সালেম (তামিলনাড়ু), 18 জুলাই: অর্থাভাবে ছেলের কলেজের ফি দিতে পারছিলেন না ৷ তাই মনে মনে ফন্দি আঁটলেন মা ৷ ক্ষতিপূরণের টাকায় ছেলে যাতে কলেজে ভর্তি হতে পারে, তাই নিজের জীবনকেই সঁপে দিলেন এক মহিলা ৷ গত 28 জুন একটি বেসরকারি চলন্ত বাসের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন ওই মহিলা। সালেম টাউন থানার পুলিশ এই ঘটনায় মামলা দায়ের করে ও দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করে ৷ তাতে মঙ্গলবার পুলিশ জানতে পারে ছেলের কলেজ ফি দিতে না-পারার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন ৷ সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হলে মিলবে ক্ষতিপূরণ। আর তা দিয়ে মেটানো যাবে কলেজের ফি। সেই লক্ষ্যেই আত্মহননের পথ বেছেছেন তিনি।
আফরাহারাম এলাকার বছর ছেচল্লিশের পাপাপাথি ছিলেন একজন সরকারি সাফাইকর্মী ৷ তামিলনাড়ুর সালেম জেলার কালেক্টর অফিসে কাজ করতেন বিধবা ওই মহিলা। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমান। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ছেলের কলেজের ফি জোগাড় করতে না-পেরে মনমরা ছিলেন পাপাপাথি। ফি-র অর্থ যোগারের জন্য একধিকবার বিভিন্নজনের কাছে দরবার করেও ব্যর্থ হন। দিশাহারা পাপাপাথি জানাতে পারেন, সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃ্ত্যু হলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা ৷ পাশাপাশি সরকারি সাফাই কর্মী হওয়ায় পাপাপাথির সেই ভাবনা।
দুর্ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের ভিডিয়োটিতে দেখা গেছে, পাপাপাথি রাস্তার ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় একটি সরকারি বাসকে দ্রুত গতিতে আসতে দেখেই আচমকা মাঝরাস্তায় চলে যান তিনি ৷ দ্রুতি গতির বাসটি সে সময় সজোরে তাঁকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন ওই মহিলা। সঙ্গে সঙ্গে বাসের মানুষজন মহিলাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষ পাপাপাথির ছেলেকে 45 হাজার টাকা ফি দিতে বলেছিল, কিন্তু তিনি টাকা দিতে পারেননি।
এবিষয়ে ইটিভি ভারত স্যানিটেশন ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী প্রিয়স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাতে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলা কালেক্টর অফিয়ের স্থায়ী সাফাই কর্মী ছিলেন না ৷ চুক্তির ভিত্তিতেই কাজ করছিলেন তিনি। পাপাপাথি যদি স্থায়ী কর্মী হতেন এবং স্যানিটারি ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সদস্য হতেন, তবেই সরকার তাঁর মৃত্যুর জন্য এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করত।
আরও পড়ুন: প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মৃত মা ও মেয়ে-সহ 3, পলাতক অভিযুক্ত চালক