গঞ্জাম, 24 নভেম্বর: স্ত্রী ও ঘুমন্ত শিশুর গায়ে সাপ ছেড়ে দিলেন ব্যক্তি । বিষাক্ত সাপের ছোবলে শেষ হল দু'টি প্রাণ ৷ চক্রান্তকারী স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার আধেইবার গ্রামের কবিসূর্যনগর থানা এলাকায় ৷ জোড়া খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী কে গণেশ পানকে গ্রেফতার করেছে ৷ তবে এই খুনের ঘটনা থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিল অভিযুক্ত ৷ তবে শেষে পুলিশের চাপের মুখে সে স্বীকার করে যে, স্ত্রী ও সন্তান ঘুমিয়ে থাকার সময়ে বিষাক্ত সাপ ছেড়ে দিয়েছিল সে ৷ আর সেই সাপের কামড়েই মৃত্যু হয়েছে দু'জনের ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, কে গণেশ পান গঞ্জাম জেলার আধেইবার গ্রামের বাসিন্দা ৷ তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় বাসন্তীর ৷ বিয়ের পর 3 বছরও কাটেনি, তার আগেই এই ঘটনা ঘটল ৷ গত বছর থেকে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয় ৷ অভিযুক্ত স্বামী কে গণেশ স্ত্রীকে সন্দেহ করতে শুরু করে ৷ বাসন্তী এই ঘটনায় থানায় অভিযোগও দায়ের করেন ৷ সেই সময় পুলিশ গণেশকে গ্রেফতার করে ৷ পরে অবশ্য অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় ৷
এরপর বাসন্তী গণেশের সঙ্গে তার বাড়িতে একসঙ্গেই থাকছিলেন ৷ এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে গণেশ বাসন্তীকে থানায় দায়ের করা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে ৷ এমনকী তাঁকে এবং দু'বছরের শিশু কন্যাকে খুনের হুমকিও দেয় ৷ এই হুমকিই যে কখনও সত্যি হবে, তা বোধহয় ভাবতে পারেননি বাসন্তী ৷
7 অক্টোবর ভোর 5টা নাগাদ হঠাৎ গণেশের বাড়ি থেকে চিৎকারের শব্দ আসে ৷ তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে ৷ তখন বাসন্তীর বাবা বাড়ির ভিতরে ঢোকে ৷ তিনি দেখেন গণেশ একটি বিষাক্ত সাপকে পিটিয়ে মারার চেষ্টা করছে ৷ আর তাঁর মেয়ে বাসন্তী এবং তাঁর দু'বছরের শিশু কন্যা কাছেই ঘুমিয়ে রয়েছে ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দু'জনকে হিঞ্জিলিকাট্টু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা শিশুকন্যা ও বাসন্তীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ হাসপাতাল থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয় ৷ এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ৷
এই ঘটনার পাঁচদিন পর বাসন্তীর বাবা তাঁর মেয়ে ও নাতনিকে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করে ৷ তদন্ত চলাকালীন পুলিশের কাছে অভিযুক্ত স্বামী স্বীকার করে নেয় যে সে ওই বিষাক্ত সাপ দিয়ে তাঁর শিশু কন্যা ও স্ত্রীকে খুন করেছে ৷ ওই বিষাক্ত সাপটি সে পোলসারায় এক সাপুড়ের কাছ থেকে নিয়ে এসেছিল ৷ সাপুড়েকে অভিযুক্ত গণেশ জানিয়েছিল, সে সাপটিকে নিয়ে এসে পুজো করবে ৷
তদন্ত কোন পথে ? পুলিশ স্নেক হেল্পলাইনের সাহায্য় নিয়ে এই রহস্য উন্মোচন করে ৷ গত রবিবার স্নেক হেল্পলাইনের সাধারণ সম্পাদক শুভেন্দু মালিক-সহ পাঁচজন ঘটনাস্থলে যান ৷ তাঁরা পুলিশকে সাপের বিষয়ে অনেক তথ্য দেন ৷ এরপরই বৃহস্পতিবার স্বামী গণেশকে স্ত্রী ও কন্যাকে খুনের দায়ে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: