মাদুরাই, 26 অগস্ট: মাদুরাইয়ের বডিলাইন রেলওয়ে ইয়ার্ড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা শনিবারের শুরুটা হয়েছিল ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধদের আর্তনাদে ৷ তাঁদের চিৎকারেই বিছানা ছেড়েছিলেন স্থানীয়রা ৷ মাদুরাইয়ের ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার সকালে তাঁরাই প্রথম স্টেশন মাস্টারের কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছিলেন ৷ তাঁদের মধ্যে কেউ স্টেশন মাস্টারের অফিসে দৌড়েছিলেন ৷ তো কেউ দমকলে ফোন করেছিলেন ৷ স্থানীয়রাই প্রথমে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা ট্রেনের আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন ৷
পরে দমকল ও উদ্ধারকারী দল আসলে তাদের সঙ্গেও হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও সরকারি হিসেবে 9 জনের প্রাণ গিয়েছে ৷ শনিবারের সকালে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন তেমনই কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ৷ মাদুরাইয়ের বাসিন্দা মান্নান জানান, তাঁরা জ্বলন্ত ট্রেনের ভিতর থেকে লোকজনের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছিলেন ৷ কিন্তু, উদ্ধারের জন্য ট্রেনের কাছে যেতে পারছিলেন না ৷ ট্রেনের ভিতর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা ঠিকরে বেরোচ্ছিল বাইরে ৷ আর সেই সঙ্গে প্রচণ্ড তাপ ৷
মান্নান বলেন, "যেখানে ট্রেনে আগুন লেগেছিল, আমি সেখান থেকে খুব কাছেই থাকি ৷ ভোরবেলা আমি আচমকাই চিৎকার আর আর্তনাদের শব্দে লাফিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়ি ৷ বাইরে বেরিয়ে সেই বীভৎস দৃশ্য দেখে আমি ছুটে যাই ৷ কাছে গিয়ে দেখি অনেকে জ্বলন্ত ট্রেন থেকে প্রাণে বাঁচার জন্য বাইরে ঝাঁপ দিচ্ছেন ৷" তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে মিলে লোকজনকে উদ্ধার করতে হাত লাগান ৷ তাঁরা একে একে লোকজনকে ভিতর থেকে বের করতে থাকেন ৷ কয়েকজন নিকটবর্তী এসএস কলোনি থেকে দ্রুত দমকলে খবর দিতে ছোটে ৷
আরও পড়ুন: প্রাইভেট বগিতে কীভাবে গ্যাস সিলিন্ডার ? প্রশ্নের মুখে দক্ষিণ রেলের নিরাপত্তা
মান্নানের কথায়, দমকল এবং স্থানীয়রা মিলে চেষ্টা করেও ট্রেনের ভিতর থেকে মানুষজনকে বের করতে পারছিলেন না ৷ পুরো ট্রেনের বগি আগুনের গ্রাসে ছিল ৷ দাউদাউ করে আগুনের শিখা বাইরে আসছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কেউ ট্রেনের কাছে যেতে পারছিলেন না ৷ জল ঢেলেও কোনও কাজ হচ্ছিল না ৷ তিনি জানান, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশ ট্রেনের উপরের টিয়ারে ছিলেন ৷ ফলে তারা নেমে আসতে পারেননি ৷ রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের লখিপুর থেকে আসা এই পর্যটক ট্রেনটি রামেশ্বরম যাচ্ছিল ৷ ট্রেনের ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার কীভাবে ওঠানো হল ? তা নিয়েও প্রশ্নও উঠছে ৷ ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা ও নজরদারি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গেল ৷