নয়াদিল্লি, 16 জুলাই: বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের বৈঠকের একদিন আগে কাছাকাছি এল আপ-কংগ্রেস ৷ সংসদে দিল্লি নিয়ে কেন্দ্রের অধ্য়াদেশের বিরোধীতা করবে কংগ্রেস ৷ যে বিষয়টিকে 'পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট' হিসেবেই দেখছে আপ নেতৃত্ব ৷
এর ফলে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী জোট আরও খানিকটা শক্ত এবং দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ যার কারণ হিসাবে বলাই যায়, আপের দাবিকে একপ্রকার মান্যতাই দিল কংগ্রেস ৷ আম আদমি পার্টির তরফে রবিবার জানানো হয়েছে, দিল্লিতে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্রের অধ্যাদেশের দ্ব্যর্থহীন বিরোধীতা করবে কংগ্রেসের ৷ যাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবেই দেখতে চাইছে আপ ৷
অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফে সংসদে আপকে সমর্থনের ইঙ্গিত এলেও এখনও অবশ্য আপ স্পষ্ট করেনি যে, তারা সোমবার বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলের বৈঠকে যোগ দেবে কি না। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আগেই জানিয়েছিল, যে কংগ্রেস যদি সংসদে দিল্লি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে এবং আপ'কে সমর্থন করে, তবেই তারা বিরোধী জোটের এই ফোরামে যোগ দেবে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এদিনই এআইসিসির একাধিক শীর্ষ নেতারা আপকে সমর্থনের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে ৷ এমনকী আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডাও কংগ্রেসের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ৷ তারপরও অবশ্য বিরোধী জোটে আপ থাকবে কি না, তা নিয়ে খোলসা করেননি কোনও আপ নেতা ৷
20 জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন চলাকালীন বিতর্কিত দিল্লি অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার পথ পরিষ্কার করেছেন খোদ ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপাল জানিয়েছেন যে, এ ব্যাপারে দলের অবস্থান স্পষ্ট ৷ রাজ্যপালদের মাধ্যমে বিরোধী দলগুলি শাসিত রাজ্যগুলির প্রশাসনিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য কেন্দ্রের এই জাতীয় যে কোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে কংগ্রেস ৷ পাশাপাশি কংগ্রেস যে এ ধরনের সমস্ত বিল বা অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি।
কে সি বেনুগোপাল বলেন, "আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের ফেডারেল ব্যবস্থাকে কলুষিত করার এবং রাজ্যপালদের মাধ্যমে রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রচেষ্টাকে সমর্থন করব না। আমরা দিল্লি অধ্যাদেশকে সমর্থন করব না ৷" বেনুগোপালের মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আপ সাংসদ তথা দলের জাতীয় মুখপাত্র রাঘব চাড্ডা টুইট করে লিখেছেন, "কংগ্রেস দিল্লি অধ্যাদেশের দ্ব্যর্থহীন বিরোধিতা করবে বলে ঘোষণা করেছে। এটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।"
দিল্লি অধ্যাদেশ ইস্যুতে কংগ্রেস তার অবস্থান পরিষ্কার করার সঙ্গেই বেনুগোপালদের আশা ছিল যে, আপ বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির আসন্ন বৈঠকে অংশ নেবে। পটনায় তাদের প্রথম বৈঠকে, বিরোধী দলগুলি 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও দিল্লি অধ্য়াদেশ নিয়ে কংগ্রেসের তরফে স্পষ্ট সমর্থনের কোনও আশ্বাস না-পেয়ে বৈঠক ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ এরপর এখনও আপের তরফে বেঙ্গালুরু বৈঠকে থাকার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি ৷
আরও পড়ুন: আট মন্ত্রীকে নিয়ে শরদ-সাক্ষাতে উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত
বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার মে মাসে দিল্লিতে আমলাদের বদলি ও পদন্নোয়ন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ আনে ৷ কার্যত সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অস্বীকার করে দিল্লিতে নির্বাচিত সরকারকে পরিষেবার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের জন্য এই অধ্যাদেশ আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আপ ৷