হায়দরাবাদ, 19 অক্টোবর: জন্মের পর মায়ের সঙ্গে নাড়ি ছিন্ন হওয়ার আগেই মূল্য নির্ধারণ হয়ে যাচ্ছে সদ্যোজাতদের ৷ এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে হায়দরাবাদে ৷ সদ্যোজাতের সঙ্গে মায়ের নাড়ি কাটার আগেই হাসপাতালগুলি সেই বাচ্চা বিক্রির জন্য অন্যান্যদের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলছে ৷ সেই টাকা দেওয়ার পর মায়ের নাড়ির সঙ্গে বাচ্চাদের ছিন্ন করছে হাসপাতাল কর্তপক্ষ ৷ সম্প্রতি মুম্বইয়ের কাছে দাদার রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি শিশু-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় ৷ এই ঘটনা থেকেই সদ্যোজাত বিক্রির চক্রটি সামনে এসেছে ৷
মূল অভিযুক্তদের ধরতে হায়দরাবাদে পৌঁছেছে মুম্বই পুলিশ ৷ বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ৷ মহারাষ্ট্রের এক দম্পতি হাসপাতাল থেকে তাঁদের শিশু নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে করুর থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই সদ্যোজাত বিক্রির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ৷
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, এর পিছনে রয়েছে শিশু পাচারকারী এজেন্ট সমাধান পাতিল ৷ এই বিষয়ে একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, হায়দরাবাদে কেনা একটি বাচ্চা বিক্রির দর কষাকষিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়ে মুম্বই ফিরছিল ৷ কিন্তু দাদরা স্টেশনে মুম্বই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় ৷ পাতিলের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের আরও 5 সদস্যকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয় ৷
পরবর্তী পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে যে, সমাধান পাতিল নাসিকের শিশু বিক্রির এজেন্ট ৷ পুলিশ জানিয়েছে যে, পাতিল প্রায়ই ট্রেনে হায়দরাবাদ আসে এবং গর্ভবতী মহিলাদের বিবরণ সংগ্রহ করে ৷ এরপর টাকার বিনিময়ে বাচ্চা কেনার জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে চুক্তি করে ৷ সূত্র জানাচ্ছে, ডেলিভারির পর পাতিল শিশুটির বাবা-মা/পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করত ৷ লক্ষ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিয়ে সদ্যজাত বাচ্চা বিক্রি করতে প্রলুব্ধ করত ৷ নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তানের ব্যাপক চাহিদার মধ্যে কখনও কখনও শিশুদের হাসপাতাল ও অন্যান্য জনবহুল জায়গা থেকে অপহরণ করা হয় ৷ তারপর তা অন্যত্র পাচার করা হয় ৷
আরও জানা গিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত পাতিল হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বাচ্চাদের ছবি পাঠায় ৷ গ্রাহকদের থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর 2-3 লক্ষ দামেঅভিভাবকদের থেকে নবজাতকদের নিয়ে রাতেই নাসিকে নিয়ে যেতেন ৷ এখন পর্যন্ত তিনি এক মাস থেকে এক বছর বয়সি 30-40 জন শিশুকে হায়দরাবাদে পাচার করেছেন ও নাসিকে বিক্রি করেছেন ৷ মুম্বই পুলিশ বর্তমানে হায়দরাবাদে রয়েছে ৷ সেখানকার সিটি পুলিশের সহায়তায় মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : ঝোপ থেকে কান্নার আওয়াজ, তোয়ালে জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার সদ্যজাত; তদন্তে পুলিশ