গয়া, 21 জানুয়ারি: আর মাত্র কয়েকটি দিনের অপেক্ষা ৷ তারপরই আরও একটি সাধারণতন্ত্র দিবস (Republic Day of India 2023) পালন করবে গোটা দেশ ৷ তার আগে ব্যস্ততা বেড়েছে বিহারের (Bihar) গয়ার (Gaya) বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা অসংখ্য পরিবারের সদস্যদের ৷ বংশ পরম্পরায় এই পরিবারগুলি সেলাইয়ের কাজ করে আসছে ৷ সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে হাজার হাজার জাতীয় পতাকা তৈরি করেন এইসব পরিবারের সদস্যরা (Muslim Families Make Tricolour Flags) ৷ তাঁদের কাছে কাপড় জুড়ে, সেলাই করে জাতীয় পতাকা তৈরি করা শুধুমাত্র পেশা নয়, বরং তার থেকে অনেক বেশি কিছু ৷ এই দায়িত্ব তাঁদের কাছে সম্মান ও মর্যাদার ৷ প্রসঙ্গত, এই পরিবারগুলি ভারতের সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত ৷
একদিকে যখন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার খবর বারবার শিরোনামে উঠে আসছে, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে গয়ার এই গ্রামগুলি দিচ্ছে সৌভ্রাতৃত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অখণ্ড ভারতের বার্তা ৷ এখানকার পরিবারগুলির সব বয়সের সদস্যরাই জাতীয় পতাকা তৈরি করেন ৷ শুধু তাই নয়, এখনও পরিবারের তরুণদের হাতেকলমে জাতীয় পতাকা তৈরি করতে শেখান প্রবীণরা ৷ এতে তাঁরা গর্ব অনুভব করেন ৷ তাঁরা চান, চিরকাল বজায় থাকুক এই পারিবারিক ঐতিহ্য ৷
আরও পড়ুন: জম্মু নরওয়ালে জোড়া বিস্ফোরণে আহত বেশ কয়েকজন
পরিবারের কিশোরী থেকে বৃদ্ধ, এই সময়টায় সকলেই ব্যস্ত থাকেন জাতীয় পতাকা তৈরির কাজে ৷ প্রথমে গেরুয়া ও সবুজ কাপড় পাইকারি হারে কিনে আনা হয় ৷ সঙ্গে থাকে সাদার উপর নির্দিষ্ট দূরত্বে আঁকা গাঢ় নীল রঙের অশোক চক্র ৷ নির্দিষ্ট মাপে সেই তিন ধরনের কাপড় কেটে পরস্পর জুড়ে, সেলাই করে তৈরি হয় প্রত্যেক ভারতবাসী গর্বের, আত্মসম্মানের প্রতীক, আমাদের তেরঙা !
গয়ার মনপুর গ্রামের বাসিন্দা, 55 বছরের মহম্মদ গুলাম মুস্তাফা ৷ ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে জানালেন, তাঁর যখন 15 বছর বয়স, তখন পতাকা তৈরিতে হাতেখড়ি হয় ৷ তারপর থেকে টানা 40 বছর ধরে এই কাজ করে চলেছেন তিনি ৷ মুস্তাফা জানান, তাঁকে এই কাজ শিখিয়েছেন তাঁর বাবা ৷ এখন খাদি গ্রাম উদ্যোগের অধীনে পতাকা তৈরির বরাত নেন মহম্মদ গুলাম মুস্তাফা ৷ দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন তিনি ৷ রোজ রোজগার হয় 500 থেকে 600 টাকা ৷ 26 জানুয়ারি এবং 15 অগাস্টের আগে কাজের চাপ বাড়ে ৷ মুস্তাফা চান, আগামী দিনে তাঁর উত্তরসূরিরাও এই কাজ চালিয়ে যান ৷ তিনি জানান, এবছর সাধারণতন্ত্র দিবসের জন্য শুধুমাত্র তাঁর পরিবারের সদস্যরাই 10 হাজার তেরঙা তৈরি করবেন ৷