পটনা, 7 জুন: গলছে বরফ ! এক টেবিলে বসছেন রাহুল-মমতা-খাড়গে ৷ আগামী 23 জুন পটনায় মুখোমুখি বসছেন তাঁরা ৷ জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে বিজেপি বিরোধী জোটের প্রথম বৈঠক হচ্ছে পটনায় ৷ আর সেখানেই ফের কাছাকাছি আসছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল ৷ আগামী 12 জুন বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও মূলত কংগ্রেসের তরফে প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল ৷
মূলত নীতীশ কুমার চেয়েছিলেন অন্তত বিরোধী ঐক্য জোটের বৈঠকে থাকুন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ রাহুল গান্ধি এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে যাতে বৈঠকে থাকেন সে জন্য তদ্বিরও করেছিলেন নীতীশ কুমার ৷ যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বৈঠকে থাকবেন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন ৷ কংগ্রেসের তরফে নিশ্চয়তা না-পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক বাতিল করা হয় ৷
বুধবার জনতাদল ইউনাইটেড (জেডিইউ) প্রধান লালন সিং জানান, আগামী 23 জুন পটনায় বিরোধীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত বিরোধী দল এতে সম্মত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি ৷ সাংবাদিক বৈঠকে লালন সিং জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং দলের নেতা রাহুল গান্ধি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, উদ্ধব ঠাকরের পাশাপাশি বৈঠকে যোগ দেবেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সিপিআইয়ের ডি রাজা, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন ৷
এর আগে দু'দফায় রাহুল গান্ধি এবং খাড়গের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন নীতীশ কুমার ৷ এরই সঙ্গে, আলাদা করে প্রায় সব অবিজেপি এবং সমমনা দলের শীর্য নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন নীতীশ ৷ কলকাতায় গিয়ে কথা বলেছিলেন মমতার সঙ্গেও ৷ আর সেই পৃথক বৈঠকের পরই সিদ্ধান্ত হয় আগামী 12 জুন পটনায় বৈঠকে বসবে অবিজেপি সবকটি দল ৷ 24-এর আগে মূলত বিরোধী রণকৌশল ঠিক করার জন্যই এই বৈঠক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু এত করেও শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক বাতিল করতে হয় ৷ যার মূল কারণ হিসাবে কংগ্রেসের দিকেই আঙুল তুলেছিল জেডিইউ ৷ বাংলায় একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ককে ভাঙিয়ে তৃণমূল নিজেদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার পরই ফোঁস করে উঠেছিল এআইসিসি ৷ জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ টুইট করে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলকে উদ্দেশ্য করে ৷
আরও পড়ুন: 15 জুনের মধ্যে চার্জশিট পেশের আশ্বাস ক্রীড়ামন্ত্রীর, আপাতত স্থগিত সাক্ষীদের আন্দোলন
রমেশ স্পষ্ট অভিযোগ করেছিলেন, গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয় সব জায়গাতেই কংগ্রেসকে ভাঙানোর কাজ করেছে তৃণমূল ৷ সেই পথ অনুসৃত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ এরপর বাংলা কংগ্রেস বিশেষত অধীর চৌধুরী কোনও মতেই চাননি বিরোধী জোটের ঐক্যে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি ভাগাভাগি করুন রাহুল গান্ধিরা ৷ আর সে কারণেই কংগ্রেস জোটের বৈঠকে 12 তারিখ যাবে বলেও পিছিয়ে আসে ৷ আদতে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তৃণমূলের সঙ্গে তিক্ততা-সহ আরও বেশ কিছু কারণেই দূরত্ব বজায় রেখেছে কংগ্রেস ৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত 'জাতীয় স্বার্থে' বৈঠকে থাকছে রাহুল গান্ধি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷