মুম্বই, 2 জুলাই: ভাইপোর 'গদ্দারি'তে ব্যথিত কাকা শরদ পাওয়ারকে ফোন করে সমবেদনা জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ একইসঙ্গে, এই পরিস্থিতিতে এনসিপি প্রধানের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন মমতা ৷ রবিবার শরদ নিজেই জানিয়েছেন তাঁকে ফোন করেছিলেন মমতা-সহ অন্য়ান্য বিরোধী দলের নেতারা ৷
এদিন আচমকাই প্রফুল্ল প্য়াটেল-সহ একাধিক এনসিপি বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে একনাথ শিন্ডে নেতৃত্বাধীন রাজ্যের এনডিএ সরকারে যোগ দেন শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার ৷ একইদিনে রাজ্য়ের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথও নেন অজিত পাওয়ার ৷ তাঁর সঙ্গেই মন্ত্রী পদে শপথ নেন এনসিপি থেকে সদ্য এনডিএ-তে যোগ দেওয়া 9 জন বিধায়ক ৷ এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক বিষোদগার করেন শরদ ৷ এদিন তাঁর নিশানায় ছিলেন মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ শরদের স্পষ্ট অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী ভয় দেখিয়েছিলেন ৷ আর তারপরই তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন এজেন্সি ৷ সেই ভয়েই দল ছেড়েছেন অজিত পাওয়াররা ৷ এর সঙ্গেই তাৎপর্যপূর্ণবাবে শরদ পাওয়ার জানান, বিরোধী দলের বেশ কয়েক জনের থেকে তাঁর কাছে ফোন এসেছে ৷ এদিন শরদ পাওয়ার বলেন, "আমি অনেক লোকের কাছ থেকে বেশ কিছু ফোন কল পেয়েছি ৷ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধি এবং অন্যরাও আমাকে ফোন করেছেন। তাঁরা সকলেই আমার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন ৷ আজ যা হয়েছে তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমি ওয়াই বি চাভনের (মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) আশীর্বাদ নিয়ে একটি জনসভা করব শনিবার ৷"
অবিজেপি বিরোধী জোটের অন্যতম দুই শরিক এনসিপি এবং তৃণমূল ৷ অজিত পাওয়ারের কীর্তিতে বিরোধী জোটের উপর যে মৃদু একটা প্রভাব পড়েছে, তা শরদ পাওয়ারকে মমতার ফোন করা থেকেই স্পষ্ট ৷ একই সঙ্গে, রাজনৈতিক মহলের দাবি, লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তে একে অপরের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বিরোধী জোটের ঐক্যবদ্ধ চিত্রের একটা নমুনা দেখানোর চেষ্টা হয়েছে ৷ কারণ হিসাবে অনেকেই বলছেন, এর আগে পটনায় বিরোধী জোটের বৈঠকে স্থির হয়েছিল কোনও দলের উপর আগাত এলে একে অপরের পাশে দাঁড়াবে ৷ সেই চুক্তি মতোই এদিন শরদকে মমতার ফোন ! অন্তত এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল ৷
আরও পড়ুন: অজিতের 'পাওয়ার' বদলে ধাক্কা বিরোধী জোটে ! উচ্ছ্বসিত বিজেপি
অন্যদিকে, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন, দলকে ফের শক্তিশালী করতে কাজ করবেন তিনি। শরদ বলেন, "বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বিধায়ক এবং সমস্ত নেতারা একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। সভাপতি হওয়ায় আমি প্রফুল্ল প্যাটেল এবং সুনীল তাতকরেকে নিয়োগ দিয়েছিলাম কিন্তু তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেননি। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমাকে কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে ৷" একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রের এনডিএ সরকারে অজিত পাওয়ারের যোগদানের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে পাওয়ার বলেন, "এটা কোনও 'গুগলি' নয়, রীতিমতো ডাকাতি। এটি কোনও ছোট বিষয় নয়।"