আজমেঢ়, 28 অগস্ট : আজমেঢ় শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলেই রয়েছে রাষ্ট্রীয় সংগ্রহশালা ৷ মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনকালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ৷ ভারতে ব্রিটিশরাজের প্রাথমিক পর্যায়ের উত্থান শুরু হয়েছিল এই আজমেঢ় দুর্গ থেকেই ৷ 1616 খ্রিষ্টাব্দে ইংল্য়ান্ডের রাজা প্রথম জেমসের নির্দেশে মুঘল বাদশা জাহাঙ্গিরের সঙ্গে দেখা করতে আজমেঢ় দুর্গে আসেন থমাস রো ৷ উদ্দেশ্য ছিল, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন ৷
আরও পড়ুন : Independence Special : ব্রিটিশদের চোখে চোখ রেখে লড়েছিলেন রামগড়ের রানি অবন্তী বাঈ
সুরাত-সহ ভারতের বিভিন্ন অংশে কল-কারখানা প্রতিষ্ঠার বিশেষ অনুমোদন আদায় করাই ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লক্ষ্য ৷ একাধিক বৈঠকের পর ব্রিটিশের সেই প্রস্তাবে রাজি হন জাহাঙ্গির ৷ আর এই চুক্তিই বরাবরের জন্য ভারতের ইতিহাস বদলে দেয় ৷ সেই সময় কেউ কল্পনাও করতে পারেননি, যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে কারখানা তৈরির অনুমতি চাইছে, আদতে তারা এই দেশে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় ! ক্রমশ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গোটা দেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসন জারি হয় ৷
চৌহান বংশের পর পৃথ্বীরাজ চৌহানের শহর আজমেঢ়ে যথাক্রমে রাজপুত, মুঘল, মারাঠা এবং ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ এছাড়াও বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এই দুর্গ ৷ হলদিঘাটির যুদ্ধে এই দুর্গের তরফে যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল, তা আকবরকেও বিস্মিত করে ৷ সেই যুদ্ধে লড়েছিলেন মান সিং ৷
স্বাধীনতার পর এই আজমেঢ় দুর্গই আবার উৎসবে সামিল হয় ৷ 1947 সালের 14 অগস্ট মধ্যরাতে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় ৷ তার ঠিক পরেই আজমেঢ় দুর্গে ইউনিয়ন জ্য়াক নামিয়ে তেরঙ্গা উত্তোলন করেন কংগ্রেস সভাপতি জিতমল লুনিয়া ৷ সেই ঐতিহাসিক ও আবেঘন মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ৷
আরও পড়ুন : Independence Special : আজও শহিদ ক্ষুদিরামের স্মৃতিতে বুঁদ মুজফ্ফরপুর
রাজস্থানের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায় আজমেঢ়ের গুরুত্ব অপরিসীম ৷ আজমেঢ় থেকে গোটা রাজপুতানাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই সহজ ছিল ৷ আর ঠিক এই কারণেই মুঘল থেকে ব্রিটিশ, সকলেরই প্রথম পছন্দ ছিল আজমেঢ় ৷ একইসঙ্গে, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেরও অন্যতম প্রধান ঘাঁটি ছিল এই আজমেঢ় ৷