ETV Bharat / bharat

Atiq Ahmed Political Journey: পাঁচ বারের বিধায়ক, জেল থেকে লড়াই মোদির বিরুদ্ধে ; আতিকের রাজনৈতিক জীবনও নাটকীয় - জেল থেকে লড়াই মোদির বিরুদ্ধে

শনিবার রাত থেকে খবরের শিরোনামে আতিক আহমেদ ৷ গ্যাংস্টার নামে কুখ্য়াত হলেও তার একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল ৷ আর সে জীবনেও যথেষ্ট দাপুটে ছিল আতিক ৷ জওহরলাল নেহরুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়া, নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে জেলে বসেই লড়াই- রঙিন এই গ্যাংস্টার-নেতার রাজনৈতিক জীবন ৷

Atiq Ahmed
আতিক আহমেদ
author img

By

Published : Apr 16, 2023, 11:07 AM IST

প্রয়াগরাজ, 16 এপ্রিল: গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ ৷ তিনি রাজনৈতিক নেতা থেকে গ্যাংস্টার হয়ে উঠেছেন নাকি গ্যাংস্টার-ই তাঁর প্রথম পরিচয় ? শনিবার রাতে নাটকীয় ভাবে পুলিশের সামনে তার ও তার ভাই আশরফের মৃত্যু হয় ৷ কে এই আতিক আহমেদ ? এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে টানা পাঁচবার রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জয়ী হয়েছিল সে ৷ আতিকের জীবনের রাজনৈতিক পর্বের পরতে পরতে আছে থ্রিলার ।

1989 সালে রাজনীতিতে প্রবেশ আতিকের ৷ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া ৷ সেবারই জয়ী হয়ে বিধায়ক হওয়া ৷ 1996 সালে প্রয়াত মুলায়ম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সে ৷ এরপর 2002 সালে আপনা দলের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে ফের প্রার্থী হওয়া এবং ফের জয় ৷ প্রসঙ্গত, 1999 সাল থেকে 2003 সাল পর্যন্ত আপনা দলের সভাপতি পদেও আসীন ছিল আতিক ৷

2004 সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিধানসভা কেন্দ্রটি ছেড়ে দেয় আতিক ৷ সমাজবাদী পার্টি তাকে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়ার টিকিটও দেয় ৷ এবারও জয়ী আতিক ৷ প্রথমবার সংসদে প্রবেশ এসপি লোকসভা সাংসদ আতিক আহমেদের ৷ প্রসঙ্গত, ফুলপুর কেন্দ্রটির সঙ্গে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একটি যোগাযোগ আছে ৷ স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচন হয় 1952 সালে ৷ সেই নির্বাচন থেকে শুরু করে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত এই লোকসভা কেন্দ্রটি নেহরুর দখলেই ছিল ৷

আরও পড়ুন: সাংবাদিক সেজেই খুন আতিক-আশরফদের, বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ যোগীর

ফিরে আসা যাক আতিক আহমেদের রাজনৈতিক জীবনে ৷ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি একের পর এক অপরাধের ঘটনায় নাম জড়ায় আতিকের ৷ পাশাপাশি আতিকের ছেড়ে দেওয়া এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয় তার ভাই খালিদ আজম ওরফে আশরফ ৷ কিন্তু এবার বড় ধাক্কা খেল আতিক ৷ আশরফকে হারিয়ে জয়ী হল বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপি-র রাজু পাল ৷ এই হারটা হয়ত মেনে নিতে পারেনি সাংসদ আতিক ৷ কিছুদিনের মধ্য়ে 2005 সালের 25 জানুয়ারি খুন হয় রাজু পাল ৷ এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী পুলিশের কাছে আতিকের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ফের এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী হয় আতিকের ভাই আশরফ ৷ এবার তার প্রতিপক্ষ প্রয়াত রাজু পালের স্ত্রী পুজা পাল ৷ কিন্তু এবার জয়ী আশরফ ৷

নির্বাচনে জিতলেও রাজু পালের খুনের ঘটনা আতিক-আশরফের পিছু ছাড়ল না ৷ 2014 সালে ফের এসপির হয়েই সরস্বতী লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হল আতিক ৷ কিন্তু এর মধ্যে অপরাধমূলক কাজকর্মের জন্য বিখ্যাত হতে শুরু করেছে আতিক ও তার দলবল ৷ লোকসভা নির্বাচনে হারল আতিক ৷ এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেন ৷ এসএইচইউএ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের পেটানো হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আতিকের নাম জড়ায় আতিকের ৷ আদালতের নির্দেশে 2017 সালে এলাহাবাদ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ৷ হাজতবাস হয় ৷

এবার 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন ৷ জেল থেকেই প্রার্থী হয় আতিক ৷ এবার তার প্রতিপক্ষ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এবারও হার হয় আতিকের ৷ ফিরে আসে রাজু পাল হত্যা মামলা ৷ 2023 সালের 24 ফেব্রুয়ারি খুন হন রাজু পালের আইনজীবী উমেশ পাল ৷ এই ঘটনায় আতিককে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় ৷ গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে নাকি আইনজীবীকে এই মামলা থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল ৷ কিন্তু উমেশ নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল ৷ তাই ছোট ছেলে আসাদ আহমেদকে দিয়ে উমেশ খুন করায় আতিক ৷ উমেশ পালের হত্যার ভিডিয়ো ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে ৷

রাজু পালের পর উমেশ পাল খুনেও অভিযুক্ত হয় আতিক আহমেদ । ভাই আশরফ ও ছেলে আসাদও উমেশ পাল খুনে জড়ায় ৷ গুজরাতের সবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশের নাইনি সেন্ট্রাল জেলে আনা হয় আতিক এবং আশরফকে ৷ এর মধ্যে ঝাঁসিতে 13 এপ্রিল পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় ছোট ছেলে আসাদের ৷ সেদিনই আতিককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় ৷ ধুমনগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে আতিককে রাতভর জেরা করে পুলিশ ৷

জানা গিয়েছে, আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে 100টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা ছিল ৷ তার সঙ্গে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল ৷ তবে শেষটা যেন সিনেমা ৷ বাস্তবের গ্যাংস্টারের জীবনটা শেয হল 'গ্যাংস্টার' সিনেমার মতো ৷ তবে পুলিশের সামনেই তাকে ও তার ভাইকে খুন করে দুষ্কৃতীরা ৷ শেষ মুহূর্তে আতিক এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ছেলের সমাধিতে যাওয়া নিয়ে বলছিল, "পুলিশ নিয়ে যায়নি, তাই যেতে পারিনি" ৷ ভাবলেশহীন, নির্লিপ্ত গলা ৷ আতিক কি জানত তার পরিণতি ?

আরও পড়ুন: 'পুলিশ নিয়ে যায়নি, তাই যাইনি'! ছেলের সমাধিস্থলে যাওয়া নিয়ে শেষ কথা বলেই লুটিয়ে পড়ল আতিক

প্রয়াগরাজ, 16 এপ্রিল: গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ ৷ তিনি রাজনৈতিক নেতা থেকে গ্যাংস্টার হয়ে উঠেছেন নাকি গ্যাংস্টার-ই তাঁর প্রথম পরিচয় ? শনিবার রাতে নাটকীয় ভাবে পুলিশের সামনে তার ও তার ভাই আশরফের মৃত্যু হয় ৷ কে এই আতিক আহমেদ ? এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে টানা পাঁচবার রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জয়ী হয়েছিল সে ৷ আতিকের জীবনের রাজনৈতিক পর্বের পরতে পরতে আছে থ্রিলার ।

1989 সালে রাজনীতিতে প্রবেশ আতিকের ৷ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া ৷ সেবারই জয়ী হয়ে বিধায়ক হওয়া ৷ 1996 সালে প্রয়াত মুলায়ম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সে ৷ এরপর 2002 সালে আপনা দলের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে ফের প্রার্থী হওয়া এবং ফের জয় ৷ প্রসঙ্গত, 1999 সাল থেকে 2003 সাল পর্যন্ত আপনা দলের সভাপতি পদেও আসীন ছিল আতিক ৷

2004 সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিধানসভা কেন্দ্রটি ছেড়ে দেয় আতিক ৷ সমাজবাদী পার্টি তাকে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়ার টিকিটও দেয় ৷ এবারও জয়ী আতিক ৷ প্রথমবার সংসদে প্রবেশ এসপি লোকসভা সাংসদ আতিক আহমেদের ৷ প্রসঙ্গত, ফুলপুর কেন্দ্রটির সঙ্গে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একটি যোগাযোগ আছে ৷ স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচন হয় 1952 সালে ৷ সেই নির্বাচন থেকে শুরু করে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত এই লোকসভা কেন্দ্রটি নেহরুর দখলেই ছিল ৷

আরও পড়ুন: সাংবাদিক সেজেই খুন আতিক-আশরফদের, বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ যোগীর

ফিরে আসা যাক আতিক আহমেদের রাজনৈতিক জীবনে ৷ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি একের পর এক অপরাধের ঘটনায় নাম জড়ায় আতিকের ৷ পাশাপাশি আতিকের ছেড়ে দেওয়া এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয় তার ভাই খালিদ আজম ওরফে আশরফ ৷ কিন্তু এবার বড় ধাক্কা খেল আতিক ৷ আশরফকে হারিয়ে জয়ী হল বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপি-র রাজু পাল ৷ এই হারটা হয়ত মেনে নিতে পারেনি সাংসদ আতিক ৷ কিছুদিনের মধ্য়ে 2005 সালের 25 জানুয়ারি খুন হয় রাজু পাল ৷ এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী পুলিশের কাছে আতিকের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ফের এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী হয় আতিকের ভাই আশরফ ৷ এবার তার প্রতিপক্ষ প্রয়াত রাজু পালের স্ত্রী পুজা পাল ৷ কিন্তু এবার জয়ী আশরফ ৷

নির্বাচনে জিতলেও রাজু পালের খুনের ঘটনা আতিক-আশরফের পিছু ছাড়ল না ৷ 2014 সালে ফের এসপির হয়েই সরস্বতী লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হল আতিক ৷ কিন্তু এর মধ্যে অপরাধমূলক কাজকর্মের জন্য বিখ্যাত হতে শুরু করেছে আতিক ও তার দলবল ৷ লোকসভা নির্বাচনে হারল আতিক ৷ এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেন ৷ এসএইচইউএ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের পেটানো হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আতিকের নাম জড়ায় আতিকের ৷ আদালতের নির্দেশে 2017 সালে এলাহাবাদ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ৷ হাজতবাস হয় ৷

এবার 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন ৷ জেল থেকেই প্রার্থী হয় আতিক ৷ এবার তার প্রতিপক্ষ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এবারও হার হয় আতিকের ৷ ফিরে আসে রাজু পাল হত্যা মামলা ৷ 2023 সালের 24 ফেব্রুয়ারি খুন হন রাজু পালের আইনজীবী উমেশ পাল ৷ এই ঘটনায় আতিককে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় ৷ গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে নাকি আইনজীবীকে এই মামলা থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল ৷ কিন্তু উমেশ নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল ৷ তাই ছোট ছেলে আসাদ আহমেদকে দিয়ে উমেশ খুন করায় আতিক ৷ উমেশ পালের হত্যার ভিডিয়ো ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে ৷

রাজু পালের পর উমেশ পাল খুনেও অভিযুক্ত হয় আতিক আহমেদ । ভাই আশরফ ও ছেলে আসাদও উমেশ পাল খুনে জড়ায় ৷ গুজরাতের সবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশের নাইনি সেন্ট্রাল জেলে আনা হয় আতিক এবং আশরফকে ৷ এর মধ্যে ঝাঁসিতে 13 এপ্রিল পুলিশি এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় ছোট ছেলে আসাদের ৷ সেদিনই আতিককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় ৷ ধুমনগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে আতিককে রাতভর জেরা করে পুলিশ ৷

জানা গিয়েছে, আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে 100টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা ছিল ৷ তার সঙ্গে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল ৷ তবে শেষটা যেন সিনেমা ৷ বাস্তবের গ্যাংস্টারের জীবনটা শেয হল 'গ্যাংস্টার' সিনেমার মতো ৷ তবে পুলিশের সামনেই তাকে ও তার ভাইকে খুন করে দুষ্কৃতীরা ৷ শেষ মুহূর্তে আতিক এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ছেলের সমাধিতে যাওয়া নিয়ে বলছিল, "পুলিশ নিয়ে যায়নি, তাই যেতে পারিনি" ৷ ভাবলেশহীন, নির্লিপ্ত গলা ৷ আতিক কি জানত তার পরিণতি ?

আরও পড়ুন: 'পুলিশ নিয়ে যায়নি, তাই যাইনি'! ছেলের সমাধিস্থলে যাওয়া নিয়ে শেষ কথা বলেই লুটিয়ে পড়ল আতিক

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.