নয়াদিল্লি, 18 মে: নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদল ৷ আইনমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কিরণ রিজিজুকে সরিয়ে সেই পদে বসানো হল প্রাক্তন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালকে ৷ স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করছেন তিনি ৷ একইসঙ্গে পূর্বে তাঁর হেফাজতে থাকা মন্ত্রক দু'টিতেও বহাল থাকবেন রাজস্থানের এই বিজেপি সাংসদ ৷
বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়টি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সচিবালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, "প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মতোই দেশের রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভায় এই রদবদল এনেছেন ৷" আইনমন্ত্রকের পরিবর্তে কিরণ রিজিজুকে ভূতত্ত্ব বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রী করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় সেখানে ৷
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদির মন্ত্রিসভার এই রদবদলকে অত্যন্ত তাৎপর্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল ৷ তবে কী কারণে 'এক্সিট ডোর' দেখানো হল পশ্চিম অরুণাচলের বিধায়ক রিজিজুকে ৷ মনে করা হচ্ছে সাম্প্রতিক অতীতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই আইনমন্ত্রক থেকে অপসারিত করা হল ৷ পাবলিক ডোমেনে বিতর্কিত সেই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করার দাবিও জানানো হয় ৷
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে রিজিজু বলেন, "কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভারতবিরোধী গ্যাংয়ের শরিক হয়েছে ৷ যাঁরা বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে ৷" ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গর্জে ওঠেন আইনজীবীরা ৷ খোলা চিঠি লিখে প্রতিবাদ করে 300জন আইনজীবী রিজিজুর মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করার দাবি জানান ৷ যে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন অভিষেক মনু সিংভি, কপিল সিব্বল, অরবিন্দ দাতার, রাজু রামচন্দ্রন, ইন্দিরা জয়সিং'য়ের মতো স্বনামধন্য আইনজীবীরা ৷ বিষয়টি নিয়ে সরব হয় বিরোধী দলগুলিও ৷ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর এমন মন্তব্য 'গণতন্ত্র কুঠারাঘাত' বলে দাবি করে তারা ৷ তৃণমূলের তরফে জহর সরকার রিজিজুর সমালোচনা করে বলেন, "একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এমন মন্তব্য কখনোই করতে পারেন না ৷ প্রমাণ দিন নয়তো আপনাকে মূল্য চোকাতে হবে ৷"
আরও পড়ুন: দুয়ারে রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন! রিজিজুর জায়গায় আইনমন্ত্রকের দায়িত্বে মেঘওয়াল
কর্ণাটক বিধানসভায় ধরাশায়ী হয়ে দক্ষিণ ভারত থেকে নিশ্চিহ্ন হতে হয়েছে দিনকয়েক আগে ৷ চব্বিশের আগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে যা 'বড়সড় হুমকি' ৷ এমতাবস্থায় বিতর্কিত মন্তব্য় করে দেশের বিরাগভাজন হওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পদে বহাল রেখে ঝুঁকি নিতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী ৷ তাই শেষমেশ বিতর্কিত মন্তব্যের মূল্য চোকাতেই হল রিজিজুকে ৷ যদিও বিদায়বেলায় আবেগঘন রিজিজু জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলানো আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের ৷