হায়দরাবাদ, 20 অগস্ট: তিনি আট মাস ধরে বেকার ৷ অথচ স্ত্রী ভালো আইটি কোম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন ৷ এই নিয়ে বচসা ৷ যার রোষ গিয়ে পড়ল 8 বছরের নাবালিকা মেয়ের উপর ৷ গলা কেটে তাকে হত্যা করল বাবা ! মেয়ের দেহ লোপাট করার সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত ৷ শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদের আব্দুল্লাহপুর মেট থানা এলাকায় ৷ অভিযুক্তের নাম কুন্দেতি চন্দ্রশেখর (40) ৷
জানা গিয়েছে, 2011 সালে চন্দ্রশেখরের সঙ্গে সাঙ্গারেড্ডি জেলার ভেল এলাকার হিমাবিন্দুর বিয়ে হয় । এরপর তাঁরা কিছুদিন আমেরিকায় আইটি সংস্থায় কাজ করেন ৷ তারপর হায়দরাবাদে ফিরে আসেন ৷ সেখানে এসে চন্দননগরে থাকতে শুরু করেন এই যুগল । তারপর হিমাবিন্দু একটি শীর্ষস্থানীয় আইটি কোম্পানির ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে থাকেন ৷ সেসময় চন্দ্রশেখর একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করছিলেন ।
তবে আটমাস আগে চাকরি হারান চন্দ্রশেখর ৷ এরপর থেকেই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় । এর জেরে চার মাস আগে হিমাবিন্দু তাঁর মেয়েকে নিয়ে ভেলে চলে আসেন ৷ তখন চন্দননগরেই থাকতেন তাঁর স্বামী । পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মনে করেন স্ত্রী তাঁর চেয়ে বেশি উপার্জন করে এবং উচ্চ পদে চাকরি করেন বলে তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে । চন্দ্রশেখর এও মনে করেন যে স্ত্রীই তাঁর চাকরি হারানোর কারণ এবং তিনি মেয়েকে তাঁর থেকে দূরে রেখেছেন । এরপরেই স্ত্রীকে শাস্তি দিতে নিজের মেয়েকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন চন্দ্রশেখর ৷ সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাঁদের মেয়ে মোক্ষজাকে খুন করলেন তিনি ৷ সে ভেলের জ্যোতি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত ।
সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ আগে তিনি দোকানে গিয়ে একটি পেন্সিল কাটার ব্লেড কিনেছিলেন । শুক্রবার বিকেল 3.15 মিনিটে মোক্ষজা স্কুল ছুটি হয় । সেসময় সেখানে গিয়ে তাকে ঢাকে বাবা ৷ তবে মেয়েটি প্রথমে যেতে রাজি হয় না ৷ পরে চন্দ্রশেখরের গাড়ির পেছনের সিটে গিয়ে বসে । এরপর ভেলব টাউনশিপ পেরিয়ে কিছুদূর গিয়ে গাড়ি থামায় অভিযুক্ত । মোক্ষজার পাশে বসে জিজ্ঞেস করেন, তোমার মা আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলেন না কেন? তাঁর মেয়ে এ কথা শুনে রেগে যায় । এরপরেই তিনি বাম হাতে শিশুটির মাথা চেপে ধরে ব্লেড দিয়ে তার গলা কেটে দেন । রক্তে ভেসে যায় গাড়ি ৷ মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর নির্জন এলাকায় দেহ ফেলে আত্মহত্যা করতে চান চন্দ্রশেখর ।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের জেরে ইন্দোরে মেয়েকে 'খুন' বাবার
সেই উদ্দেশে মেয়ের দেহ গাড়ির পেছনের সিটে রেখে আউটার রিং রোডে নিয়ে যান তিনি । সেখান থেকে তিনি তারামাটিপেট এবং কোহেডালার মধ্যে বেশ কয়েকবার ঘোরাফেরা করেন । এরপর অন্ধকার হয়ে গেলে তিনি দেহটি লোপাট করতে যান । কিন্তু সেসময়ই ঘটে বিপত্তি ৷ তাঁর গাড়ি টায়ার ফেটে সেটি ডিভাইডারে ধাক্কা মারে । স্থানীয়দের দেওয়া খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ৷ আধিকারিকরা গাড়িটির ভেতরে শিশুটির দেহ দেখতে পান । এরপরেই চন্দ্রশেখরকে গ্রেফতার করা হয় ৷ স্ত্রীর প্রতি রাগ থেকে তিনি মেয়েকে খুন করেছে বলে স্বীকার করেন । এমনটাই পুলিশ দাবি করেছে ৷