ETV Bharat / bharat

China New Army Base along LAC: অরুণাচল প্রদেশে ভারতের সীমান্তের ওপারে সেনা ঘাঁটি চিনের - Army Base along LAC

Pictures show China's new Army Base along LAC: অরুণাচল প্রদেশ বরাবর ভারতের সীমান্তের কাছে একটি নতুন সেনা ঘাঁটি তৈরি করেছে চিন । ইটিভি ভারত এর হাতে সেই সেনা ঘাঁটির ছবি এসেছে ৷ স্থানীয় গ্রামবাসীরা সীমান্তের ওপারের সেই সেনা ঘাঁটির ছবি ৷ লিখেছেন গৌতম দেবরয় ।

China
China
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 14, 2023, 8:32 PM IST

নয়াদিল্লি, 14 অক্টোবর: অরুণচল প্রদেশ সংলগ্ন ভারতীয় সীমান্তের ওপারে চিনের তরফে সেনার বেসক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে ৷ চিন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ভারত শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আলোচনায় আগ্রহী হলেও চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ এই সামরিক নির্মাণ করেছে ৷

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে যে পিএলএ চাইছে সীমান্তের ওপার থেকেই ভারতের দিকে কী হচ্ছে, সেই বিষয়ে নজর রাখতে ৷ গত সেপ্টেম্বরে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ওদিকের ছবি এবার থেকে তোলে ৷ তার পর সেই ছবি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয় তারা ৷ সেই থেকেই বিষয়টি ভারতের নজরে এসেছে ৷

ওই ছবিগুলির কয়েকটি ইটিভি ভারত-এর হাতে এসেছে ৷ সেই ছবিতে টিনের ছাউনি দেওয়া ইংরেজি এল হরফের মতো দেখতে সেনা ব্যারাক নজরে এসেছে ৷ সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে পিএলএ-র কিছু গাড়ি ৷ কাছাকাছি এলাকায় আরও কিছু বাড়ি দেখা গিয়েছে ৷

China New Army Base along LAC
ভারতীয় সীমান্তের ওপারে চিনের সেনাঘাঁটি

ছবির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের বিজেপি সাংসদ তাপির গাও ৷ তিনি ইটিভি ভারত-কে জানিয়েছেন, ভারতের উপর নজর রাখতেই এই বেসক্যাম্প চিন তৈরি করেছে ৷ তিনি বলেন, "হ্যাঁ, তাঁরা এমন ঘাঁটি তৈরি করেছে, যেগুলি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ।"

যে বেসটি তৈরি করা হয়েছে, সেটি আপার সিয়াং জেলার জেলিং এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার খুব কাছাকাছি । প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এই বছরের জানুয়ারিতে পিএলএ এই ঘাঁটি তৈরি করে ৷ এখানে কমপক্ষে 1,000 জন কর্মী রাখা যেতে পারে ।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সীমান্ত থেকে ক্যাম্পের আকাশ পথের দূরত্ব হবে প্রায় এক কিলোমিটার । গাও আরও জানিয়েছেন যে পিএলএ এই ধরনের কাঠামো তৈরি করা শুরু করেছে ৷ বিশেষ করে ভারতীয় এবং চিনা সেনাবাহিনীর মধ্যে লাদাখ অচলাবস্থার পরে ।

গেলিংয়ের জেলা পরিষদ সদস্য (জেডপিএম) পেমা লাপচিও এলাকার বাসিন্দারা ছবিগুলি ক্লিক করেছেন ৷ তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেছেন ৷ লাপচি বলেন, “আমি সেই ঘটনা সম্পর্কে সচেতন যেখানে আমাদের কিছু লোক চিনা ঘাঁটির ছবি ক্লিক করেছিল । এই জায়গাটি জেলিংয়ের ঠিক বিপরীতে। গ্রামবাসীরা ছবিগুলো যথাযথ ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে ।” তিনি জানিয়েছে যে এর আগে বেশ কয়েকটি ঘটনায় চিনা কর্তৃপক্ষ রাস্তা নির্মাণের জন্য জেসিবি ও অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম নিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল । স্থানীয়দের কঠোর বিরোধিতার মুখে তারা পিছু হটেছে ৷

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার বিকে খান্না জানিয়েছেন যে বলেছেন যে চিন সীমান্ত এলাকায় এমন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লাগাতার । তাই তিনি এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ তিনি বলেন, “তাদের (চিনা) একমাত্র উদ্দেশ্য হল ভারতীয় বাহিনীর গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা । এমনকি তারা এই উদ্দেশ্যে হাই-টেক গ্যাজেট ব্যবহার করে ৷” এর মোকাবিলায় ভারত সরকার সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরির কাজ করছে, তিনি সেটাও জানিয়েছেন ৷

কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় সেনার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বরাবর ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম শুরু করেছে । অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখণ্ড এবং লাদাখ রাজ্যের উত্তর সীমান্ত ঘেঁষে থাকা 19টি জেলার 46টি ব্লকের নির্বাচিত গ্রামের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সরকার এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে ৷

এই প্রকল্পের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা এবং কৃষি, উদ্যানপালন, ঔষধি গাছ, ভেষজ ইত্যাদির চাষ-সহ সমবায় সমিতির উন্নয়নের মাধ্যমে জীবিকা সৃষ্টির সুযোগ তৈরির জন্য বিভিন্ন গ্রামে কাজ করা হচ্ছে ৷ এছাড়া ওই গ্রামগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে ৷ অন্য পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে৷ 2026 সাল পর্যন্ত 4800 কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে সরকার ৷ প্রথম ধাপে 11টি জেলা, 28টি ব্লক এবং 1451টি গ্রামে এই কাজ করা হবে৷ এর ফলে প্রায় 1.42 লক্ষ লোক উপকৃত হবে । প্রকল্পের শেষে 662টি গ্রামের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে ৷

তাপির গাও বলেন, “এই কর্মসূচিতে সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী উদ্যোগ । সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা উন্নত জীবিকা নির্বাহের জন্য তাঁদের বাড়ি ছেড়ে অন্য উন্নত অঞ্চলে চলে যাওয়ার কারণে এটির খুব প্রয়োজন ছিল ৷”

আরও পড়ুন: গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক নেই, স্পষ্ট করলেন জয়শঙ্কর

নয়াদিল্লি, 14 অক্টোবর: অরুণচল প্রদেশ সংলগ্ন ভারতীয় সীমান্তের ওপারে চিনের তরফে সেনার বেসক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে ৷ চিন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ভারত শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আলোচনায় আগ্রহী হলেও চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ এই সামরিক নির্মাণ করেছে ৷

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে যে পিএলএ চাইছে সীমান্তের ওপার থেকেই ভারতের দিকে কী হচ্ছে, সেই বিষয়ে নজর রাখতে ৷ গত সেপ্টেম্বরে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ওদিকের ছবি এবার থেকে তোলে ৷ তার পর সেই ছবি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয় তারা ৷ সেই থেকেই বিষয়টি ভারতের নজরে এসেছে ৷

ওই ছবিগুলির কয়েকটি ইটিভি ভারত-এর হাতে এসেছে ৷ সেই ছবিতে টিনের ছাউনি দেওয়া ইংরেজি এল হরফের মতো দেখতে সেনা ব্যারাক নজরে এসেছে ৷ সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে পিএলএ-র কিছু গাড়ি ৷ কাছাকাছি এলাকায় আরও কিছু বাড়ি দেখা গিয়েছে ৷

China New Army Base along LAC
ভারতীয় সীমান্তের ওপারে চিনের সেনাঘাঁটি

ছবির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের বিজেপি সাংসদ তাপির গাও ৷ তিনি ইটিভি ভারত-কে জানিয়েছেন, ভারতের উপর নজর রাখতেই এই বেসক্যাম্প চিন তৈরি করেছে ৷ তিনি বলেন, "হ্যাঁ, তাঁরা এমন ঘাঁটি তৈরি করেছে, যেগুলি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ।"

যে বেসটি তৈরি করা হয়েছে, সেটি আপার সিয়াং জেলার জেলিং এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার খুব কাছাকাছি । প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এই বছরের জানুয়ারিতে পিএলএ এই ঘাঁটি তৈরি করে ৷ এখানে কমপক্ষে 1,000 জন কর্মী রাখা যেতে পারে ।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সীমান্ত থেকে ক্যাম্পের আকাশ পথের দূরত্ব হবে প্রায় এক কিলোমিটার । গাও আরও জানিয়েছেন যে পিএলএ এই ধরনের কাঠামো তৈরি করা শুরু করেছে ৷ বিশেষ করে ভারতীয় এবং চিনা সেনাবাহিনীর মধ্যে লাদাখ অচলাবস্থার পরে ।

গেলিংয়ের জেলা পরিষদ সদস্য (জেডপিএম) পেমা লাপচিও এলাকার বাসিন্দারা ছবিগুলি ক্লিক করেছেন ৷ তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেছেন ৷ লাপচি বলেন, “আমি সেই ঘটনা সম্পর্কে সচেতন যেখানে আমাদের কিছু লোক চিনা ঘাঁটির ছবি ক্লিক করেছিল । এই জায়গাটি জেলিংয়ের ঠিক বিপরীতে। গ্রামবাসীরা ছবিগুলো যথাযথ ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে ।” তিনি জানিয়েছে যে এর আগে বেশ কয়েকটি ঘটনায় চিনা কর্তৃপক্ষ রাস্তা নির্মাণের জন্য জেসিবি ও অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম নিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল । স্থানীয়দের কঠোর বিরোধিতার মুখে তারা পিছু হটেছে ৷

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার বিকে খান্না জানিয়েছেন যে বলেছেন যে চিন সীমান্ত এলাকায় এমন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লাগাতার । তাই তিনি এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ তিনি বলেন, “তাদের (চিনা) একমাত্র উদ্দেশ্য হল ভারতীয় বাহিনীর গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা । এমনকি তারা এই উদ্দেশ্যে হাই-টেক গ্যাজেট ব্যবহার করে ৷” এর মোকাবিলায় ভারত সরকার সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরির কাজ করছে, তিনি সেটাও জানিয়েছেন ৷

কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় সেনার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বরাবর ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম শুরু করেছে । অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখণ্ড এবং লাদাখ রাজ্যের উত্তর সীমান্ত ঘেঁষে থাকা 19টি জেলার 46টি ব্লকের নির্বাচিত গ্রামের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সরকার এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে ৷

এই প্রকল্পের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা এবং কৃষি, উদ্যানপালন, ঔষধি গাছ, ভেষজ ইত্যাদির চাষ-সহ সমবায় সমিতির উন্নয়নের মাধ্যমে জীবিকা সৃষ্টির সুযোগ তৈরির জন্য বিভিন্ন গ্রামে কাজ করা হচ্ছে ৷ এছাড়া ওই গ্রামগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে ৷ অন্য পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে৷ 2026 সাল পর্যন্ত 4800 কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে সরকার ৷ প্রথম ধাপে 11টি জেলা, 28টি ব্লক এবং 1451টি গ্রামে এই কাজ করা হবে৷ এর ফলে প্রায় 1.42 লক্ষ লোক উপকৃত হবে । প্রকল্পের শেষে 662টি গ্রামের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে ৷

তাপির গাও বলেন, “এই কর্মসূচিতে সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী উদ্যোগ । সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা উন্নত জীবিকা নির্বাহের জন্য তাঁদের বাড়ি ছেড়ে অন্য উন্নত অঞ্চলে চলে যাওয়ার কারণে এটির খুব প্রয়োজন ছিল ৷”

আরও পড়ুন: গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক নেই, স্পষ্ট করলেন জয়শঙ্কর

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.