নয়াদিল্লি, 25 জুন: কালীঘাটের পট বাংলার শিল্পকলার মৌলিক অবদান। হিন্দু দেব-দেবী বা রোজনামচা জীবনের প্রতিচ্ছবি বার বার ধরা পড়েছে বাংলার অতিপ্রাচীন এই পট শিল্পে ৷ একদিকে 19 শতকের সমাজের তথাকথিত 'ভদ্রলোক' সম্প্রদায় অন্যদিকে প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো 'বাবু আর বাজার' কালচার, কলকাতার অন্য ছবি তুলে ধরে ৷ সাদা কালো ক্যানভাসের সেই সময়, ধরা পড়ল নয়াদিল্লির অন্য রকম শিল্পকলা প্রদর্শনীতে ৷
18-19 শতকের কলকাতার কেন্দ্রে থাকা কালীঘাট পট, তেল চিত্র, কাচের বিপরীত চিত্র এবং সর্বোপরি পুরনো কলকাতাকে ক্যানভাসে তুলে ধরেছেন ইতিহাসবিদ ও স্কলার অদিতি নাথ সরকার ৷ তাঁর মতে, তৎকালীন কলকাতার কালীঘাটের কালী মন্দির সংলগ্ন বাজারের বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিল এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছিল এই কালীঘাটের পট ৷ পর্যটকরা এই পট কলকাতা থেকে নিয়ে যেতেন স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ৷ মিলের কাগজে জলরঙে আঁকা সেই চিত্রই দিকে দিকে পরিচিতি পায় 'কালীঘাট পট' নামে।
সেই আঁকার প্রদর্শনীতে অদিতি জানিয়েছেন, "মূলত জলরঙের ছবিগুলি বেশিরভাগই ঐশ্বরিক মূর্তিকে ভেবে তৈরি করা হত ৷ যেমন কালীঘাটের কালী, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, অন্নপূর্ণা, শিব, গণেশ, কার্তিক় এবং অন্যান্য দেবতাদের ছবি ফুটে উঠত রঙিন তুলির টানে ৷ তিনি জানিয়েছেন এই প্রদর্শনীতে হিন্দু দেবদেবী ও পুরাণের নানা কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে ৷ যেমন-কৃষ্ণের বকাসুরকে পরাজিত করা, দুর্গার মহিষাসুর বধ, শিবের নন্দীর পিঠে চড়া, রামের দরবার এবং রাবণের সঙ্গে যুদ্ধরত জটায়ু-র বিভিন্ন দৃশ্যয়ানগুলি তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, "প্রদর্শনীর একটি বড় অংশ হিন্দু দেবদেবী, ধর্মীয় গুরুত্বের দৃশ্য জলরঙের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে ৷ পাশাপাশি সেই সময়কার পুরনো কলকাতা, বাবু কালচার ও যৌনপল্লীর ছবিও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ প্রদর্শনীতে আর্লি বেঙ্গল তৈলচিত্র কলকাতার অভিজাত ছবি তুলে ধরা হয়েছে"
আরও পড়ুন: বিভাস চক্রবর্তীর প্রশংসা, বিগ বি-র সঙ্গে কাজ, ইটিভি ভারতে অকপট অসীম
জানা গিয়েছে, এই প্রদর্শনী কার্যকরী করতে সময় লেগেছে প্রায় পাঁচ বছর ৷ নতুন করে পুরনো কলকাতা ফিরে দেখার জার্নি শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ প্রদর্শনী শেষ হবে 1 জুলাই ৷