ETV Bharat / bharat

Kargil Vijay Diwas 2023: কার্গিল বিজয় দিবসের 24 বছর, একনজরে কবে কী হয়েছিল ?

দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে কার্গিল বিজয় দিবস ৷ 24 বছর আগে এই দিনটিতে সরকারি ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল ৷ পাকিস্তানের হাত থেকে কার্গিল ফিরিয়ে এনেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷

ETV Bharat
কার্গিল দিবস
author img

By

Published : Jul 26, 2023, 10:46 AM IST

Updated : Jul 26, 2023, 10:55 AM IST

নয়াদিল্লি, 26 জুলাই: আজ কার্গিল বিজয় দিবস ৷ 1999 সালের এই দিনটিতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জয়ী হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ 60 দিন ধরে চলা এই যুদ্ধ হয় লাদাখের কার্গিলে ৷ বহু সেনার রক্তের বদলে জয় পেয়েছিল ভারত ৷ প্রতি বছর এই দিনটিতে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় ৷

ভারত-পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত কার্গিল জম্মু-কাশ্মীরের একটি অংশ ৷ এই জেলাটি নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের গোলমাল অনেক দিনের ৷ সংঘাতের সূত্রপাত সিয়াচেন হিমবাহকে ঘিরে ৷ 1984 সালের এপ্রিল মাসে ভারত 'অপারেশন মেঘদূত'-এর মাধ্যমে সিয়াচেনের দখল নেয় ৷ এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র ৷ এদিকে এই অংশটি পাকিস্তান ও চিনের জন্য ভূরাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৷ এর মধ্যে কার্গিল একটি সূক্ষ্ম পথ, যেখান দিয়ে সহজেই পাকিস্তান থেকে বেআইনি পথে জঙ্গিরা দেশে ঢুকতে পারে এবং হামলা চালাতে পারে ৷ তাই কার্গিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল প্রশাসন ৷

আরও পড়ুন: কার্গিলে শহিদদের স্মরণে সেনার ভিডিয়ো, 3 ঘণ্টায় ভিউ 2.5 লাখের বেশি

প্রাক যুদ্ধ পরিস্থিতি, 3 মে: ভারতের এই চিন্তাকেই সত্যি প্রমাণ করে পাকিস্তান ৷ সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারাফের মদতে কিছু দিন আগেই আন্তর্জাতিক সীমানা পার করে পাকিস্তানের সেনা । 1999 সালের 3 মে কার্গিলের স্থানীয় কিছু মেষপালক ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে ৷ তাঁরা জানান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং জঙ্গিরা এলাকার দখল নিয়েছে ৷ 5 মে ভারতীয় সেনাবাহিনী এলাকায় জওয়ানদের পাঠায় ৷ 5 আধিকারিক পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি হন ৷ পরে তাঁদের হত্যা করা হয় ৷

এইদিনই অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী ৷ তারা কার্গিলে অবস্থিত ভারতের অস্ত্রাগার ধ্বংস করে দেয় ৷ এই ঘটনার পর স্বভাবতই নড়েচড়ে বসে ভারত সরকার ৷ সে সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ৷ কার্গিলে আরও সেনাবাহিনী পাঠানো হয় ৷ কাশ্মীরে বিশাল সংখ্যক জওয়ান মোতায়েন করা হয় ৷ ততদিনে পাকিস্তানি সেনা দখল নিয়েছে কার্গিলের ৷

শুরু অপারেশন বিজয়, 26 মে: ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 'অপারেশন বিজয়'-এর সূচনা করে ৷ ভারতীয় বায়ুসেনা 26 মে 'অপারেশন সফেদ সাগর' শুরু করে ৷ আকাশপথে পাকিস্তানের দখল করে রাখা জায়গাগুলিতে আক্রমণ চালায় ৷ আইএএফের মিগ-21, মিগ-27, মিগ-17 পাকিস্তানের বাহিনীকে আক্রমণ করে ৷

বাজপেয়ীর বড় ঘোষণা, 31 মে: প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ঘোষণা করেন পাকিস্তানের সঙ্গে দেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ 1 জুন পাকিস্তান দেশের কাশ্মীর ও লাদাখে জাতীয় সড়কে বোমা ফেলতে শুরু করে ৷ নানা ঘটনা থেকে ভারত নিশ্চিত হয়, পাকিস্তান সরাসরি এই যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ৷

বাটালিক সেক্টর দখল, 9 জুন: ভারতীয় সেনাবাহিনী বাটালিক সেক্টরের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে ৷ এরপরই পাকিস্তান ভারতীয় সেনাবাহিনীর 6 জওয়ানের দেহ ফিরিয়ে দেয় ৷ 13 জুন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী কার্গিলে যান এবং সেখানে সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ৷ ভারতীয় সেনা টোলোলিং হাইটস কব্জা করে ৷ পাকিস্তানের সেনা প্রতিআক্রমণ করলেও ভারতের কাছে হেরে যায় ৷

ক্লিন্টনের ভূমিকা: কার্গিল যুদ্ধ থামাতে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷ তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফরকে জানান, যত দ্রুত সম্ভব কার্গিল থেকে সেনা এবং জঙ্গিদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে ৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পিছু হঠে পাকিস্তান ৷ 29 জুন ভারতের অন্তর্ভুক্ত কাশ্মীর থেকে সেনা ফিরিয়ে নেয় পাকিস্তান সরকার ৷

টাইগার হিলের দখল, 4 জুলাই: ভারত টাইগার হিল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ৷ বাটালিক সেক্টর থেকেও পাকিস্তানি সেনা প্রত্যাহার করা হয় ৷ এরপর দিন 5 জুলাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তিনি ঘোষণা করেন, কার্গিল থেকে পাকিস্তনের সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৷ ভারতীয় সেনা দ্রুত দ্রাস সেক্টরের দখল নেয় ৷

আরও পড়ুন: কার্গিল বিজয় দিবসের 23 বছর, বাহিনীকে কুর্নিশ মুর্মু-মোদি-রাজনাথের

বাজপেয়ীকে প্রস্তাব নওয়াজের, 12 জুলাই: কার্গিল থেকে সব পাকিস্তানি সেনা দেশে ফিরে যায় ৷ নওয়াজ শরিফ ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দেন ৷ 14 জুলাই প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ঘোষণা করেন 'অপারেশন বিজয়' সফল হয়েছে ৷ তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত রাখেন ৷ 26 জুলাই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় যে কার্গিল যুদ্ধ শেষ হয়েছে ৷ ভারতীয় সেনার জয় হয়েছে ৷

নয়াদিল্লি, 26 জুলাই: আজ কার্গিল বিজয় দিবস ৷ 1999 সালের এই দিনটিতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জয়ী হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ 60 দিন ধরে চলা এই যুদ্ধ হয় লাদাখের কার্গিলে ৷ বহু সেনার রক্তের বদলে জয় পেয়েছিল ভারত ৷ প্রতি বছর এই দিনটিতে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় ৷

ভারত-পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত কার্গিল জম্মু-কাশ্মীরের একটি অংশ ৷ এই জেলাটি নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের গোলমাল অনেক দিনের ৷ সংঘাতের সূত্রপাত সিয়াচেন হিমবাহকে ঘিরে ৷ 1984 সালের এপ্রিল মাসে ভারত 'অপারেশন মেঘদূত'-এর মাধ্যমে সিয়াচেনের দখল নেয় ৷ এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র ৷ এদিকে এই অংশটি পাকিস্তান ও চিনের জন্য ভূরাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৷ এর মধ্যে কার্গিল একটি সূক্ষ্ম পথ, যেখান দিয়ে সহজেই পাকিস্তান থেকে বেআইনি পথে জঙ্গিরা দেশে ঢুকতে পারে এবং হামলা চালাতে পারে ৷ তাই কার্গিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল প্রশাসন ৷

আরও পড়ুন: কার্গিলে শহিদদের স্মরণে সেনার ভিডিয়ো, 3 ঘণ্টায় ভিউ 2.5 লাখের বেশি

প্রাক যুদ্ধ পরিস্থিতি, 3 মে: ভারতের এই চিন্তাকেই সত্যি প্রমাণ করে পাকিস্তান ৷ সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারাফের মদতে কিছু দিন আগেই আন্তর্জাতিক সীমানা পার করে পাকিস্তানের সেনা । 1999 সালের 3 মে কার্গিলের স্থানীয় কিছু মেষপালক ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে ৷ তাঁরা জানান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং জঙ্গিরা এলাকার দখল নিয়েছে ৷ 5 মে ভারতীয় সেনাবাহিনী এলাকায় জওয়ানদের পাঠায় ৷ 5 আধিকারিক পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি হন ৷ পরে তাঁদের হত্যা করা হয় ৷

এইদিনই অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী ৷ তারা কার্গিলে অবস্থিত ভারতের অস্ত্রাগার ধ্বংস করে দেয় ৷ এই ঘটনার পর স্বভাবতই নড়েচড়ে বসে ভারত সরকার ৷ সে সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ৷ কার্গিলে আরও সেনাবাহিনী পাঠানো হয় ৷ কাশ্মীরে বিশাল সংখ্যক জওয়ান মোতায়েন করা হয় ৷ ততদিনে পাকিস্তানি সেনা দখল নিয়েছে কার্গিলের ৷

শুরু অপারেশন বিজয়, 26 মে: ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 'অপারেশন বিজয়'-এর সূচনা করে ৷ ভারতীয় বায়ুসেনা 26 মে 'অপারেশন সফেদ সাগর' শুরু করে ৷ আকাশপথে পাকিস্তানের দখল করে রাখা জায়গাগুলিতে আক্রমণ চালায় ৷ আইএএফের মিগ-21, মিগ-27, মিগ-17 পাকিস্তানের বাহিনীকে আক্রমণ করে ৷

বাজপেয়ীর বড় ঘোষণা, 31 মে: প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ঘোষণা করেন পাকিস্তানের সঙ্গে দেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ 1 জুন পাকিস্তান দেশের কাশ্মীর ও লাদাখে জাতীয় সড়কে বোমা ফেলতে শুরু করে ৷ নানা ঘটনা থেকে ভারত নিশ্চিত হয়, পাকিস্তান সরাসরি এই যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ৷

বাটালিক সেক্টর দখল, 9 জুন: ভারতীয় সেনাবাহিনী বাটালিক সেক্টরের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে ৷ এরপরই পাকিস্তান ভারতীয় সেনাবাহিনীর 6 জওয়ানের দেহ ফিরিয়ে দেয় ৷ 13 জুন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী কার্গিলে যান এবং সেখানে সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ৷ ভারতীয় সেনা টোলোলিং হাইটস কব্জা করে ৷ পাকিস্তানের সেনা প্রতিআক্রমণ করলেও ভারতের কাছে হেরে যায় ৷

ক্লিন্টনের ভূমিকা: কার্গিল যুদ্ধ থামাতে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷ তিনি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফরকে জানান, যত দ্রুত সম্ভব কার্গিল থেকে সেনা এবং জঙ্গিদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে ৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পিছু হঠে পাকিস্তান ৷ 29 জুন ভারতের অন্তর্ভুক্ত কাশ্মীর থেকে সেনা ফিরিয়ে নেয় পাকিস্তান সরকার ৷

টাইগার হিলের দখল, 4 জুলাই: ভারত টাইগার হিল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ৷ বাটালিক সেক্টর থেকেও পাকিস্তানি সেনা প্রত্যাহার করা হয় ৷ এরপর দিন 5 জুলাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তিনি ঘোষণা করেন, কার্গিল থেকে পাকিস্তনের সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৷ ভারতীয় সেনা দ্রুত দ্রাস সেক্টরের দখল নেয় ৷

আরও পড়ুন: কার্গিল বিজয় দিবসের 23 বছর, বাহিনীকে কুর্নিশ মুর্মু-মোদি-রাজনাথের

বাজপেয়ীকে প্রস্তাব নওয়াজের, 12 জুলাই: কার্গিল থেকে সব পাকিস্তানি সেনা দেশে ফিরে যায় ৷ নওয়াজ শরিফ ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দেন ৷ 14 জুলাই প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ঘোষণা করেন 'অপারেশন বিজয়' সফল হয়েছে ৷ তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত রাখেন ৷ 26 জুলাই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় যে কার্গিল যুদ্ধ শেষ হয়েছে ৷ ভারতীয় সেনার জয় হয়েছে ৷

Last Updated : Jul 26, 2023, 10:55 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.