নয়াদিল্লি, 7 সেপ্টেম্বর: বিদেশের মাটিতে নিরাপদে বসবাস করে চলা নীরব মোদি ও বিজয় মালিয়াদের দেশে ফেরাতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কেন্দ্র। দেশ থেকে পলাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং তাদের প্রত্যর্পণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অপরাধীদের সম্পত্তি সনাক্ত করার জন্য একটি পৃথক প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চায় কেন্দ্র ৷ একই সঙ্গে, এই ইস্যুতে জি20 নেতাদের উপর চাপ তৈরির ক্ষেত্রে পৃথক কৌশলও নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷
কেন্দ্রের কৌশল হিসাবে জানা যাচ্ছে, যদি সমস্ত জি20 নেতাদের কাছ থেকে এই মর্মে সমর্থন মেলে তাহলে বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, জুনায়েদ ইকবাল মেমনের মতো পলাতক এবং অর্থনৈতিক অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে ভারত। কেন্দ্রীয় সরকারের একজন শীর্ষ সরকারি আধিকারিক ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অপরাধীদের সম্পত্তি সনাক্তকরণের বিষয়ে নিয়ম প্রণয়ন করা হবে ৷ দেশে যাদের ঋণ রয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য এই আইন আনা হবে। জি20 এই ধরনের একটি আন্তর্জাতিক কৌশল বাস্তবায়িত করার জন্য সর্বোত্তম প্ল্যাটফর্ম বলে দাবি করে, ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, ভারত অর্থনৈতিক অপরাধ এবং তাদের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি পলাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নয় দফা অ্যাজেন্ডাও তৈরি করছে সরকার।
ওই আধিকারিক জানান, প্রত্যর্পণের মামলা, প্রত্যর্পণের বর্তমান যে ব্যবস্থা রয়েছে তার ফাঁক এবং আইনি সহায়তা-সহ অভিজ্ঞতা এবং সেরা অনুশীলনগুলি ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মও তৈরি করা উচিত বলে দেশ মনে করছে। এই প্রক্রিয়া গঠনের জন্য জি20 দেশগুলির একটি যৌথ প্রচেষ্টা নিশ্চিত করবে যে, সমস্ত পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের প্রবেশ এবং নিরাপদ আশ্রয় সব দিক থেকে বন্ধ করা হবে বলেও জানান তিনি ৷
আইন প্রণোয়নগকারী সংস্থাগুলি 19 জনের বিরুদ্ধে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধ আইন, 2018 (এফইওএ)-এর অধীনে আবেদন করেছে। 19 জনের মধ্যে বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, নীতিন জয়ন্তীলাল সান্দেসরা, চেতন জয়ন্তীলাল সান্দেসরা, দীপ্তি চেতন জয়ন্তীলাল সান্দেসরা, হিতেশ কুমার নরেন্দ্রভাই প্যাটেল, জুনায়েদ ইকবাল মেমন, হাজরা ইকবাল মেমন, আসিফ ইকবাল মেমন এবং রামচন্দ্রন বিশ্বনাথন-সহ 10 জনকে অর্থনৈতিক অপরাধী এবং পলাতক হিসাবে ঘোষিত ৷ ওই আধিকারিক জানান, প্রত্যর্পণ চুক্তির ফাঁক ফোঁকরের সুযোগ নিয়ে পলাতকরা বহু বছর ধরে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বর্তমানে 48টি দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে ৷ 12টি দেশের সঙ্গে প্রত্যর্পণের ব্যবস্থাও রয়েছে। ইতালি এবং ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে প্রত্যর্পণের ব্যবস্থাগুলি মাদকদ্রব্যের অবৈধ চালান এবং সাইকোট্রপিক পদার্থের অবৈধ চালান সম্পর্কিত অপরাধের মধ্যে সীমাবদ্ধ কারণ, ভারত, ইতালি এবং ক্রোয়েশিয়া 1988 সালের মাদকদ্রব্যের অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কনভেনশনের পক্ষে ছিল ৷
আরও পড়ুন: তেল উৎপাদন কমিয়েছে সৌদি-রাশিয়া, লোকসভা ভোটের আগে আদৌ কমবে পেট্রল-ডিজেলের দাম ?
এই অপরাধীদের বেশিরভাগই এমন দেশে আশ্রয় নিয়েছে যেগুলি বিগত বহু বছর ধরে তাদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে ৷ আধিকারিকদের মতে ভারতের যৌথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে যে, জি20 দেশগুলি সমস্ত পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীদের প্রবেশকে যাতে বন্ধ করে। ভারতও পরামর্শ দিয়েছে যে, আর্থিক অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)- মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাপী নজরদারিকারী, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মধ্যে বাস্তব-সময় এবং ব্যাপক তথ্য বিনিময়ের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রাধিকার প্রদান এবং লক্ষ্য করার জন্য আহ্বান জানানো উচিত।