দক্ষিণেশ্বর, 11 জানুয়ারি: সংবাদমাধ্যমের কথা বলতে চান না সূচনার মামারবাড়ির সদস্যরা ৷ গত 8 জানুয়ারি চার বছরের শিশু সন্তানকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সূচনা শেঠ ৷ বেঙ্গালুরুর এআই স্টার্টআপ মাইন্ডফুল ল্যাবের সিইও সূচনার ছোটবেলা কেটেছে দক্ষিণেশ্বরে মামারবাড়িতে ৷ 2021 সালে মায়ের মৃত্যু হলে তিনি শেষবার এসেছিলেন দক্ষিণেশ্বরে মামার কাছে ৷ তবে সেমবারের ঘটনার খবর পেয়ে দরজা-জানলা বন্ধ করে রেখেছেন সূচনার মামারবাড়ির লোকজন ৷ আর এই নৃশংস ঘটনার বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না মামা আরণ্যক বসু ও তাঁর স্ত্রী রূপা ৷
এদিকে সাংবাদিকরা তাঁদের দক্ষিণেশ্বরের বাড়িতে ভিড় করেছে ৷ সেই খবর পেয়ে সেখানে আসেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "বিগত 2-3 বছর ধরে সূচনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না ৷ এই ঘটনা সম্পর্কে তাঁদের কিছু জানা নেই ৷ তাঁরা আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ তাঁরা এই ঘটনায় কারও সঙ্গে কোনও কথা বলতে চাইছেন না ৷"
সূচনার জন্ম কলকাতায় হলেও বাবার বদলির চাকরির জন্যে প্রথমে জলপাইগুড়ি, পরে চেন্নাইয়ে শৈশব কাটে ৷ এরপরে তাঁরা কলকাতায় চলে আসেন ৷ ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন সূচনা ৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করেন ৷ এর সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশন কালচারাল ইনস্টিটউট থেকে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেন তিনি ৷ এমনকী আমেদাবাদে গিয়ে পিএইচডি করেছেন ৷ শৈশবের পর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে মামি রূপা বসুর কাছে বেড়ে ওঠেন সূচনা ৷ তাই সূচনা শেঠের জীবনের অনেকটা সময়ই কেটেছে আড়িয়াদহে তাঁর মামাবাড়িতে ৷
আড়িয়াদহের রামগড় এলাকার দোতলা বাড়িতেই থাকেন সূচনার মামা আরণ্যক বসু ও তাঁর স্ত্রী রূপা ৷ 2010 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই বাড়ি থেকেই ভাগ্নি সূচনার বিয়ে দিয়েছিলেন মামা ৷ বিয়ের পর স্বামী বেঙ্কট রামের সঙ্গে পাকাপাকি বেঙ্গালুরুতে থাকতে শুরু করেন সূচনা ৷ তারপর থেকে আর তেমন যোগাযোগ ছিল না মামাবাড়ির সঙ্গে ৷
শেষবার 2021 সালে মায়ের মৃত্যুর সময় আড়িয়াদহের এই মামাবাড়িতে এসেছিলেন সূচনা ৷ তখন তাঁর সঙ্গে কলকাতায় আসেন তাঁর স্বামী বেঙ্কট এবং শিশু সন্তানও ৷ মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম সেরে সূচনা ফিরে যান বেঙ্গালুরুতে ৷
তাঁর স্বামী বেঙ্কট রামও বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদে রয়েছেন। কর্মসূত্রে তিনি ইন্দোনেশিয়াতে থাকেন ৷ বিয়ের ন'বছরের মাথায় দম্পতির একটি পুত্র সন্তান হয় ৷ এরপর 2020 সালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে ৷ এরপর তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও চলছিল ৷ তার জেরেই সূচনা আশঙ্কা করছিলেন, ছেলের কাস্টডি হাতছাড়া হতে পারে ৷ আর সেই থেকে এই হাড়হিম করা ঘটনা বলে অনুমান পুলিশের ৷ তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: