ভুবনেশ্বর, 22 জুলাই: মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার সময়কালের নিরিখে জ্যোতি বসুকে টপকে গেলেন নবীন পট্টনায়েক ৷ শনিবার থেকে তিনি দেশে সবচেয়ে বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন ৷ ওড়িশায় তাঁর শাসনকালের মেয়াদ হল 23 বছর 4 মাস 17 দিন ৷ এর ফলেই তিনি জ্যোতি বসুকে টপকে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন ৷ এই তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন সিকিএমের পবন চামলিং ৷ তিনি প্রায় 25 বছর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে ছিলেন ৷ 2024 সালে ওড়িশায় বিধানসভা নির্বাচন ৷ সেই ভোটে জিতে আবার মুখ্যমন্ত্রী হলে নবীনই হবেন দেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের মুখ্যমন্ত্রী ৷
প্রয়াত সিপিএম নেতা জ্য়োতি বসু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন 1977 সালে ৷ 2000 তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান ৷ তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ছিল 23 বছর 138 দিন ৷ 2000 সালের 5 নভেম্বর তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন ৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই বছরের 5 মার্চ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন নবীন পট্টনায়েক ৷ অন্যদিকে পবন চামলিং সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন 1994 সালের 12 ডিসেম্বর ৷ তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষ হয় 2019 সালের 27 মে ৷ তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ 24 বছর 5 মাস 15 দিন ৷ ফলে চামলিংয়ের রেকর্ড ভাঙতে গেলে আরও এক বছর এক মাস ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে হবে নবীন পট্টনায়েককে ৷
আরও পড়ুন: কেন্দু পাতা তোলার সঙ্গে যুক্তদের 92.37 কোটির আর্থিক সাহায্য়ের ঘোষণা ওড়িশা সরকারের
বাবা বিজু পট্টনায়েকের মৃত্যুর পর 1997 সালে নবীনের রাজনীতিতে প্রবেশ ৷ বাবার নামেই তিনি দল তৈরি করেন ৷ নাম দেন - বিজু জনতা দল ৷ সেই থেকে তিনিই দলের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ৷ 1997 থেকে 2000 সাল পর্যন্ত তিনি আসকা কেন্দ্র থেকে লোকসভার সাংসদ ছিলেন ৷ অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারে তিনি ইস্পাত ও খনি মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন 1998 সাল থেকে 2000 সাল পর্যন্ত ৷ ওই বছর তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট করে ওড়িশায় সরকার তৈরি করেন ৷ তার পর থেকে পর পর পাঁচটি বিধানসভা ভোটে জিতেছেন ৷ 2024 সালে জিতলে তিনি টানা ছ’বার বিধানসভা ভোটে জয়ের রেকর্ড করতে পারবেন ৷
1946 সালের 16 অক্টোবর ওড়িশার কটকে নবীনের জন্ম ৷ বাবা বিজু পট্টনায়েক ওড়িশার দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ৷ মায়ের নাম জ্ঞানা দেবী ৷ তিনি দেরাদুনের ওয়েলহাম বয়েজ স্কুলে শিক্ষালাভ করেন । পরে দুন স্কুলে পড়াশোনা করেন । স্কুলের পর তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরোরি মাল কলেজ থেকে পাস করেন ।
তিনি লিখতে ভালোবাসেন ৷ বরাবরই রাজনীতি থেকে দূরে থাকতেন ৷ কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর সেই রাজনীতিতেই হাত পাকাতে শুরু করেন নবীন ৷ তাঁর বিনয়ী ব্যবহার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং গরিব কল্য়াণমূলক নীতি তাঁকে ওড়িশায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা দিয়েছে ৷ সেই জনপ্রিয়তার প্রমাণ প্রতিটি ভোটেই পাওয়া যায় ৷
আরও পড়ুন: করোনা আবহে কেন্দ্রের বোঝা বাড়াতে নারাজ, যশে মোদির কাছে সাহায্য চাননি নবীন
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাবার মতোই তিনি আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে রাষ্ট্রের উন্নয়নের কাজে রূপান্তরিত করেছেন । তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য । তার বড় বোন গীতা মেহতা একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক ।