নয়াদিল্লি, 5 এপ্রিল: কুখ্য়াত গ্য়াংস্টার দীপক বক্সারকে দেশে ফিরিয়ে আনা হল ৷ ভারতের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড এই দীপক বক্সার এতদিন প্রশাসনের খাতায় কলমে পলাতক ছিল ৷ শেষ পর্যন্ত মেক্সিকো পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ভারতের হাতে তুলে দেয় ৷ বুধবার নয়াদিল্লিতে তাকে আনা হয়েছে ৷ দেশের বাইরে অভিযানে এই প্রথম কোনও গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, স্পেশাল সেলের দুই সদস্যের একটি দল দীপকের সঙ্গে মেক্সিকো থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে রাজধানীর ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আসে ৷ ভোর 6 টায় তাকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপকের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ-সহ একাধিক অভিযোগ আছে ৷ অন্য অভিযোগের পাশাপাশি উত্তর দিল্লির সিভিল লাইনস এলাকায় এক প্রমোটারকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ৷ তাকে প্রাথমিকভাবে এই যাবতীয় অপরাধের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
জাতীয় পর্যায়ের বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী এই গ্যাংস্টার, মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়েই ধরা পড়ে যায় ৷ ধরা পড়ার আগে অবশ্য় দিল্লি এবং ভারতের একাধিক রাজ্যে অপরাধ সংগঠিত করার পরিকল্পনা ছিল তার ৷ এমনটাই পুলিশের কাছে খবর। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার (স্পেশাল সেল) এইচজিএস ধালিওয়াল জানান, মেক্সিকোয় যাওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক রুট ব্য়বহার করেছিল দীপক ৷ এমনকী বেশ কিছু জায়গায় সে থেকেওছিল ৷ এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল সে ৷ শেষ পর্যন্ত নিউদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের সহায়তায় জালে ধরা পড়ে সে।
দেশের বাইরে অভিযান চালিয়ে এই প্রথম কোনও গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে দীপকের বিরুদ্ধে ৷ মূলত গোগি গ্যাংয়ের মাথা এই দীপকের খোঁজে 3 লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ । এদিন দিল্লির স্পেশাল পুলিশ কমিশনার ধালিওয়াল বলেন, "আমরা জানুয়ারিতেই জানতে পারি যে দীপক দেশ থেকে পালানোর জন্য উত্তরপ্রদেশের বেরেলি থেকে রবি আন্তিলের নামে একটি জাল পাসপোর্ট তৈরি করে। এরপরই সে কলকাতা থেকে দুবাই হয়ে কাজাখস্তানের আলমাটিতে গিয়ে তুরস্কে পৌঁছোয়। এরপর সে স্পেনের উদ্দেশে রওনা হয়। একাধিক দেশ হয়ে শেষে মেক্সিকোতে যায় দীপক।"
আরও পড়ুন: ইয়াসিন ভাটকলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার মামলা
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার আরও বলেন, "আমরা ক্রমাগত তার রুট ট্র্যাক করেছি ৷" দীপকের বিরুদ্ধে, মানব এবং মাদক পাচারের পাশাপাশি একাধিক খুনের অভিযোগও আছে ৷ তার বেশ কয়েকজন সহযোগীকে ইতিমধ্য়েই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ৷ এরপরই দীপকের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ ৷ দিল্লি পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মেক্সিকোতে পৌঁছে দিল্লি-সহ অন্য়ান্য় রাজ্যে অপরাধের একটি গোষ্ঠী চালানোর পরিকল্পনা করেছিল দীপক ৷ দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং বিশেষ সেলের প্রচেষ্টার ফলে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে ৷ গত পাঁচ বছরে হত্যা ও তোলাবাজি-সহ প্রায় 10টির বেশি মামলায় ভারতে ওয়ান্টেড এই দীপক হরিয়ানার সোনিপত জেলার গান্নাউরের বাসিন্দা ৷