কোহিমা, 7 ডিসেম্বর : সেনার গুলিতে 15 জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পর আফস্পা (AFSPA) বাতিলের দাবি উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারতে ৷ সূত্রের খবর, নাগাল্যান্ড মন্ত্রিসভায় এই নিয়ে প্রস্তাব পাস হয়েছে আজ, মঙ্গলবার ৷ আফস্পা বা আর্মড ফোর্সেস (স্পেশাল পাওয়ার) অ্যাক্ট, 1958 (Armed Forces Special Powers Act, 1958) প্রত্যাহার নিয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাবে সেখানকার সরকার (Nagaland government to appeal Centre for repealing AFSPA) ৷ তাই ওই রাজ্যের বিধানসভায় খুব শীঘ্রই প্রস্তাব পাস করানো হবে ৷ এর পাশাপাশি গুলি কাণ্ডের জেরে বাতিল হয়ে গেল সে রাজ্যের ঐতিহ্যমন্ডিত উৎসব হর্নবিল ৷
নাগাল্যান্ডে নাগরিক হত্যা
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার ৷ সেদিন জঙ্গি দমন অভিযান চলাকালীন একটি গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় সেনা ৷ তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় ৷ পরে স্থানীয়রা সেনা ছাউনি ঘিরে ফেলে অগ্নিসংযোগ করে ৷ সেই সময় সেনার গুলিতে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয় ৷ রবিবার অসম রাইফেলসের ছাউনিতে বিক্ষোভ-অগ্নিংসংযোগ হয় ৷
সেই ঘটনাতেও একজনের মৃত্যু হয় ৷ এই ঘটনা নিয়ে নাগাল্যান্ড-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ কার্যত অগ্নিগর্ভ ৷ উঠেছে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি ৷
আফস্পা
আফস্পা মূলত উপদ্রুত অঞ্চলে লাগু করা হয় ৷ উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর (ইম্ফল মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল এরিয়া এর মধ্যে পড়ে না), অরুণাচল প্রদেশের চ্যাংল্যাং, লংডিং, টিরাপ জেলা এবং অসম সীমানায় অবস্থিত আটটি থানা এলাকায় আফস্পা লাগু রয়েছে ৷
এই নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে ৷ তাই বারবার এই আইন বাতিলের দাবি উঠেছে ৷ নাগাল্যান্ডের ঘটনার পর এই দাবি আরও জোরদার হয়েছে ৷ গতকাল এই নিয়ে টুইট করেছিলেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী করনাড সাংমা ৷ তিনিও আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি তোলেন ৷ এবার নাগাল্যান্ড সরকারও সেই পথে হাঁটতে চলেছে ৷
হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল
নাগাল্যান্ডের অন্যতম উৎসব এই হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল ৷ সেখানকার কাসিমা গ্রামে এই উৎসব হয় ৷ পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এই উৎসব ৷ টানা দশদিন ধরে চলা এই উৎসব শেষ হওয়ার কথা ছিল 10 ডিসেম্বর ৷ নাগাল্যান্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই উৎসব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে (Nagaland Govt Calls Off Hornbill Festival) ৷ যদিও আগে এই উৎসব একদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নাগাল্যান্ড সরকার ৷ পরে পুরো উৎসবই তারা বাতিল করে দেয় ৷
মন জেলায় বনধ
নাগাল্যান্ডের মন জেলায় কোনইয়াক ইউনিয়ন আদিবাসীদের সর্বোচ্চ সংগঠন ৷ সেই সংগঠনের তরফে মঙ্গলবার বনধ ডাকা হয়েছে (Konyak Union Imposes day long Bandh) ৷ তাছাড়া সাতদিনের শোকও ঘোষণা করা হয়েছে ৷ তাদের তরফে সেনার কাছে ওই সাতদিন এলাকায় টহল না দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ৷ কারণ, সেক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে ৷
আরও পড়ুন : Meghalaya CM on AFSPA : আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী
তাদের তরফে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে ৷ এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের আর্জি জানানো হয়েছে ৷ সেই তদন্তকারী দলে ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অরগানাইজেশনের দু’জন সদস্যকে রাখার দাবি জানানো হয় ৷ দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের পরিচয় একমাসের মধ্যে প্রকাশ্য়ে আনার দাবিও জানানো হয়েছে ৷
মিজোরামের প্রতিক্রিয়া
নাগাল্যান্ডে হত্যার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা ৷ তিনি নাগাল্যান্ডের মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন ৷