ধারওয়াড়/বেলগাভি(কর্নাটক), 12 জুলাই: "মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম তার নয়ন-মণি হিন্দু তাহার প্রাণ ৷" বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতার লাইনগুলির সত্যতা ফের প্রমাণ করল কর্নাটকের সাম্প্রতিকতম একটি ঘটনা ৷
এক মুসলিম যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপিত হল হিন্দু কিশোরীর হৃদযন্ত্র ৷ কর্নাটকের ধারওয়াড় এসডিএম হাসপাতাল থেকে বেলগাভির কেএলই হাসপাতালে গ্রিন করিডোর করে নিয়ে যাওয়া হল ব্রেন ডেথ হওয়া এক হিন্দু বালিকার হৃদযন্ত্র ৷ এরপর চিকিৎসকরা প্রায় ছ'ঘণ্টার চেষ্টায় হিন্দু কিশোরীর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করলেন মুসলিম যুবকের শরীরে ৷ অস্ত্রোপচার করে নতুন হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পর যুবকের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর ৷
আরও পড়ুন : জাতীয় হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট ডে
জানা গিয়েছে, কর্নাটকের উত্তর কন্নড় জেলার 15 বছর বয়সী এক হিন্দু কিশোরী দুর্ঘটনার জেরে গুরুতর আহত অবস্থায় সম্প্রতি ধারওয়াদের এসডিএম হাসপাতালে ভর্তি হয় ৷ এরপর চিকিৎসক কিশোরীর ব্রেন ডেথের কথা জানালে তার বাবা-মা মেয়ের অঙ্গদান করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ তারপরই ব্রেন ডেথ হওয়া কিশোরীর দুটি কিডনি, হৃদযন্ত্র ও লিভার দান করা হয় ৷
অন্যদিকে, 22 বছরের এক মুসলিম যুবক হৃদরোগের কারণে বেলাগাভির কেএলই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৷ তাঁর শরীরে ব্রেন ডেথ হওয়া হিন্দু কিশোরীর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । গ্রিন করিডোর করে পুলিশের গাড়িতে মাত্র 50 মিনিটে কিশোরীর হৃদযন্ত্র আনা হয় প্রায় 80 কিমি দূরত্বে বেলাগাভির কেএলই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ এরপর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড সালদানার তত্ত্বাবধানে ছ'ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারে মুসলিম যুবকের দেহে হিন্দু কিশোরীর হৃদযন্ত্রটি প্রতিস্থাপন করা হয় ৷
একইভাবে গ্রিন করিডোরের মাধ্যমে ওই কিশোরীর লিভার হুবলি বিমানবন্দর থেকে বেঙ্গালুরুর অ্যাপোলো হাসপাতালে পাঠানো হয় ৷ সেখানে এক ব্যক্তির দেহে তা প্রতিস্থাপন করা হয় ৷ এরপর হুবলির এসডিএম হাসপাতাল ও তত্ত্বদর্শী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই ব্যক্তির শরীরে কিশোরীর দু'টি কিডনি প্রতিস্থাপিত করা হয় ৷ সুতরাং, একজনের অঙ্গদানে যে চারজনের নবজন্ম হল, তা বলাই যায় ৷
আরও পড়ুন : 43-এর অনুশাকে নতুন জীবন দিল 16 বছরের কিশোরের হৃদয়