৷ এনডিএ ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি দ্রুত নিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ৷ বুধবার মধ্যপ্রদেশে 22 হাজারেরও বেশি শিক্ষককে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে ৷ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম প্রস্তুতিতে ভারতের অগ্রগতির কথাও এদিন প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ভারত 15 হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করেছে ।
তিনি বলেন, "দেশে কয়েক দশক ধরে একটি পন্থা প্রভাবশালী ছিল যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামগুলি কেবল আমদানি করা যেতে পারে । আমরা আমাদের নিজের দেশের নির্মাতাদের বিশ্বাস করিনি । আমাদের সরকার এই পদ্ধতির পরিবর্তন করেছে । আমাদের সশস্ত্র বাহিনী 300টি এমন সরঞ্জাম ও অস্ত্রের একটি তালিকা তৈরি করেছে, যা শুধুমাত্র ভারতেই তৈরি হবে ।’’ ড্রোন-সহ দেশের বিভিন্ন খাতে স্বনির্ভরতার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তরুণ প্রজন্ম নতুন যুগের প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ।’’
তিনি আরও বলেন, "নতুন ভারতের যুবকরা ড্রোন তৈরিতে ক্রমশ জড়িত ও ড্রোন পাইলট হয়ে উঠছে । কয়েক দশক ধরে আমাদের শিশুরা বিদেশ থেকে আমদানি করা খেলনা নিয়ে খেলত । আমরা দেশীয় খেলনা শিল্পের প্রচার শুরু করেছি এবং এটি আমাদের যুবশক্তির জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে । এই ক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ পরিকাঠামো প্রকল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে ও যুবশক্তির জন্য বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করেছে ৷”
প্রধানমন্ত্রী দেশে স্বাস্থ্য-সহ একাধিক ক্ষেত্রের বিনিয়োগ ও সেখান থেকে তৈরি হওয়া কর্মসংস্থানের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "বন্দর সেক্টরের উন্নয়ন হচ্ছে । স্বাস্থ্যক্ষেত্রও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সেরা উদাহরণ হয়ে উঠছে । প্রতিটি পরিকাঠামো প্রকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে । কৃষি ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গ্রামীণ এলাকায় কাজের সুযোগ বাড়িয়েছে ।" এছাড়া কেন্দ্রের তরফে পরিকাঠামো উন্নয়নে 2014 সালের পর থেকে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ৷
এই কর্মসূচির অংশ হিসাবে কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহণ ও জলপথ এবং আয়ুষ সর্বানন্দ সোনোয়াল গুয়াহাটির রেলওয়ে রং ভবন সাংস্কৃতিক হলে নিয়োগপত্র তুলে দেবেন ৷ পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি ডিমাপুরের ইমলিয়াঙ্গার মেমোরিয়াল সেন্টারে নিয়োগপত্র তুলে দেবেন ৷ গুয়াহাটিতে 207 জন, ডিমাপুরে 217 জন এবং শিলিগুড়িতে 225 জন প্রার্থীকে বিভিন্ন সরকারি দফতর থেকে এই প্রোগ্রামে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে ।
সারা দেশ থেকে নির্বাচিত এই চাকরি প্রাপকরা ভারত সরকারের অধীনে ট্রেন ম্যানেজার, স্টেশন মাস্টার, সিনিয়র কর্মাসিয়াল কাম টিকিট ক্লার্ক, ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর, কনস্টেবল, স্টেনোগ্রাফার, জুনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ডাক সহকারী, ইনকাম ট্যাক্স ইনস্পেক্টর, ট্যাক্স অ্যাসিস্ট্যান্ট, সিনিয়র ড্রাফটসম্যান, জেই/সুপারভাইজার, সহকারি অধ্যাপক, শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান, নার্স, প্রবেশনারি অফিসার, পিএ, এমটিএস ও অন্যান্য পদে কাজ করবেন৷ নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা কর্মযোগী প্রারম্ভের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন ৷ এই কর্মযোগী প্রারম্ভ হল বিভিন্ন সরকারি দফতরে সমস্ত নতুন চাকরি প্রাপকদের অনলাইন ওরিন্টেশন কোর্স ।
আরও পড়ুন: আধুনিক ও উন্নত ভারতের প্রয়োজনেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হয়েছে: মোদি