হায়দরাবাদ, 12 মে: রাত পোহালেই কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ ৷ রাজ্যের মোট 2 হাজার 615 জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে শনিবার ৷ তার আগে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকেশেই ব্যস্ত দেশের মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি ৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেভাবে কোনও বুথ ফেরৎ সমীক্ষাতেই বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়া হয়নি ৷ এমনকি 'ম্যাজিক ফিগার'-এর ধারে কাছেও রাখা হয়নি বিজেপিকে ৷ অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষাতেই ইঙ্গিত স্পষ্ট, এ বার রাজ্যে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা গঠিত হতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে নির্ণায়ক হয়ে উঠতে পারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়ার দল জেডিএস। আবার বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে, 224 আসনের কর্ণাটক বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে হাত শিবির ৷ উল্লেখ্য, কর্ণাটক বিধানসভায় অধ্যক্ষের ডান দিকের বেঞ্চে বসতে 113টি আসন পেতেই হবে ৷ আর সেই ট্রেজারি বেঞ্চে বসার জন্য শাম-দাম-দণ্ড-ভেদ প্রায় সব কিছুরই প্রয়োগ করে নিয়েছে বিজেপি-কংগ্রেস-সহ রেজ্যের অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলিও।
সে রাজ্যের মোট 34টি গণনা কেন্দ্রে হবে ভোট গণনা। এর মধ্যে পাঁচটি ভোট গণনা কেন্দ্র রয়েছে বেঙ্গালুরুতে ৷ নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ওইদিন সকাল আটটা থেকে ভোট গণনা শুরু রাজ্যের বিধানসভা ভোটের গণনা ৷ তার আগে এই মুহূর্তে অবশ্য রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বুথ ফেরৎ সমীক্ষার তুল্য-মূল্য বিচারে সে রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলেও, একক সংখ্যা গড়িষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পেরছে না কংগ্রেসও ৷ আর এখানেই আসল তীর মারতে চলেছে কুমারস্বামীর দল জেডিএস ৷ সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের হাত ধরতে তাদের আপত্তি থাকার কথা নয় ৷ কারণ এর আগেও তৃতীয় ফ্রন্টে থেকেছে জেডিএস ৷ সুতরাং যদি ম্যাজিক ফিগার থেকে খুব বেশি দূরে না থাকে কংগ্রেস তবে জেচিএসের সমর্থনে তারা ফের রাজ্যে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে ৷
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যের সবকটি গণনা কেন্দ্রেই বিশেষ গণনা পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে, সিসিটিভি নজরদারির অধীনে চলবে ভোট গণনা ৷ থাকছে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থাও। এই 34টি গণনা কেন্দ্রে 306টি হলে চার হাজার 256টি টেবিলে গণনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি গণনার জন্য, 224 জন রিটার্নিং অফিসার এবং 317 জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার থাকবেন ৷ যারা গণনা প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ বিষয়টি দেখভাল করবে বলে জানা গিয়েছে ৷
অন্যদিকে কমিশন সূত্রে খবর, এই গণনা কেন্দ্রগুলিতে মোট চার হাজার 256 জন কাউন্টিং সুপারভাইজার, সহকারী এবং মাইক্রো পর্যবেক্ষকও থাকবেন। পাশাপাশি গণনা কেন্দ্রের চারপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তার বন্দবস্ত করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, গণনা কেন্দ্রের একেবারে ভিতরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা ৷ বাইরে থাকবে রাজ্য পুলিশ ৷ কমিশনের ওয়েব সাইটে ফলাফল এবং ট্রেন্ডের আপডেটও দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: নিজামের শহরে নাশকতার ছক, পুলিশের জালে হিজাব-উৎ-তাহরীর 17 সদস্য
প্রসঙ্গত, গত 10 তারিখ রাজ্যের মোট 224টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ৷ নির্বাচনে বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গিয়েছে ৷ অন্যদিকে, ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভবনা থাকায় জেডিএস-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলিও ফলাফলের দিকেই তাকিয়ে আছে। এদিকে, ফলের একদিন আগেও বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেন বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ৷ এদিন তিনি বলেন, "হনুমানজি বিজেপির উপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ৷ তার প্রভাব পড়বে কর্ণাটকের ভোটে ৷" ভোটের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা অবশ্য মনে করছেন, দুপুরের মধ্যে ফলাফল সম্পর্কে একটি পরিষ্কার চিত্র ফুটে উঠবে। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজ্য জুড়ে, বিশেষ করে গণনা কেন্দ্র এবং তার আশেপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটে 73.19 শতাংশ ভোট পড়েছিল।