শিবমোগা (কর্ণাটক), 10 ডিসেম্বর: অবশেষে কর্ণাটকের শেট্টিহাল্লি এবং চিত্রশেট্টিহাল্লি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিল সরকার ৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার এলাকা শিবমোগা শহর থেকে মাত্র 20 কিমি দূরে এই দুই গ্রাম । প্রায় ছয় দশকের সংগ্রামের পর অবশেষে বিদ্যুতের আলো দেখলেন গ্রামবাসীরা ৷
এই গ্রামদুটি শেট্টিহাল্লি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে অবস্থিত । গত বছর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হয় । পুরাডালু গ্রাম থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে । এখানকার গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে আলাদা বিদ্যুতের সুবিধা ।
শেট্টিহাল্লি এবং চিত্রশেট্টিহাল্লি গ্রাম দুটি 1962 সালে শরবতী নদীর জন্য জলাধার নির্মাণের কারণে গঠিত হয়েছিল । এর আগে এটি ছিল ঘন বনাঞ্চল । হিরে ভাস্কর বাঁধ সর্বপ্রথম শরাবতী নদীর উপর নির্মিত হয়েছিল । পরবর্তীতে লিঙ্গানামাক্কি জলাধার নির্মাণের ফলে এই গ্রামগুলি গড়ে ওঠে ।
লিঙ্গানামাক্কি জলাধারের ব্যাক ওয়াটারে শত শত গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় । তখন কারও বাড়িও ছিল না । চাষের জমি ছিল না । পরে গ্রামবাসীরা আশপাশের এলাকায় চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন । শিবমোগা শহরের বিভিন্ন হস্টেলে শিশুরা পড়াশোনা করে ।
এ সব গ্রামের মানুষ ন্যূনতম মৌলিক সুযোগ-সুবিধাটুকুও এতদিন পাননি । গ্রামবাসীরা সরকারের কাছে প্রাথমিক সুবিধার দাবি জানিয়েছিলেন । এ বিষয়ে 2014 সালে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হলে তাঁদের রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ-সহ মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় । দীর্ঘ সংগ্রামের পর অবশেষে প্রতিটি বাড়িতে মেসকমের বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রামবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়েছে ।
শেট্টিহাল্লি গ্রামের বাসিন্দা উমাপতি বলেন, "আমাদের এখানে 1962 সালে আনা হয়েছিল । আমাদের পরিকাঠামো দেওয়ার জন্য অনেক সংগ্রাম ও অনুনয়-বিনয় করেও কোন লাভ হয়নি । শিশুদের অল্প বয়সেই পড়াসোনার জন্য শিবমোগা শহরে রেখে আসা হত। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ আসায় আমি খুশি ।"
চিত্রশেট্টিহাল্লির কৃষ্ণাপ্পা বলেন, "আমাদের সংগ্রাম এখন প্রথম পর্যায়ে জিতেছে । আমরা সবাই বিদ্যুৎ পেয়ে খুশি । গত 15 বছর ধরে আমরা সোলার লাইট ব্যবহার করে আসছি । তবে বর্ষাকালে এটি একটি সমস্যা ছিল । এখন আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে ।" একইভাবে তাঁদের দাবি ছিল রাস্তা নির্মাণ করতে হবে এবং হাসপাতাল, মোবাইল টাওয়ার দিতে হবে ও স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক দিতে হবে । সেগুলি এখনও পাওয়া বাকি গ্রামবাসীদের ৷
আরও পড়ুন: