নয়াদিল্লি, 14 জুন : লোকসভায় বড় ধাক্কা লোক জনশক্তি পার্টির (LJP) নেতা চিরাগ পাসওয়ানের (Chirag Paswan) ৷ তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করতে চেয়ে অধ্যক্ষকে চিঠি দিলেন দলেরই বাকি পাঁচ সাংসদ (চিরাগের কাকা পশুপতিকুমার পারস-সহ) ৷ তাঁদের আবেদন, এলজেপি-র প্রতিনিধি হিসাবে নয়, তাঁদের আলাদা গোষ্ঠীর সাংসদ হিসাবে বিবেচিত করা হোক ! গোটা ঘটনার পিছনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের হাত দেখছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
প্রসঙ্গত, চিরাগ পাসওয়ান-সহ লোকসভায় এলজেপি-র সাংসদ রয়েছেন মোট ছ’জন ৷ সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই দলীয় নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ ৷ বস্তুত, তাঁদের ক্ষোভের কারণ চিরাগ স্বয়ং ৷ তাঁর বদলে অন্য কাউকে নেতা হিসাবে চান বিক্ষুব্ধরা ৷ উল্লেখ্য, লোক জনশক্তি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চিরাগের বাবা রামবিলাস পাসওয়ান ৷ গতবছরই মৃত্য়ু হয় তাঁর ৷ তার আগেই অবশ্য দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন চিরাগ ৷ তাঁকে এলজেপি-র সভাপতি পদে বসান রামবিলাস ৷
আরও পড়ুন : বিহারে NDA-র জয়ের কৃতিত্ব মোদিকে দিলেন চিরাগ
তবে রামবিলাসের মৃত্য়ুর পর থেকেই দলের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন ৷ চিরাগ দলের সভাপতি হলেও নেতা-কর্মীদের একটা অংশ তাঁর সভাপতিত্ব মানতে নারাজ ৷ এই বিদ্রোহে ইন্ধন জোগাচ্ছেন স্বয়ং চিরাগেরই কাকা ! পশুপতিকুমার পারস (Pasupati Kumar Paras) রামবিলাসের ছোট ভাই ৷ সূত্রের খবর, তাঁর নেতৃত্ব এবং নির্দেশেই লোকসভায় চিরাগের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার আর্জি জানিয়ে অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন দলীয় সাংসদরা ৷ যাঁদের মধ্যে চিরাগের তুতো ভাই প্রিন্স রাজ ছাড়াও রয়েছেন চন্দন সিং, বীণা দেবী এবং মেহবুব আলি কাইসের ৷
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, এই জটিলতা কাটার সম্ভাবনা ক্ষীণ ৷ কারণ, সম্পর্কে কাকা-ভাইপো হলেও পশুপতির সঙ্গে চিরাগের সম্পর্কে অত্যন্ত খারাপ ৷ তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না ৷ যোগাযোগ হয় শুধুমাত্র চিঠিতে !
তবে রাজনীতির কারবারীদের দাবি, চিরাগকে বেকায়দায় ফেলার পিছনে পশুপতি নিমিত্ত মাত্র ৷ আসল খেলোয়াড় অন্য কেউ ৷ তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) ৷ সূত্রের খবর, বিহারের মন্ত্রিসভায় পশুপতিকে একটি পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নীতীশ ৷ আর তাতেই নাকি গলে গিয়েছেন প্রথমবারের এলজেপি সাংসদ (হাজিপুর কেন্দ্র) পশুপতিকুমার পারস ৷ আর সেই কারণেই ভাইপোকে বেকায়দায় ফেলতে দলীয় সতীর্থদের কাজে লাগিয়েছেন কাকা ৷
আরও পড়ুন : কৃষি আইন ইশুতে মোদির পাশে দাঁড়ালেন ‘বন্ধু’ নীতীশ কুমার
পশুপতি নিজে অবশ্য জানিয়েছেন, ভাইপো চিরাগকে নিয়ে তাঁর মনে কোনও বৈরিতা নেই ৷ তবে তিনি এনডিএ-র সঙ্গে থাকতে চান ৷ আর বিহারের উন্নয়নের জন্য ‘বিকাশ পুরুষ’ নীতীশ কুমারকে সহযোগিতা করতে চান ৷ যদিও তাঁর এই পদক্ষেপে লোক জনশক্তি পার্টির অন্দরে ভাঙন ধরবে, এমনটা মানতে নারাজ পশুপতি ৷
