মাঙ্গালুরু, 2 ডিসেম্বর: পুলিশের 'ভুলে' পাক্কা একবছর হাজতবাস করতে হল এক ব্যক্তিকে ! আদালতে শুনানি চলাকালীন জানা গেল, নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার একটি মামলায় পকসো (POCSO)-এর আওতায় যে ব্যক্তিকে পুলিশকর্মীরা গ্রেফতার করেছিলেন, তিনি আদতে ঘটনায় অভিযুক্তও ছিলেন না ! কেবলমাত্র পুলিশের 'ভুলে' গত একবছর ধরে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (Judicial Custody) থাকতে হয়েছে সেই ব্যক্তিকে ! অবশেষে আদালতে সেই ব্যক্তি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হন ৷ ঘটনায় আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীদের ৷ একইসঙ্গে, মাঙ্গালুরুর (Mangaluru) ওই আদালতের বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, ঘটনায় দায়ী পুলিশকর্মীরাই নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে ভুক্তভোগীকে 5 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ (5 Lakh Rupees Compensation) দেবেন ৷
ঘটনার সূত্রপাত বছর খানেক আগে ৷ মাঙ্গালুরু গ্রামীণ থানায় (Mangaluru Rural Police Station) একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় নবীন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৷ তাতে দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি এক নাবালিকার উপর যৌন অত্যাচার চালিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় পকসো আইনে মামলা রুজু হয় ৷ আদালতের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেন ইন্সপেক্টর রেবতী ৷ পরবর্তীতে মাঙ্গালুরু গ্রামীণ থানার এএসআই কুমার এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন ৷ ঘটনাচক্রে সেই ব্যক্তিরও নাম নবীন ৷ কিন্তু, তিনি আর সংশ্লিষ্ট মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ দু'জন আলাদা মানুষ !
আরও পড়ুন: পেটিএমের কোড স্ক্যান করিয়ে নিতেন বকশিস, চাকরি গেল হাইকোর্টের কর্মীর
মামলার শুনানি চলাকালীন ধৃত ব্যক্তির আইনজীবীরা আদালতকে জানান, পুলিশ যে চার্জশিট জমা করেছে, সেখানে অভিযুক্ত হিসাবে নবীন নামে এক যুবকের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে ৷ কিন্তু, তাঁর পদবী লেখা হয়নি ৷ পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত নবীনের বয়স 25 থেকে 26 বছর ৷ অন্যদিকে, যে নবীনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তিনি 47 বছর বয়সি ৷ অথচ, পুলিশ সেই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার কোনও চেষ্টাই করেনি ! এই অবস্থায় ধৃত ব্যক্তিকে বিনা দোষে টানা একবছর জেল হেফাজতে থাকতে হয়েছে !
এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান বিচারক কে ইউ রাধাকৃষ্ণ ৷ তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক এবং তাঁর সহকারীদের তুমুল ভর্ৎসনা করেন তিনি ৷ একইসঙ্গে রায় দেন, ধৃত নবীন সম্পূর্ণ নির্দোষ ৷ তাই তাঁকে অবিলম্বে সংশোধনাগার থেকে সসম্মানে মুক্তি দিতে হবে ৷ একইসঙ্গে, ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে 5 লক্ষ টাকা ৷ আর সেই টাকা দেবেন ইন্সপেক্টর রেবতী, ডেপুটি ইন্সপেক্টর রোসাম্মা পিপি-সহ সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীরা ৷ সেইসঙ্গে, তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য়ের স্বরাষ্ট্র দফতরকেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷