নয়াদিল্লি, 14 নভেম্বর: ফের পৈশাচিক ঘটনার সাক্ষী রাজধানী নয়াদিল্লি (Delhi) ৷ এক তরুণীকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে শহরের নানা প্রান্তে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তাঁরই প্রেমিককে (Man Arrested by Delhi Police) ! দিল্লি পুলিশ (Delhi Police) সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি তাঁর প্রেমিকার শরীর কেটে 35 টুকরো করেছিলেন ! পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যেই তাদের জেরার মুখে অপরাধ (Crime Against Women) কবুল করেছেন ওই ব্যক্তি ৷ তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে নিহত তরুণীর দেহের কিছু খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ দিল্লির নানা প্রান্ত থেকে এই দেহাংশগুলি উদ্ধার করা হয়েছে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটেছে প্রায় 6 মাস আগে ৷ নিহত তরুণীর নাম শ্রদ্ধা ৷ বয়স 28 বছর ৷ তাঁর সঙ্গে আফতাব নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, চলতি বছরের মে মাসে শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা ৷ সাধারণ ঝগড়া থেকেই ঘটে যায় এমন ভয়াবহ ঘটনা ৷ কিন্তু, তারপরও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি ৷ কারণ, এ নিয়ে পুলিশের কাছে এত দিন কোনও অভিযোগই দায়ের করা হয়নি ৷
আরও পড়ুন: দোকানদারের রহস্যমৃত্যু, দেহ মিলল ফ্রিজারে
শেষমেশ অভিযোগ দায়ের করা হয় গত 8 (আট) নভেম্বর ৷ দক্ষিণ দিল্লির মেহরাউলি (Mehrauli) থানায় শ্রদ্ধার নামে নিখোঁজ ডায়ারি করেন তাঁর বাবা-মা ৷ তারই ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ শ্রদ্ধার প্রেমিকের আচরণে সন্দেহ হয় তাঁদের ৷ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়েন ওই যুবক ৷ স্বীকার করেন, তিনিই শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন এবং দেহ লোপাটের জন্য তা 35 টুকরো করে শহরের নানা প্রান্তে ফেলে দিয়েছেন ! রবিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
জেরায় আফতাব জানিয়েছেন, গত 18 মে তাঁর সঙ্গে শ্রদ্ধার তুমুল ঝগড়া হয় ৷ শ্রদ্ধা বিয়ের জন্য তাঁর উপর চাপ দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন আফতাব ৷ তাতেই রেগে শ্রদ্ধার গলা টিপে ধরেন তিনি ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তরুণীর ৷ ভয়ে তাঁর দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করেন আফতাব ৷ যদিও তাঁর দাবি, শ্রদ্ধাকে খুনের কথা কোনওদিনই ভাবেননি তিনি ৷ যা হয়েছে, তা একেবারেই তাৎক্ষণিক রাগের বশে হয়েছে !
পুলিশি জেরায় আফতাব আরও জানায়, খুনটা সে করেছে তাৎক্ষণিক রাগের বশে করলেও দেহ লোপাট করেছে ফিল্মি কায়দায় ৷ এরমধ্যে আমেরিকান ড্রামা সিরিজ 'ডেক্সটার' অন্যতম ৷ তাছাড়া শ্রদ্ধার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে পুলিশ জেনেছে, খুনের কিছুদিন আগে দু'জনে ঋষিকেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন ৷
প্রসঙ্গত, শ্রদ্ধা আগে মুম্বইয়ের একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন ৷ সেই সময়েই আফতাবের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয় ৷ পরে তা থেকেই বন্ধুত্ব এবং প্রেম ৷ কিন্তু, শ্রদ্ধার বাবা-মায়ের এই সম্পর্কে আপত্তি ছিল ৷ এ নিয়ে মেয়ের সঙ্গে বিবাদও ছিল তাঁদের ৷ তারই জেরে পরবর্তীতে মুম্বই থেকে দিল্লি চলে আসে এই যুগল এবং এখানেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করে ৷