হায়দরাবাদ, 11 নভেম্বর: বছরে একবার অন্তত আয়-ব্যয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনে । কিন্তু অধিকাংশ আঞ্চলিক দলই সেই পথে হাঁটে না বলে এবার অভিযোগ সামনে এল । জানা গিয়েছে, 2019-’20 অর্থবর্ষে দেশের 25টি আঞ্চলিক দলের সম্মিলিত আয় ছিল 803 কোটি 24 লক্ষ টাকা ৷ কিন্তু এর মধ্যে 23টি দলই নিজেদের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নথি কমিশনে জমা দেয়নি ৷
রাজনৈতিক দলগুলি আয়-ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে কাজ করা অ্যাসোসিয়েশব ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) সংস্থার তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে ৷ তাতেই আঞ্চলিক দলগুলির বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ সামনে এসেছে ৷ তাতে বলা হয়েছে, আয়-ব্যয় গোপন করা তো বটেই, কোথা থেকে কত অনুদান আসে, তা নিয়েও লুকোছাপা করে আঞ্চলিক দলগুলি ৷
ওই রিপোর্টের দাবি অনুযায়ী, আঞ্চলিক দলগুলির মোট আয়ের 55.50 শতাংশই আসে অনুদান থেকে, যার পরিমাণ 445 কোটি টাকার বেশি ৷ 5 কোটি টাকা মতো আসে স্বেচ্ছা অনুদান থেকে এবং বাকি 426 কোটি টাকা আসে ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে ৷ কিন্তু গোপন অনুদানের ওই বিপুল পরিমাণ টাকার সূত্র খোলসা করতে নারাজ কোনও দলই ৷
আরও পড়ুন: Supreme Court : অবাধ-শান্তিপূর্ণ ভাবে পৌরভোট করতে ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এডিআর-এর দাবি, বার্ষিক অডিট রিপোর্টে গোপন সূত্র থেকে আসা অনুদান থেকে আয়ের উল্লেখ করতে হয় দলগুলিকে ৷ গোপন অনুদান থেকে আয়ের পরিমাণ 20 হাজার টাকার কম হলে, কমিশনের কাছে সূত্র খোলসা না করলেও চলে ৷ কিন্তু তার ঊর্ধ্বে হলে সব কিছু বিশদে জানাতে হয় ৷ কিন্তু 23টি দলই তা খোলসা করেনি ৷ এর মধ্যে আবার বড়-ছোট, কোনও অনুদানের সূত্রই প্রকাশ করার গরজ দেখায়নি 9টি দল ৷
গোপনে আসা অনুদানের সূত্র খোলসা না করার তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (89.158 কোটি), তেলুগু দেশম পার্টি (81.694 কোটি), ওয়াইআর এস কংগ্রেস (74.75 কোটি), বিজু জনতা দল (50.586 কোটি) এবং দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাজগম (45.50 কোটি ) ৷ তবে এমন দলও রয়েছে, যারা 20 হাজারের কম অনুদানের তথ্যও জানিয়েছে কমিশনকে, যেমন—ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ, পাট্টালি মক্কল কাটচি, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা প্রজাতান্ত্রিক, সিকিম ডেমোক্র্যাট ফ্রন্ট এবং নাগা পিপলস ফ্রন্ট ৷
এর মধ্যে আবার আম আদমি পার্টি, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ এবং লোক জনশক্তির অনুদানের বিশদ রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে রয়েছে ৷ কিন্তু বার্ষিক আয়-ব্যায়ের সঙ্গে তাদের অনুদানের রিপোর্টের মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে ৷ এই তিন দল তাদের বার্ষিক অনুদান দেখিয়েছে যথাক্রমে 6.105 কোটি, 31.20 কোটি এবং 4.14 কোটি টাকা ৷
আরও পড়ুন: Punjab politics : রুবির কংগ্রেসে যোগদানের পর বিজেপির নিশানায় আপ
এই গোপন অনুদান কোথা থেকে আসছে, তা জানার কোনও উপায়ই এই মুহূর্তে হাতে নেই ৷ 2013 সালে জাতীয় দলগুলিকে তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় আনা হলেও, সেখানেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে রয়েছে ৷ জাতীয়, আঞ্চলিক-সহ সব দলকেই তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় আনার দাবি তুলেছে এডিআর ৷