এমআইটি প্রযুক্তি পর্যালোচনা, ইউএসএ : গত দুই থেকে তিন বছরেরও বেশি সময়ে ডিজিটাল রূপান্তরের গতি ক্রমশ বাড়ছে । এর জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য ক্লাউড কম্পিউটিং, ডেটা আর্কিটেকচার ও ভিজ্য়ুয়ালাইজেশন টেকনোলজিতে যন্ত্রপাতি এবং বিনিয়োগে উন্নত পারফরম্যান্স, ক্ষমতা এবং গ্রহণযোগ্যতার। তাছাড়াও মেশিন লার্নিংয়ের ঘটনাও বাড়ছে আর ভবিষ্যতে একইহারে বাড়বে কোয়ানটাম কম্পিউটিংও, যার জেরে আণবিক এবং ফর্মূলেশন গড়ে তোলার গতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে।
রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ক্ষেত্রে যে বৃহত্তর ডিজিটাল রূপান্তর ঘটে চলেছে তা গবেষকদের সময়সাপেক্ষ মানব-শ্রমে পরিচালিত প্রক্রিয়াকে বদলে স্বয়ংক্রিয় করে তুলছে । কঠিন সমস্ত সমস্যা, ইতিপূর্বে যার কার্যকরী সমাধানে ব্যর্থতা এসেছে, তার মোকাবিলায় গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলছে । এই নয়া রিপোর্ট, যা তৈরি হয়েছে নোভারটিস, রশ, মার্ক, সিনজেনটা এবং বিএএসএফ-এর মতো সংস্থায় কর্মরত রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট আধিকারিকদের নেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে । এই রিপোর্টে বিজ্ঞানকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় আনতে নানা ধরনের ঘটনা, সেরা অনুশীলন এবং রোডম্যাপের ব্যবহার খতিয়ে দেখা হয়েছে ।
জটিল ডেটাসেটের বিন্যাস উদ্ভাবন করা
তাত্ত্বিক, আহরণযোগ্য এবং বণ্টনযোগ্য তথ্যই হল সেই জ্বালানি যার উপর বর্তমান সময়ের যুগান্তকারী বিশ্লেষকসমূহ এবং কম্পিউটিং যন্ত্রপাতি নির্ভর করে থাকে । ডেটাসেটগুলি যাতে বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্যসাধনে ব্যবহার করা যায়, তা নিশ্চিত করতে প্রখ্যাত সংস্থাগুলি ‘এফএআইআর’ তথ্যনীতির (যা খুঁজে পাওয়া যায়, আহরণ করা যায়, যা আন্তঃব্যবহারযোগ্য এবং পুনরায় ব্যবহার করা যায়) উপর নির্ভর করছে । পাশাপাশি গড়ে তুলছে বলিষ্ট মেটাডেটা এবং সুশাসনযোগ্য প্রোটোকল । সঙ্গে ব্যবহার করছে উন্নত বিশ্লেষণব্যবস্থা এবং ডেটা ভিসুয়ালাইজেশন টুলস ।
ডিজিটাল রূপান্তর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট-এর দিগন্ত খুলছে যে যে ক্ষেত্রে, তার মধ্যে রয়েছে জেনোমিকস, যা ‘প্রিসিশন মেডিসিন’-এর জগতে বিপ্লব আনতে পারে । পাশাপাশি এটি বিকেন্দ্রীভূত ক্লিনিক্যাল ট্রাাল, ডিজি-সিউটিক্যালস ও হেলথকেয়ার ওয়্যারেবলস-এর জগতেও ভবিষ্যৎমুখী উদ্ভাবন ঘটাচ্ছে ।
সঠিক সমীক্ষায় আরও দ্রুত পৌঁছনো
পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুধুমাত্র অর্থগত দিক থেকে নয় । মানবসম্পদ এবং বৈজ্ঞানিক সম্পদের নিরিখেও বড় খরচ বয়ে আনে। উন্নত ‘সাইমুলেশন’ প্রক্রিয়া, মডেলিং, এআই ভিত্তিক অ্যানালিটিক্স এবং কোয়ানটাম কম্পিউটিং নতুন নতুন থেরাপি, বস্তু অথবা পণ্যের ক্ষেত্রে সেরা প্রার্থী বাছাইয়ে সাহায্য করছে । ফলে কেবলমাত্র সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবানই ব্যয়সাপেক্ষ পরীক্ষামূলক দশায় পৌঁছাতে পারছে।
সংগঠনগত নিরীক্ষণ
গবেষকদলকে নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং কলাকৌশল নিয়ে পরীক্ষা করার সুযোগ এনে দিয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট যে কোনও উদ্ভাবনকে সুগম করে । তাছাড়াও তারা সর্বদিকে কৌশলী উদ্যোগ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে নানা ধরনের আইডিয়া শেয়ার করে, সিস্টেমে ভারসাম্য এনে এবং ডিজিটাল রূপান্তরের বাজেট বরাদ্দ করে । যে কোনও শিল্পের মতোই এআই এবং অটোমেশনে কাজের বৈজ্ঞানিক গবেষণার পদ্ধতি বার বার বদলায় । কিন্তু তাকে গবেষকদের কেরিয়ারের জন্য ঝুঁকি হিসাবে না দেখে ওষুধপত্র প্রস্তুত শিল্প এবং রাসায়নিক শিল্পের বড় বড় সংস্থাগুলি নতুন নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, অন্য সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাধছে, প্রযুক্তিকে কোণঠাসা করে না রেখে প্রসারিত করছে । তারা সাফল্য উদযাপন করছে, ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া নিচ্ছে এবং কাজের জায়গায় প্রক্রিয়া বদল নিয়ে খোলাখুলি মতপ্রকাশের জায়গা খোলা রাখছে ।
আরও পড়ুন : পেট্রোপণ্যের দাম: আগুনে ঘি ঢালা উচিত নয় সরকারের
ওষুধপ্রস্তুতকার এবং রাসায়নিক শিল্প ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগন্তুক নয়। দশকের পর দশক ধরে ডেটা ব্যবহার করে এবং পরিসংখ্যানগত কৌশল প্রয়োগ করে এর উৎপাদনশীলতা এবং উদ্ভাবন বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়েছে । কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী যে, আশ্বাস সত্ত্বেও ফলাফল হতাশাজনকই থেকেছে । বৃহত্তর ক্ষেত্রে ডিজিটাল রূপান্তর ঘটছে রিসার্চ এবং গবেষণায়। ডিজিটাল রূপান্তর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নিরিখে জিনোমিকস-এর মতো ক্ষেত্রেও ঘটতে দেখা যাচ্ছে । অগ্রণী সংস্থাগুলি এফএআই-এর ডেটানীতি নির্ভর করে এগোচ্ছে । উন্নত ‘সাইমুলেশন’ প্রক্রিয়া, মডেলিং, এআই ভিত্তিক অ্যানালিটিক্স এবং কোয়ানটাম কম্পিউটিং ব্যবহার হচ্ছে ওষুধ প্রস্তুতি এবং রাসায়নিক শিল্পে ।