নয়াদিল্লি, 18 মে : জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কের শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত ৷ তারমধ্যেই ফের চাঞ্চল্যকর দাবি করে বসলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন আধিকারিক ৷ এএসআই-য়ের প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা ধরমবীর শর্মার দাবি, কুতুব মিনার গড়েছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য ৷ আর তা বানানোর একমাত্র উদ্দেশ্য, মিনারের চূড়া থেকে সূর্য পর্যবেক্ষণ (Qutb Minar was built by Raja Vikramaditya to observe the Sun) ৷
দিনকয়েক আগেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনশাল জানিয়েছিলেন, কুতুব মিনার আসলে বিষ্ণুস্তম্ভ ৷ এবার ফের কুতুব মিনারের মাথা থেকে ‘ইসলামীয় স্থাপত্য’-এর তাজ কেড়ে নিলেন আরেকজন ৷ " ধরমববীর বলেন, ‘‘এটা কোনওভাবেই কুতুব মিনার নয়, বরং সূর্যমিনার বলা যেতে পারে ৷ পঞ্চম শতাব্দীতে রাজা বিক্রমাদিত্য এটির নির্মাণ করেন ৷ আমার কাছে এই সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণও রয়েছে ৷’’ প্রসঙ্গত, প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের পক্ষ থেকে তিনি বেশ কয়েকবার কুতুব মিনার পরিদর্শন করেছেন ।
তাঁর কথায়, ‘‘কুতুব মিনারের চূড়ায় একটি 25 ইঞ্চির স্লোপ (Slop) রয়েছে । কারণ এটি সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল ৷ 21 জুন অয়নকালের সময় অন্তত আধঘণ্টা এই অংশে ছায়া পড়ে না । এটা বিজ্ঞান এবং প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে এর ব্যাখ্যাও রয়েছে ৷’’
আরও পড়ুন : ‘শিবলিঙ্গকে সুরক্ষা, নমাজও চলুক’, জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কে জানাল সুপ্রিম কোর্ট
ইতিহাস বলে, 1198 খ্রীস্টাব্দে কুতুব মিনারের নির্মাণ শুরু করেছিলেন কুতুবউদ্দীন আইবক ৷ 1215 খ্রীস্টাব্দে নির্মাণকার্য শেষ করেন তাঁর উত্তরসূরি ইলতুতমিস ৷ শুধু তাই নয়, কুতুব মিনার একটি স্বাধীন কাঠামো ৷ কাছাকাছি কোনও মসজিদও নেই ৷ এমনকী কুতুব মিনারের দরজাও উত্তরমুখী । যা দিয়ে রাতের আকাশে ধ্রুবতারা দেখা যায় ।
প্রসঙ্গত, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেছিলেন বলে দাবি করেছে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ৷ এরপর আদালত নির্দেশ দেয় ওই মসজিদে ভিডিয়ো সমীক্ষার ৷ সোমবারই সেই সমীক্ষার কাজ শেষ হয় ৷ হিন্দু পক্ষ সোমবার দাবি করেছে, মসজিদ চত্বরে একটি 3 ফুট উঁচু শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে ৷ সেই রিপোর্ট আদালতেও জমা দেওয়া হয়েছে ৷ তারপরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷ মঙ্গলবার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, শিবলিঙ্গকে সুরক্ষা দিতে হবে ৷ কিন্তু তাতে যেন মুসলিমদের নমাজ পাঠের অধিকারে কোনও বাধা দেওয়া না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে ৷ নমাজ যেরকম চলছে, সেভাবেই চলবে ৷