নয়াদিল্লি, 7 নভেম্বর: সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করায় সন্ত্রাসবাদী মামলা সাংবাদিক-সহ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে । তা নিয়ে এবার ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনায় সরব হল এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া । বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে মুখ খোলায় যে ভাবে সাংবাদিক-সহ 102 জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী মামলা দায়ের করেছে ত্রিপুরা পুলিশ, এডিটর্স গিল্ড তাতে স্তম্ভিত ।
ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে সম্প্রতি নেটমাধ্যেম মুখ খোলেন বিশিষ্ট একাধিক সাংবাদিক-সহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ । এক সাংবাদিক নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লেখেন, ‘ত্রিপুরা ইজ বার্নিং’, অর্থাৎ ত্রিপুরা জ্বলছে ৷ তার পরই জানা যায়, ওই ব্যক্তি তো বটেই এমন 102টি প্রোফাইল খুঁজে বার করে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনলফুল অ্যাক্টিফিটিজ (প্রিভেনশন) আইনে মামলা দায়ের করেছে ত্রিপুরা পুলিশ , যার আওতায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে সরকার ।
ত্রিপুরা নিয়ে মন্তব্য করায় শুক্রবার পশ্চিম আগরতলা থানা সবক’টি মামলা দায়ের হয় ৷ তাতে 153-এ (বিভিন্ন গোষ্ঠীকে শত্রুতায় উস্কানি দেওয়া ), 153-বি (দেশের অখণ্ডতা বিনষ্ট), 469 (জালিয়াতি), 471 (ভুয়ো নথিকে আসল বলে চালানো), 503 (অপরাধমূলক ভাবে ভীতি প্রদর্শন ), 504 (শান্তিভঙ্গের উদ্দেশে ইচ্ছাকৃত ভাবে অবমাননা), 120-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)-সহ বিভিন্ন ধারা আনা হয়েছে ৷
তা নিয়েই রবিবার এডিটর্স গিল্ড-এর তরফে লিখিত বিবৃতি জারি করা হয় । তাতে বলা হয়, ‘সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে লেখালেখি এবং রিপোর্ট করায় যে ভাবে সাংবাদিক-সহ 102 জনের বিরুদ্ধে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করেছে ত্রিপুরা পুলিশ, তাতে অডিটর্স গিল্ড স্তম্ভিত ৷ এইএপিএ-র আওতায় একাধিক নেটমাধ্যমকেও নোটিস পাঠিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ ৷ সত্যতা যাচাই করতে ত্রিপুরা যাওয়া দিল্লির এক আইনজীবীর বিরুদ্ধেও সম্প্রতি ইউএপিএ দায়ের করা হয় ৷ পুলিশের এমন আচরণ অত্যন্ত উদ্বেগজনক ৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা ঘটানো হিংসা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্যের সরকার ৷ তা থেকে নজর ঘোরাতেই এই পদক্ষেপ ৷’
-
The Editors Guild of India is deeply shocked by the Tripura Police’s action of booking 102 people, including journalists, under the coercive Unlawful Activities (Prevention) Act, for reporting and writing on the recent communal violence in the state. pic.twitter.com/bkDssiqOXK
— Editors Guild of India (@IndEditorsGuild) November 7, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">The Editors Guild of India is deeply shocked by the Tripura Police’s action of booking 102 people, including journalists, under the coercive Unlawful Activities (Prevention) Act, for reporting and writing on the recent communal violence in the state. pic.twitter.com/bkDssiqOXK
— Editors Guild of India (@IndEditorsGuild) November 7, 2021The Editors Guild of India is deeply shocked by the Tripura Police’s action of booking 102 people, including journalists, under the coercive Unlawful Activities (Prevention) Act, for reporting and writing on the recent communal violence in the state. pic.twitter.com/bkDssiqOXK
— Editors Guild of India (@IndEditorsGuild) November 7, 2021
অসমের পর সম্প্রতি ত্রিপুরাতেও সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ সামনে আসে । জায়গায় জায়গায় মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়িতে ঢুকে লুঠতরাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ । এমনকি একাধিক মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও সামনে আসে । এর জন্য সরাসরি বজরংঙ্গ দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে কাঠগড়ায় তুলেছে দেশের শীর্ষ ইসলামি সংস্থা অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিস-ই মুশাওয়ারত (এআইএমএম) ৷ গ্রামাঞ্চলে মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকানে আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ করে তারা ৷
সব মিলিয়ে 16টি মসজিদে ভাঙচুর এবং আগুন ধরানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ৷ গত 267 অক্টোবর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি মিছিল থেকেই এই হিংসার সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে ৷ স্থানীয়দের দাবি, দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া হিংসা নিয়ে উস্কানি দিতে থাকেন হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মীরা ৷ তা থেকেই হিংসা ছড়ায় ৷