হাভেরি (কর্ণাটক), 13 জানুয়ারি: কর্ণাটকের হাভেরির এক হোটেলে এক ভিন্নধর্মী যুগলকে হেনস্তা একদল দুষ্কৃতীর। গত 8 জানুয়ারি হাভেরির ওই হোটেলে বছর চল্লিশের এক যুবককে মারধর করা হয় এবং তাঁর 26 বছরের সঙ্গিনীকে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীদলের 7 জন ৷ পুলিশে অভিযোগের পর ওই 7 জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিগৃহীত ব্যক্তি কর্ণাটকের সরকারি বাসের চালক। ভিন্নধর্মের বিবাহিতা মহিলাটির সঙ্গে বছর তিনেক ধরে সম্পর্কে রয়েছেন তিনি ৷
গণধর্ষণের অভিযোগ: ঘটনার তিনদিন পর অর্থাৎ 11 তারিখ বিকেলে, পুলিশের সামনে নির্যাতিতা মহিলা তাঁর বয়ান রেকর্ড করেন ৷ সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে সাতজন গণধর্ষণ করেছে ৷ একইসঙ্গে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধরের অভিযোগও জানান নির্যাতিতা ৷ ওই মহিলার দাবির ভিত্তিতে পুলিশ 376-ডি ধারায় গণধর্ষণের মামলা রুজু করেছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ বাকিদের তল্লাশি চলছে ৷
সন্দেহভাজন সকলকে চিহ্নিত করা হয়েছে: ওই তিনজনের মধ্যে একজন দুর্ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ 8 জানুয়ারির পরদিনই ওই অভিযুক্ত এক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৷ তাই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বাকি সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
কী ঘটেছিল? পুলিশ জানিয়েছে, 8 জানুয়ারি, দুপুর 1টা নাগাদ বছর চল্লিশের যুবকের সঙ্গে বোরখা পরে এক তরুণীকে হোটেলে ঢুকতে দেখেছিলেন জনৈক অটোচালক। মহিলার পোশাক দেখেই বুঝেছিলেন, তরুণী এবং তাঁর সঙ্গী পুরুষটির ধর্ম আলাদা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওই তরুণী বিবাহিত তবে বছর চল্লিশের ওই বাস ড্রাইভারের সঙ্গে তিন বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন। জনৈক অটোচালক তাদের দেখে ওই অভিযুক্তদের ঘটনাটি জানায় ৷
এরপর তিনটি মোটরবাইকে 7জন যুবক এসে চড়াও হয় হোটেলের সেই ঘরে। ঘরের দরজা খোলা মাত্রই শুরু হয় মার। বছর ছাব্বিশের তরুণীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। গোটা পর্বের ভিডিয়ো করে তা সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, দরজায় ধাক্কা দিয়ে ওই অভিযুক্তরা হোটেলের ঘরে ঢুকে বাসচালক ও তাঁর সঙ্গিনীকে মারধর শুরু করে। মুখ আড়াল করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তরুণী। তাঁদের কটূক্তি করতে করতে নিগ্রহকারীরা এই সময়ে জানতে চাইছিল, কেন তাঁরা এক ঘরে এসে উঠেছেন?
পুলিশ জানিয়েছে, এরপরে ওই যুগলকে হোটেল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে টেনে নিয়ে যায় তারা। সেখানে ফের মারধর চলে। তরুণীকে লাঠিপেটাও করা হয়। তারপরে তাঁর হাতে 500 টাকা দিয়ে বলা হয় নিজের বাড়ি ফিরে যেতে। তরুণীর একটি সাত বছরের মেয়ে আছে। এরপরই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে ৷ তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ কিংবা অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই ৷
আরও পড়ুন: