মুম্বই, 13 জুন : রীতা দেবী, বয়স 34 ৷ থাকেন অসমে, পেশায় চাষি ৷ গত বছর নাম পরিবর্তন করে রীত কুমার হয়েছেন ৷ মন ভরেনি, পুরুষ হতে অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা জোগাড় করে মুম্বই এসেছিলেন গত বছরের মার্চ মাসে ৷ সেই সুযোগ জোটেনি, কারণ মুম্বইয়ের লিঙ্গ-পরিবর্তনের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সেন্ট জর্জ হাসপাতালটিকে সম্পূর্ণ কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে ৷ এর আগে তাঁর শরীর থেকে স্তন কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে ৷ এবার স্ত্রী যৌনাঙ্গ বাদ দিয়ে পুরুষাঙ্গ স্থাপন করার কথা ছিল ৷ পরিবারের সদস্যরা ভয় পেলেও, রীত পায়নি, কারণ তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছিল ৷ তিনি পুরুষ হতে চান ৷ অপেক্ষায় কেটে গিয়েছে একটা বছর ৷
রীতের বন্ধু প্রসেনজিৎ পাল একজন সামাজিক কর্মী ৷ তিনি রীতাকে রীত হওয়ার অস্ত্রোপচারের জন্য অনেকগুলি কাউন্সেলিং করে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পাশে থেকেছেন ৷ রীতার শরীরে পুরুষালি ছাপ আনতে প্রয়োজনীয় হরমোন থেরাপির টাকা জোগাড় করে দিয়েছেন ৷ রীতা থেকে রীত হওয়ার খরচ প্রচুর, যা চাষ করে ব্যয় করা সম্ভব নয় ৷
আরও পড়ুন : IMA:করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রাণ কেড়েছে 719 চিকিৎসকের, জানাল আইএমএ
অসম, বিহার, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ আর মহারাষ্ট্র থেকে অন্ততপক্ষে 18 জন প্রান্তিক আর গরিব মানুষের কাছে সেন্ট জর্জ হাসপাতালই ইচ্ছেপূরণের একমাত্র ঠিকানা ৷ 2018 সালে এখানে চিকিৎসক রজত কাপুরের তত্ত্বাবধানে রূপান্তরকামী মানুষদের জন্য একটি সাপ্তাহিক বহির্বিভাগ চালু হয় ৷ সবাইকে কাউন্সেলিংয়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তুলনায় অনেক কম টাকায় কারও কারও হরমোনাল থেরাপি শুরু হয়, অন্ততপক্ষে দু'জনের লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ হয়েছিল ৷ কিন্তু আর এগোয়নি ৷ করোনাকালে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন হরমোনাল থেরাপি, লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসায় থাকা মানুষেরা ৷ বন্ধ রয়েছে ইচ্ছেপূরণের দরজা ৷
এখন প্লাস্টিক-সার্জেন ডাঃ কাপুরের ফোনে গুড মর্নিং লিখে পাঠান অসমের হোজাই জেলার প্রান্তে থাকা একজন ৷ দু'সপ্তাহে একবার তো ফোন করেনই মহারাষ্ট্র আর বিহারের কেউ, ডাক্তারবাবু, কবে শুরু হবে ইচ্ছেপূরণের অস্ত্রোপচার ?