পুনে, 23 জুন : করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব শিশুদের উপর বেশি পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ এই পরিস্থিতিতে কিছুটা আশার কথা শোনালেন পুনের একদল গবেষক ৷ তাঁদের দাবি, হামের টিকা (Measles Vaccine) নেওয়া থাকলে শিশুদের করোনাভাইরাসের উপসর্গ খুবই সামান্য দেখা দিতে পারে ৷ তবে হামের টিকা না-নেওয়া শিশুদের উপর কোভিডের প্রভাব বেশি হবে ৷ সার্স-কভ-2 ভাইরাসের বিরুদ্ধে হামের টিকার কার্যকারিতা 87.5 শতাংশ বলেও দাবি করা হয়েছে পুনের বিজে মেডিক্যাল কলেজের গবেষণায় ৷
হিউম্যান ভ্যাকসিন ও ইমিউনোথেরাপিউটিকস নামে পুনের একটি পত্রিকায় এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ৷ এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, সার্স-কভ-2 ভাইরাস (Covid Vaccine) মোকাবিলায় শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষাবলয় হিসেবে কাজ করবে হামের টিকা ৷ তবে এই দাবিকে নিশ্চিতরূপে তুলে ধরার জন্য তাঁদের আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা ৷ তাঁদের নেতৃত্বে থাকা শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নীলেশ গুজার জানিয়েছেন, "এ ধরনের গবেষণা পৃথিবীতে এটাই প্রথম ৷ আমরা এই গবেষণায় এমএমআর টিকার উপর জোর দিয়েছি, কারণ সার্স-কভ-2 ভাইরাসের অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রমের সঙ্গে প্রায় 30 শতাংশ মিল রয়েছে রুবেলা ভাইরাসের ৷ মিসলস ভাইরাসের হেমাগ্লুটিনিন প্রোটিন ও সার্স-কভ-2-র স্পাইক প্রোটিনও অনেকটা একই রকম ৷ এই কারণেই আমরা গবেষণাটা করি এবং এর ফল খুবই আশাব্যাঞ্জক ৷"
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়্যান্টের তিনটি চরিত্রের সন্ধান ভারতে, দুশ্চিন্তা প্রকাশ কেন্দ্রের
গুজার আরও জানিয়েছেন, এমএমআর টিকা শিশুদের সাইটোকাইন স্টর্ম মোকাবিলাতেও বিশেষ কার্যকরী ৷ শরীর যখন ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই না করে নিজের কোষ ও কলাকেই আক্রমণ করা শুরু করে, তাকেই বলে সাইটোকাইন স্টর্ম ৷ তাঁর কথায়, "যতদিন না শিশুদের টিকা আসছে, ততদিন এমএমআর টিকা তাদের ভিন্নধর্মী সুরক্ষা দিতে পারে ৷ কোভিডের টিকা না-পাওয়া পর্যন্ত শিশুদের হামের টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত ৷ যাতে তারা হামের থেকে সুরক্ষা পায় এবং কোভিড 19-এর থেকেও কিছুটা সুরক্ষা পায় ৷"
আরও পডু়ন : বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ, 82 দিনে সর্বনিম্ন সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা
এই গবেষণা দেশের জন্য যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক ৷ কারণ গত 35 বছর ধরে শিশুদের টিকাকরণ প্রকল্পে এই টিকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৷ ভারতে মিসলসের টিকার প্রথম ডোজ শিশুদের দেওয়া হয় 9-12 মাস বয়সে, আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয় 16-24 মাস বয়সে ৷ এই গবেষণায় 1 থেকে 17 বছরের 548 জন শিশুর উপর পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালানো হয়েছে ৷ তাদের দুটি ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল ৷ একটি দলে রাখা হয় যারা আরটি-পিসিআর-এ কোভিড পজিটিভ হয়েছিল তাদের, আর অপরটিতে ছিল বাকিরা ৷ এই গবেষণায় সব অংশগ্রহণকারীকে ওরাল পোলিয়ো ভাইরাস দেওয়া হয়েছিল এবং একজন ছাড়া সবাই বেসিলাস ক্যালমেটিগুয়েরিন টিকা নিয়েছিল ৷