ভরতপুর, 29 জুলাই: নিজের মেয়েকে প্রাণে মারার চেষ্টা করল বাবা, তাও মেয়ে যখন গর্ভবতী ৷ মেয়ের 'অপরাধ', ভিন ধর্মে বিয়ে ৷ তাই দিনেদুপুরে তাঁকে অটো দিয়ে পিষে হত্যার চেষ্টা জন্মদাতার ৷ এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের ভরতপুরে ৷ অভিযুক্তের নাম ইসলাম খান ৷ যদিও মেয়েকে খুনের চেষ্টায় সফল হয়নি ওই ব্যক্তি ৷ মেয়েটি কোনওরকমে নিজেকে বাঁচিয়েছেন ৷ ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যাওয়ায় অবস্থা বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি অটো নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত (Father attempts to kill his pregnant daughter married to Hindu Boy in Bharatpur) ৷
মালী মহল্লার বাসিন্দা নরেন্দ্র কুমার সৈনী এবং নগমা খানের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ৷ নগমার বাবা ইসলাম খান ৷ পেশায় অটোচালক ৷ সে ও পরিবারের বাকি সদস্যরা মেয়ের এই সম্পর্ক ও ভিন ধর্মে বিয়ে মেনে নিতে পারেনি ৷ এর মধ্যেই এ বছরের 22 ফেব্রুয়ারি দুই ভিন্ন ধর্মের প্রেমিক-প্রেমিকা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান এবং দিল্লিতে আর্য সমাজ মন্দিরে বিয়ে করেন ৷ নববিবাহিত দম্পতি ভরতপুরে ফিরে আসেন ৷ এদিকে নগমার বাবা থানায় নরেন্দ্রর বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে অপহরণ এবং জোরজবরদস্তি ফুঁসলিয়ে তুল নিয়ে গিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ দায়ের করে ৷
আরও পড়ুন: ভিন জাতে বিয়ে, সম্মান রক্ষার্থে যুবককে কুপিয়ে খুন হায়দরাবাদে
পুলিশ কেস এবং আত্মীয়স্বজনের ভয়ে নরেন্দ্র স্ত্রী নগমাকে নিয়ে মধ্যপ্রদেশে তাঁর দাদার কাছে পালিয়ে যান ৷ তারপর দু'মাস মথুরায় কাটে নববিবাহিত দম্পতির ৷ এর মধ্যে নগমা গর্ভবতী হয়ে পড়েন ৷ তখন নরেন্দ্র-নগমা ভরতপুরে ফিরে আসেন এবং রঞ্জিত নগরে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন ৷
বৃহস্পতিবার দুপুরে নরেন্দ্র স্ত্রী নগমাকে নিয়ে হাসপাতালে রুটিন চেকআপ করাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ৷ এখানে রাস্তায় ইসলাম খানের চোখে পড়ে দু'জন ৷ সে অটো নিয়ে মেয়েকে অনুসরণ করতে শুরু করে ৷ নরেন্দ্র এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্ত্রীকে সরবৎ খাওয়াচ্ছিলেন ৷ এই সুযোগে ইসলাম তার অটো দিয়ে একটি বাইকে ধাক্কা মারেন এবং মেয়ে নগমাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় ৷
গর্ভবতী নগমা কোনও ক্রমে নিজের প্রাণ বাঁচান ৷ হইচইতে ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হয়ে যায় ৷ তখন ইসলাম খান অটো নিয়ে পালিয়ে যায় ৷ জানা গিয়েছে, অটোয় ইসলামের সঙ্গে আরও অনেকে ছিল ৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ আতঙ্কিত নরেন্দ্র-নগমাকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ৷ রাতে পুলিশের গাড়িতেই দম্পতিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় ৷ নরেন্দ্র-নগমার অভিযোগ, নগমার বাবা তাঁদের খুন করতে অটোয় বেআইনি অস্ত্রও সঙ্গে নিয়ে এসেছিল ৷ মথুরাগেট থানার পুলিশ আধিকারিক রামনাথ জানিয়েছেন, এই ঘটনায় দম্পতি মামলা দায়ের করেছেন ৷ এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকা মেয়েকে মেরে আত্মঘাতী এএসআই