ওয়াশিংটন, 25 সেপ্টেম্বর : মুম্বইয়ে 26/11 জঙ্গি হামলার (Mumbai 26/11 Terror Attack) মূলচক্রীদের বিচার হওয়া উচিত ৷ একসুরে বলল ভারত (India) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States of America) ৷ শুক্রবার হোয়াইট হাউজে (White House) বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden) ৷ তার পর দুই দেশের তরফে জারি করা যৌথ বিবৃতিতে এই বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে ৷
পাশাপাশি সেখানে জানানো হয়েছে, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও জোরদার করবে ৷ রাষ্ট্রসঙ্ঘের (United States) তালিকাভুক্ত-সহ অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি কোণঠাসা করার কাজ আরও দ্রুতগতিতে করবে এই দুই দেশ ৷ একইসঙ্গে সারা বিশ্বজুড়ে চলা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়েও দুই দেশ একজোট হয়ে থাকবে ৷
আরও পড়ুন : US Quad Summit : কোয়াডে ভারতের কোভিড-19 ভ্যাকসিনকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
ওই বিবৃতি সীমান্তপারের সন্ত্রাসের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে ৷ সন্ত্রাসবাদীদের বিভিন্ন ভাবে যারা মদত দেয়, তাদের ভূমিকারও সমালোচনা করা হয়েছে ভারত-মার্কিন যৌথ বিবৃতিতে (India-US Joint Statement) ৷
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এটা আসলে নাম না করে পাকিস্তানকেই (Pakistan) বার্তা দিল ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷ কারণ, সীমান্তপারের সন্ত্রাসের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ভারত ৷ পাকিস্তানের মদতেই ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন ৷ ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলাও হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : US UNGA : পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে সরে যাক পাকিস্তান, রাষ্ট্রসংঘে দাবি স্নেহা দুবের
সেই হামলাগুলির মধ্যে অন্যতম বড় ছিল মুম্বইয়ে 26/11 ৷ ওই ঘটনায় জড়িত লস্কর-ই-তইবা ৷ এই জঙ্গি সংগঠনের প্রধান হাফিজ সইদ পাকিস্তানেই রয়েছে ৷ তাকে এখনও ভারতের হাতে তুলে দেয়নি পাকিস্তান ৷ বরং নানাভাবে তাকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে ৷ তাছাড়া জইশ-এ-মহম্মদের মাসুদ আজহারও পাকিস্তানের আশ্রয়ে রয়েছে ৷
আফিগানিস্তানের হক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর-ই-তইবা, জইশ-মহম্মদ সহ একাধিক জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ ৷ তার পরও তাদের বারবার মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৷ ভারতও সরব হয়েছে বহুবার ৷ ভারতের এই দাবিতে আরও একবার প্রকাশ্যে পাশে দাঁড়াল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷
আরও পড়ুন : Narendra Modi: শনিবার ‘গ্লোবাল সিটিজ়েন লাইভ’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
গত মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সেখানে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল ৷ সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো 13টি কাউন্সিল সদস্য দেশ ৷ তবে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চিন এই নিয়ে ভোটদানে বিরত থেকেছে ৷
চলতি মাসের 22 তারিখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ ওয়াশিংটনে পৌঁছেই তিনি বৈঠক করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ৷ সেখানেও সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ ওঠে ৷ তার পর তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন ৷
আরও পড়ুন : Modi-Harris meet : ভারত আমেরিকার খুব গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী, প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন কমলা হ্যারিস
এছাড়া তিনি ইতিমধ্যে মার্কিন মুলুকে বসে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে তৈরি কোয়াডের বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন ৷ আজ, নিউইয়র্কে তাঁর রাষ্ট্রসঙ্ঘের 76তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা ৷ সেখানে তিনি সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে ঠিক কী কী বলেন, আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে কূটনৈতিক মহল ৷