নয়াদিল্লি, 2 অক্টোবর: কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের (Congress President Election) পালা সাঙ্গ হলেই কি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী (Rajasthan Chief Minister) পদেও বদল আনা হবে (Rajasthan Politics) ? এ নিয়েই চলছে জল্পনা ৷ এই বিষয়ে দলের এক প্রবীণ নেতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "সভাপতি নির্বাচন হয়ে গেলেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷" তাহলে কি এবার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের (Ashok Gehlot) প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সচিন পাইলটের (Sachin Pilot) কপালে শিকে ছিঁড়বে ? জবাবে কোনও স্পষ্ট উত্তর দেননি ওই কংগ্রেস নেতা ৷ তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে, অশোক গেহলত সুরক্ষিত রয়েছেন ৷ কিন্তু, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঘটনা কোন দিকে গড়াবে, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয় ৷"
প্রসঙ্গত, গতবারের রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত সচিন পাইলটের ঘাড়ে বন্দুক রেখেই ভোট বৈতরণী পার করেছিল কংগ্রেস ৷ দলের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার গঠিত হলে সচিনই হবেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত অশোক গেহলতের চাপের মুখে কার্যত নতিস্বীকার করে নেয় হাইকম্য়ান্ড ৷ তরুণ সচিনের বদলে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসানো হয় প্রবীণ অশোককে ৷ শুধু তাই নয় ৷ শুঝুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী পদ আঁকড়ে ধরে থাকতে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান অশোক গেহলত ৷ এমনকী, তাঁর শিবিরের বিধায়করা হুঁশিয়ারি দেন, রাজস্থানের সরকারে অশোক গেহলতের উত্তরসূরি হিসাবে সচিন পাইলটকে বেছে নেওয়া হলে গণ ইস্তফা দেবেন তাঁরা ! ফলে সভাপতি নির্বাচন নিয়েও বিস্তর জটিলতা তৈরি হয় ৷
আরও পড়ুন: সোনিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন গেহলত
কংগ্রেসের কাছে 2023 রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ হাইকম্য়ান্ডের পরিকল্পনা ছিল, সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর করে পরবর্তী নির্বাচনের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়া ৷ তা না হলে ক্ষমতায় টিকে থাকা অসম্ভব ৷ তাই গেহলতকে দলের প্রধান নেতার পদ পর্যন্ত ছেড়ে দিতে রাজি ছিল গান্ধি পরিবার ৷ কারণ, খাতায়কলমে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হলেও গান্ধি পরিবারের অনুগামী হিসাবে তাতে গেহলতের জয় একপ্রকার নিশ্চিত ছিল ৷ অথচ গেহলত কোনও ক্ষমতাই হাতছাড়া করতে নারাজ ৷ ফলে পুরো পরিকল্পনাই ভেস্তে যায় ৷ কারণ, শীর্ষ নেতৃত্ব ভেবেছিল, আগামী দিনে গেহলতকে কংগ্রেস সভাপতি এবং সচিন পাইলটকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরা হবে ৷
কিন্তু, অশোক গেহলত ও তাঁর অনুগামীদের অসহযোগিতায় সেই পরিকল্পনা এখন বিশ বাঁও জলে ৷ উপরন্তু, এর ফলে কংগ্রেসের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে ৷ এই অবস্থায় পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দল গেহলতকে সতর্ক করবে কিনা, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ যদিও ওয়াকিবহাল মহল বলছে, যতক্ষণ পর্যন্ত অশোক গেহলতের অনুগামীরা তাঁর পাশে রয়েছেন, ততক্ষণ হাইকম্যান্ডের পক্ষেও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া সম্ভব নয় ৷