নয়াদিল্লি, 16 মার্চ: সংসদে হট্টগোল হল সবাইকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিজেপি সরকারের একটি কৌশল ৷ বৃহস্পতিবার সংসদের উভয় কক্ষ সারাদিনের জন্য মুলতবি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় এমনই দাবি করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি (Rahul Slams BJP)৷ ব্রিটেনে রাহুল গান্ধির 'ডেমোক্রেসি ইন ডেঞ্জার' শীর্ষক বক্তৃতা নিয়ে এ দিন তুমুল হই-হট্টগোল বাঁধে সংসদে (Parliament Adjourned)৷ তারপরই মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন ৷ এ বিষয়ে রাহুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং গৌতম আদানির মধ্যে কী সম্পর্ক, প্রধান এই প্রশ্নেরই উত্তর এখনও দিতে পারেনি বিজেপির সরকার ৷
রাহুল এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে (Rahul Gandhi press conference) বলেন, "চারজন মন্ত্রী আমাকে সংসদে অভিযুক্ত করেছেন । সংসদে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করা আমার অধিকার । তাঁরা আমাকে কথা বলতে দেবে বলে আমার মনে হয় না ৷ আজ আমার আসার এক মিনিটের মধ্যে তাঁরা হাউস মুলতুবি করে দিয়েছে । তবে আমি আশাবাদী যে, আমি পারব । আগামিকাল কথা বলার অনুমতি দেওয়া হবে ৷"
রাহুলের দাবি, এর আগে তিনি সংসদে যে প্রশ্নগুলি উত্থাপন করেছিলেন, তা বাদ দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু এতে এমন কিছুই ছিল না যা জনসাধারণের বিষয়ের বাইরে ৷ সরকার এখনও আদানি ইস্যুতে ভীত (Govt still scared of Adani issue) বলেই সবাইকে বিভ্রান্ত করতে তারা এ সব করছে বলে অভিযোগ রাগার ৷
13 মার্চ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সংসদে অচলাবস্থা চলছে ৷ কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধীরা আদানি-হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) তদন্তের জন্য চাপ দিয়ে বলেছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মধ্যে চর্চিত যোগসূত্রের তদন্ত করতে এই জাতীয় প্যানেলের প্রয়োজন রয়েছে ।
সরকার পালটা দাবি করছে যে, সম্প্রতি লন্ডনে ভারতীয় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জন্য প্রথমে রাহুল গান্ধির ক্ষমা চাওয়া উচিত । আদানি ইস্যুতে জেপিসি তদন্তের দাবিতে 17টি সম মনস্ক দলের দাবিকে নেতৃত্ব দেওয়া কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে কেন্দ্রের এই দাবির প্রসঙ্গে বলেছেন যে, রাহুল ক্ষমা চাইবেন না ৷ কারণ তিনি বিদেশের মাটিতে কিছু ভুল বলেননি এবং সরকারের মন্ত্রীরা ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করছেন ৷
আরও পড়ুন: দেশের সম্মানহানি করছেন রাহুল, সংসদে নিন্দায় সরব রিজিজু
খাড়গে এবং বিভিন্ন দলের মুখপাত্ররা এর আগে বিদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদির বিভিন্ন মন্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে অভিযোগ করেন যে, প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রীই দেশের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন এবং এ জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত । খাড়গে অভিযোগ করেছেন যে, ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটি খুবই অস্বাভাবিক যে, ক্ষমতাসীন বিজেপি সংসদের দুটি কক্ষের কাজ ব্যাহত করছে এবং তালিকাভুক্ত বিষয়ে আলোচনা পরিচালনা করতে দিচ্ছে না ।
বিরোধী দলগুলি এ দিন সরকারকে আক্রমণ করে বলেছে যে, তাঁদের নেতাদের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার দ্বারা টার্গেট করা হচ্ছে ৷ আদানি গোষ্ঠীর কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি যেগুলির বিরুদ্ধে বিপুল সংখ্যক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে ৷ দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, বুধবার লন্ডন সফর থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার সংসদে যোগ দিয়েছিলেন রাহুল এবং দুপুর 2 টোয় পুনরায় লোকসভার কাজ শুরু হলে তিনি তাঁর বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলেন । তবে তাঁকে বক্তব্য রাখার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ।