তেজপুর (অসম), 26 ডিসেম্বর: সময়ের সঙ্গে এগোচ্ছে প্রযুক্তি। জীবনের সব ক্ষেত্রেই এখন স্পষ্ট আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু মানুষের চিন্তাধারা কি আজও কুসংস্কার মুক্ত, উদারতার পরিচয় দিতে পেরেছে? চেঁচিয়ে বললে উত্তর হয়েতো 'হ্যাঁ' হতো, যদি না 2023 সালে দাঁড়িয়েও ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে মারা, বাড়ি ভাঙচুর, গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার মতো খবর শিরোনামে আসত। অসমের তেজপুরে সোমবার সকালে ডাইনি অপবাদে এক বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি ভাঙচুর করা হয় ৷ এরপর তাদের গ্রাম ছাড়া করা হয় ৷
রবিবার রাতে তেজপুরে ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে তাঁর সন্তানদের সামনে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয় ৷ তার একদিনের মধ্যে একই জেলায় আবারও ডাইনি অপবাদে এক বৃদ্ধ দম্পতিকে হেনস্তা করার অভিযোগ গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে ৷ এবার অসম-অরুণাচল সীমান্তে সোনিতপুর এলাকায় ডাইনি অপবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি ভাঙচুর করে গ্রামবাসীরা। তারপর তাদের গ্রামছাড়া করে ৷ তবে এহেন ঘটনায় বারবার পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ এমন ঘটনা ঘটানোর আগে পুলিশ কোথায় থাকছে...
ঘটনাক্রমে জানা যায়, অসম-অরুণাচল সীমান্তের সোনিতপুর এলাকার লোকজন ষাটোর্ধ্ব এক দম্পতিকে জাদুবিদ্যার অভিযোগ তুলে তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে ৷ তাঁদের বাড়ির সমস্ত গাছ কেটে ফেলে। এরপর ওই পরিবারটিকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, ওই দম্পতি গত পাঁচ বছর ধরে ওই এলাকায় বসবাস করেন। আর্থিকভাবে দরিদ্র ওই পরিবারটি কোনওভাবে দিনমজুরের কাজ করে জীবন অতিবাহিত করে। সোমবার সকালে বৈষ্ঠ বসুমাতারী নামে এক ব্যক্তি কিছু গ্রামবাসীদের ডেকে দম্পতিকে ডাইনি অপবাদ দেয় ৷ এরপর গ্রামের লোকজন রাস্তার ধারে থাকা তাদের ঘরবাড়ি ও সমস্ত জিনিসপত্র তছনছ করে। এরপর গ্রামছাড়া করে ৷
অবশেষে অসহায় ওই দরিদ্র পরিবারটি সাহায্য চেয়ে চরিদুয়ার থানায় পৌঁছয়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারকে আশ্বস্ত করে তাঁদের আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়। বর্তমানে পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে। এদিকে, রবিবার রাতে তেজপুরের বাঁশবাড়িতে ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে ৷ ওই মহিলাকে তাঁর দুই নাবালক সন্তানের সামনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় ৷ ওই ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে এবং বাকি দু'জনের খোঁজে তল্লাশি চালায় ৷
আরও পড়ুন: