ETV Bharat / bharat

জল সংরক্ষণের জন্য ভারতে প্রয়োজন গণআন্দোলন - জলশক্তি মন্ত্রক

গঙ্গাকে যিনি মর্ত্যে এনেছিলেন, সেই ভগীরথের মতো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত জলসংরক্ষণে যত্নবান হওয়া । যদি দেশকে পর্যাপ্ত জল এবং শস্য পেতে হয়, তাহলে জলসংরক্ষণকে গণআন্দোলনের রূপ দিতে হবে ।

India needs a mass movement to conserve water
জল সংরক্ষণের জন্য ভারতে প্রয়োজন গণআন্দোলন
author img

By

Published : Mar 5, 2021, 10:52 AM IST

সমস্ত জীবিত প্রাণীর জীবনধারণের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় হওয়ায়, সবারই উচিত জলকে নিজেদের জীবনের মতোই মহামূল্যবান সম্পদ হিসেবে দেখা । কিন্তু সেই চেতনার অভাবে আজ দেশের সামনে ভয়াবহ এবং অপ্রত্যাশিত জলসংকট । নীতি আয়োগ আড়াই বছর আগেই সতর্ক করেছিল, যে দেশের ষাট শতাংশ মানুষ ভয়াবহ জলসংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এবং 2030 সালে লভ্য জলের তুলনায় চাহিদা দ্বিগুণ হতে চলেছে । নীতি আয়োগের সমীক্ষা বলছে, দেশের 70 শতাংশ জলের উৎস ক্রমশ দূষিত হচ্ছে, যার জেরে প্রতি বছর দুই লাখ অসহায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে । নীতি আয়োগের কথায়, এই পরিস্থিতির জেরে দেশের জিডিপির ছয় শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে ।

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সমস্ত গ্রাম প্রধানকে 12টি ভাষায় চিঠি লিখে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করেন । সম্প্রতি তিনি 100 দিনের কাজের আওতায় জলসংরক্ষণে অংশীদার হওয়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ।

সাম্প্রতিক ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে জলশক্তি মন্ত্রক জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে একটি প্রচার অভিযান শুরু করতে চলেছে । জল সংরক্ষণে মোদির এই বার্তা, 2003 সালে বাজপেয়ীর উদ্যোগকে মনে করিয়ে দেয় । তেলেগুভূমির জলযজ্ঞ আন্দোলন যখন দেশকে জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করল, তখন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী মানুষকে আহ্বান করলেন নদী, সেচের জলাশয় ও পুকুরকে পলিমুক্ত করার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য । পাশাপাশি তিনি চেয়েছিলেন যে বিজ্ঞানীরা জল সংরক্ষণের জন্য কম খরচের প্রযুক্তি তৈরি করুন । কিন্তু খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়ার অভাবে, মূল্যবান জলের উৎসগুলোকে অবহেলা করা হয়েছে, এবং বিপদঘণ্টা সর্বত্র বাজছে ।

বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ু খামখেয়ালি হয়ে দাঁড়িয়েছে । এর জেরে, এতদিন জলের অভাবের জন্য পরিচিত কোনও কোনও এলাকাতেও এখন বন্যা দেখা যাচ্ছে । এই যন্ত্রণা আর চোখের জল তখনই থামবে, যখন মানুষ দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে, ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থাটা পরিবর্তনের লক্ষ্যে এগোবে ।

ভারতীয় ভাষাগুলোতে এমন বহু প্রবাদ রয়েছে, যা সেচের জলাশয় ও জলের উৎসগুলোকে পলিমুক্ত রাখার তাৎপর্য বোঝায় । জল বাঁচানোর চেতনা প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের মধ্যে রয়েছে ।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার 18 শতাংশ থাকেন ভারতে । বিশ্বজুড়ে যত গবাদি পশু আছে, তারও 18 শতাংশ এদেশেই । কিন্তু পৃথিবীর পানীয় জলের মাত্র 4 শতাংশ দেশে পাওয়া যায় । ভূপৃষ্ঠে থাকা জলের উৎসকে ক্রমাগত ধ্বংস করা এবং ভূগর্ভস্থ জলকে অতিরিক্ত ব্যবহারের জেরে পরিস্থিতি প্রতি বছর খারাপ হচ্ছে ।

যেখানে বছরের মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় 70 শতাংশ 100 দিনের মধ্যে হয়ে থাকে, সেখানে দেশ জানেই না যে কীভাবে তা সংরক্ষণ করতে হবে । একটা ভয়াবহ বিপদ দেশের দিকে এগিয়ে আসছে, কারণ বছরের বাকি সময় জলের সংস্থান করার কোনও পথই নেই ।

কয়েক দশক আগেও দেশের জনপ্রতি জলের লভ্যতা ছিল 5000 কিউবিক মিটার । আজ সেটা কমে 1486 কিউবিক মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে । 2031 সালের মধ্যে সেটা আরও কমে 1367 কিউবিক মিটারে দাঁড়াবে । শুধু পরিমাণে নয়, জলের মানেও প্রভাব পড়তে চলেছে ।

হঠাৎ কেউ এসে পরিস্থিতি বদলে দেবে, এই ধারণা থেকে মানুষের বেরিয়ে আসা উচিত । ভারতে বছরে 4 লাখ কোটি কিউবিক মিটার বৃষ্টিপাত হয়। যদিও দেশ এর মাত্র এক চতুর্থাংশই ব্যবহার করতে পারে। জলের লভ্যতার দিক থেকে ভারত আত্মনির্ভর হতে পারে তখনই, যখন যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে অন্তত 2 লাখ কোটি কিউবিক মিটার বৃষ্টির জল ধরে রাখা যাবে ।

আরও পড়ুন : দেশে মাত্রাছাড়া জল-দূষণ, সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশ

ভারতের তুলনায় ইজ়রায়েলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক চতুর্থাংশ । কিন্তু তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছে। ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার কীভাবে ফের ভরা যায়, তা ইজ়রায়েলের সাফল্য থেকে শেখা উচিত ভারতের । গঙ্গাকে যিনি মর্ত্যে এনেছিলেন, সেই ভগীরথের মতো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত জলসংরক্ষণে যত্নবান হওয়া । যদি দেশকে পর্যাপ্ত জল এবং শস্য পেতে হয়, তাহলে জলসংরক্ষণকে গণআন্দোলনের রূপ দিতে হবে ।

সমস্ত জীবিত প্রাণীর জীবনধারণের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় হওয়ায়, সবারই উচিত জলকে নিজেদের জীবনের মতোই মহামূল্যবান সম্পদ হিসেবে দেখা । কিন্তু সেই চেতনার অভাবে আজ দেশের সামনে ভয়াবহ এবং অপ্রত্যাশিত জলসংকট । নীতি আয়োগ আড়াই বছর আগেই সতর্ক করেছিল, যে দেশের ষাট শতাংশ মানুষ ভয়াবহ জলসংকটের মুখে দাঁড়িয়ে, এবং 2030 সালে লভ্য জলের তুলনায় চাহিদা দ্বিগুণ হতে চলেছে । নীতি আয়োগের সমীক্ষা বলছে, দেশের 70 শতাংশ জলের উৎস ক্রমশ দূষিত হচ্ছে, যার জেরে প্রতি বছর দুই লাখ অসহায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে । নীতি আয়োগের কথায়, এই পরিস্থিতির জেরে দেশের জিডিপির ছয় শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে ।

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সমস্ত গ্রাম প্রধানকে 12টি ভাষায় চিঠি লিখে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করেন । সম্প্রতি তিনি 100 দিনের কাজের আওতায় জলসংরক্ষণে অংশীদার হওয়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ।

সাম্প্রতিক ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে জলশক্তি মন্ত্রক জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে একটি প্রচার অভিযান শুরু করতে চলেছে । জল সংরক্ষণে মোদির এই বার্তা, 2003 সালে বাজপেয়ীর উদ্যোগকে মনে করিয়ে দেয় । তেলেগুভূমির জলযজ্ঞ আন্দোলন যখন দেশকে জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করল, তখন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী মানুষকে আহ্বান করলেন নদী, সেচের জলাশয় ও পুকুরকে পলিমুক্ত করার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য । পাশাপাশি তিনি চেয়েছিলেন যে বিজ্ঞানীরা জল সংরক্ষণের জন্য কম খরচের প্রযুক্তি তৈরি করুন । কিন্তু খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়ার অভাবে, মূল্যবান জলের উৎসগুলোকে অবহেলা করা হয়েছে, এবং বিপদঘণ্টা সর্বত্র বাজছে ।

বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ু খামখেয়ালি হয়ে দাঁড়িয়েছে । এর জেরে, এতদিন জলের অভাবের জন্য পরিচিত কোনও কোনও এলাকাতেও এখন বন্যা দেখা যাচ্ছে । এই যন্ত্রণা আর চোখের জল তখনই থামবে, যখন মানুষ দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে, ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থাটা পরিবর্তনের লক্ষ্যে এগোবে ।

ভারতীয় ভাষাগুলোতে এমন বহু প্রবাদ রয়েছে, যা সেচের জলাশয় ও জলের উৎসগুলোকে পলিমুক্ত রাখার তাৎপর্য বোঝায় । জল বাঁচানোর চেতনা প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের মধ্যে রয়েছে ।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার 18 শতাংশ থাকেন ভারতে । বিশ্বজুড়ে যত গবাদি পশু আছে, তারও 18 শতাংশ এদেশেই । কিন্তু পৃথিবীর পানীয় জলের মাত্র 4 শতাংশ দেশে পাওয়া যায় । ভূপৃষ্ঠে থাকা জলের উৎসকে ক্রমাগত ধ্বংস করা এবং ভূগর্ভস্থ জলকে অতিরিক্ত ব্যবহারের জেরে পরিস্থিতি প্রতি বছর খারাপ হচ্ছে ।

যেখানে বছরের মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় 70 শতাংশ 100 দিনের মধ্যে হয়ে থাকে, সেখানে দেশ জানেই না যে কীভাবে তা সংরক্ষণ করতে হবে । একটা ভয়াবহ বিপদ দেশের দিকে এগিয়ে আসছে, কারণ বছরের বাকি সময় জলের সংস্থান করার কোনও পথই নেই ।

কয়েক দশক আগেও দেশের জনপ্রতি জলের লভ্যতা ছিল 5000 কিউবিক মিটার । আজ সেটা কমে 1486 কিউবিক মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে । 2031 সালের মধ্যে সেটা আরও কমে 1367 কিউবিক মিটারে দাঁড়াবে । শুধু পরিমাণে নয়, জলের মানেও প্রভাব পড়তে চলেছে ।

হঠাৎ কেউ এসে পরিস্থিতি বদলে দেবে, এই ধারণা থেকে মানুষের বেরিয়ে আসা উচিত । ভারতে বছরে 4 লাখ কোটি কিউবিক মিটার বৃষ্টিপাত হয়। যদিও দেশ এর মাত্র এক চতুর্থাংশই ব্যবহার করতে পারে। জলের লভ্যতার দিক থেকে ভারত আত্মনির্ভর হতে পারে তখনই, যখন যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে অন্তত 2 লাখ কোটি কিউবিক মিটার বৃষ্টির জল ধরে রাখা যাবে ।

আরও পড়ুন : দেশে মাত্রাছাড়া জল-দূষণ, সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশ

ভারতের তুলনায় ইজ়রায়েলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক চতুর্থাংশ । কিন্তু তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে পেরেছে। ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার কীভাবে ফের ভরা যায়, তা ইজ়রায়েলের সাফল্য থেকে শেখা উচিত ভারতের । গঙ্গাকে যিনি মর্ত্যে এনেছিলেন, সেই ভগীরথের মতো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত জলসংরক্ষণে যত্নবান হওয়া । যদি দেশকে পর্যাপ্ত জল এবং শস্য পেতে হয়, তাহলে জলসংরক্ষণকে গণআন্দোলনের রূপ দিতে হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.