হায়দরাবাদ: এখন ডিজিটাল যুগ ৷ হাতের মুঠোয় স্মার্টফোন ৷ এর জেরে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেড়েছে সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের বাবা-মায়ের কাছে ৷ শিশুদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে বড় করে তোলা খুব দরকার ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অনেকেই সোশাল মিডায়ার খপ্পরে পড়ছে ৷ যার পরিণতি হচ্ছে নেতিবাচক ।
বর্তমানে মোবাইল ফোন এবং সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মের অত্যধিক ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে ভার্চুয়াল জগতে আটকে রাখছে ৷ যার প্রভাব পড়ছে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে ৷ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে অপরাধের হার । এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সোশাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সওয়াল করে কর্ণাটক হাইকোর্ট যে অবস্থান নিয়েছে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ৷
স্মার্টফোন এবং সোশাল মিডিয়া দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে ৷ বিশেষ করে করোনার সময় থেকে ৷ যখন পড়ুয়ারা ফোনে অনলাইন ক্লাস করতে শুরু করে ৷ এরপর থেকেই শিশু থেকে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বাড়তে থাকে ফোনের ব্যবহার ৷ ফোনে বেশি মনোনিবেশ করার ফলে ছাত্রদের মধ্যে দেখা দেয় পড়াশোনার প্রতি অবহেলা ৷ তারা ভিডিয়ো গেম, ওয়েব সিরিজ, এমনকী ওটিটি প্ল্যাটফ্রমের অপরাধ-সম্পর্কিত বিষয়বস্তু দেখতে শুরু করে ।
শিশুদের জীবনে স্মার্টফোন এবং সোশাল মিডিয়া আসক্তির বিরূপ প্রভাব নিয়ে ক্রমশ উদ্বিগ্ন হড়ে পড়ছেন বিশেষজ্ঞরাও । এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের জন্য বয়স সীমা 21 বা আঠারো বছর করার কর্ণাটক হাইকোর্টের সুপারিশকে সকলে স্বাগত জানিয়েছেন ।
স্বাস্থ্য সচেতনতা
সাম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে সন্তানদের মধ্যে অত্যধিক ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যবহার ভাবাচ্ছে অভিভাবকদের ৷ অভিভাবকদের মধ্যে 61 শতাংশ মানুষ আতঙ্কিত যে তাঁদের সন্তানরা সোশাল মিডিয়া, অনলাইন গেমিং এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে । এই আসক্তি হচ্ছে তিনজনের মধ্যে একজনের, যা বাচ্চাদের মধ্যে আবেগ এবং মানসিক বিষণ্নতার জন্ম দিচ্ছে । তাই এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করার জন্য 18 বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে পিতামাতার অনুমোদন প্রয়োজন ৷ এই পদক্ষেপের বিষয়ে 73 শতাংশ অভিভাবক সম্মত্তি জানিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: সোশাল মিডিয়া-ওটিটিতে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ ? কেন্দ্রকে জানাতে সময় দিল দিল্লি হাইকোর্ট
নীতি প্রণয়ন
বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিভাবকদের তদারকি জোরদার এবং শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন রয়েছে । তার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া উচিত ৷ কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য উভয় সরকারেরই উচিত শিশুদের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করা থেকে বিরত রাখার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করা । পাশাপাশি 18 বছরের কম বয়সি শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাবা-মার সম্মতি বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷