ETV Bharat / bharat

Dhobi Ghat : করোনার উপর আবার প্রবল বর্ষণ, অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট

author img

By

Published : Jun 12, 2021, 1:10 PM IST

Updated : Jun 12, 2021, 1:57 PM IST

প্রবল বর্ষণে স্তব্ধ রয়েছে মুম্বইয়ের ধোবি ঘাট (Dhobi Ghat) ৷ গত বছর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবসায় 40 শতাংশ ক্ষতি সামাল দিতে হয় এখানকার ধোপাদের ৷ এ বছর আবার এসেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ৷ সমস্যা, সংকূল পরিস্থিতিতে এখন আবার বর্ষায় সমস্যার মুখে ধোবি ঘাট ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট

মুম্বই, 12 জুন : মুম্বইয়ের ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া ধোবি ঘাট (Dhobi Ghat) থেকে বছরজুড়ে যে পরিমাণ টাকা উপার্জিত হয় তা পরিমান শুনলে চোখ কপালে উঠবে ৷ ঘরে ঘরে ওয়াশিং মেশিন এসে যাওয়ার পরও তার পরিমান কমবেশি 100 কোটি টাকা ! এমন কোনও দিন যায় না যেদিন কাজ বন্ধ থাকে এখানে ৷ তবে বর্ষায় প্রতি বছরই সমস্যার মুখে পড়তে হয় এখানকার ধোপাদের ৷ এবছরও তাই ৷

গত কয়েকদিনের ক্রমাগত বৃষ্টির জল জমেছে ধোবি ঘাটে ৷ 1 থেকে 9 জুন মুম্বইয়ে 416.2 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ৷ সমস্যায় পড়তে হয়েছে ধোপাদের ৷ গত বছর লকডাউনেও কাজ বন্ধ ছিল ৷ গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় 40 শতাংশ ব্যবসা পড়ে যায় লকডাউনের জন্য ৷ এবছরও দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভাবাচ্ছে ৷ এবছরও মার্চের পর থেকে মাস দেড়েক বন্ধ থেকেছে কাজ ৷ তার উপর আবার বর্ষার ঠেলা ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
গত বছর করোনায় লকডাউন থেকেই ব্যবসা পড়েছে ধোবি ঘাটের ৷

এই পরিস্থিতিতে ক'দিন কাজ বন্ধ থাকলে অবস্থাপন্ন ধোপাদের হয়তো তেমন সমস্যা হবে না ৷ কিন্তু তাঁদের কাছের যে সমস্ত ধোপা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন তাঁদের অবস্থা শোচনীয় হয়েছে উঠেছে ৷ একে করোনার ধাক্কা চলছে গত প্রায় পনেরো মাস ধরে ৷

ধোবি কল্যাণ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সন্তোষ কনোজিয়া জানান, করোনার পর থেকে মানুষ নিজেরাই বাড়িতে কাপড় কেচে নিতে চাইছেন ৷ ধোপাদের কাপড় পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না অনেকেই ৷ তাতে ব্যবসা খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে ৷ তার উপর আবার লকডাউনে স্বাভাবিক যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা কাপড় আনা এবং কাচা কাপড় পৌঁছনোর ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের ৷ তার ফলেও হাতে আসছে না অনেক কাজই ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
এবছরও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় মাস দেড়েক বন্ধ থাকে কাজ ৷

ওয়াশিং মেশিন বা শহরের অলিতে গলিতে ড্রাই ক্লিনিংয়ের দোকান গজিয়ে ওঠার পরও ব্যবসা কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বটে ৷ তবে তারপরও কীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এখানকার ধোপারা? তার কারণ খুব সোজা ৷ এমনিতে ড্রাই ক্লিনারের কাছে একটি জামা বা প্যান্ট কাচার খরচ যেখানে 50 টাকা বা তার বেশি, সেই জায়গায় এখানকার ধোপাদের কাছে এখনও অবধি তা পাঁচ-সাত টাকার মধ্যেই মিটে যায় ৷ মুম্বইয়ের মতো জনসমুদ্রের মধ্যে এমনিতে তাঁদের কাস্টমার ধরে রাখতেও বেগ পেতে হয় না ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
একটা দিনও কাপড় কাচা বন্ধ থাকা ধোবি ঘাটে বেশ অস্বাভাবিক ৷

আড়াই একর জমিতে তৈরি হয় সেই ব্রিটিশ আমলে ৷ সালটা 1890 ৷ মুম্বইয়ের মহালক্ষ্মীতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওপেন এয়ার লন্ড্রি এই ধোবি ঘাট স্বাভাবিক ভাবেই গ্রেড-থ্রি হেরিটেজ তকমা পেয়েছে ৷ 731টি কংক্রিটের মাপ মতো চৌবাচ্চায় প্রতিদিন আট হাজার ধোপা দিনে অন্তত কুড়ি ঘণ্টা করে কাজ চালিয়ে যান এখানে ৷ দৈনিক ধোওয়া হয় এক লক্ষের বেশি কাপড় ৷ 2018-র মে মাস নাগাদ বৃহনমুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (BMC) (Brihanmumbai Municipal Corporation) তরফে ধোবি ঘাটের ভোল বদলে দেওয়ার জন্য তিন বছরের একটি পরিকল্পানা নেওয়া হয় ৷ সাড়ে বারো একর জমিতে তৈরি হয় নতুন ধোবি ঘাটের ব্লু-প্রিন্ট ৷ ওয়াশিং মেশিন এবং যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাপড় শুকনো করার ব্যবস্থার পরিকল্পনাও নেওয়া হয় ৷ তবে সেই পরিকল্পনা খুব বেশি এগোতে পারেনি পরবর্তী নানা সমস্যায় ৷ তার মধ্যে অবশ্য প্রধান হল দেশে করোনা পরিস্থিতি ৷

তবে সেই কাজ ব্যাহত হয় বর্ষায় ৷ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা তলানিতে ঠেকলে যা হয় তাই ঘটে প্রতি বছর জুন মাস নাগাদ মুম্বইতে ৷ রাজপথে নৌকা চলার দৃশ্য দেখা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় নগরীকে ভেনিসের সঙ্গে তুলনা করে ঠাট্টা করা হয় ৷ সেখানে শতাব্দী প্রাচীন ধোবি ঘাট জলমগ্ন হয়ে ধাক্কা খাবে এটা হয়তো স্বাভাবিকই ৷

আরও পড়ুন : Weather Forecast : বর্ষা এল বঙ্গে, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

মুম্বই, 12 জুন : মুম্বইয়ের ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া ধোবি ঘাট (Dhobi Ghat) থেকে বছরজুড়ে যে পরিমাণ টাকা উপার্জিত হয় তা পরিমান শুনলে চোখ কপালে উঠবে ৷ ঘরে ঘরে ওয়াশিং মেশিন এসে যাওয়ার পরও তার পরিমান কমবেশি 100 কোটি টাকা ! এমন কোনও দিন যায় না যেদিন কাজ বন্ধ থাকে এখানে ৷ তবে বর্ষায় প্রতি বছরই সমস্যার মুখে পড়তে হয় এখানকার ধোপাদের ৷ এবছরও তাই ৷

গত কয়েকদিনের ক্রমাগত বৃষ্টির জল জমেছে ধোবি ঘাটে ৷ 1 থেকে 9 জুন মুম্বইয়ে 416.2 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ৷ সমস্যায় পড়তে হয়েছে ধোপাদের ৷ গত বছর লকডাউনেও কাজ বন্ধ ছিল ৷ গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় 40 শতাংশ ব্যবসা পড়ে যায় লকডাউনের জন্য ৷ এবছরও দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভাবাচ্ছে ৷ এবছরও মার্চের পর থেকে মাস দেড়েক বন্ধ থেকেছে কাজ ৷ তার উপর আবার বর্ষার ঠেলা ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
গত বছর করোনায় লকডাউন থেকেই ব্যবসা পড়েছে ধোবি ঘাটের ৷

এই পরিস্থিতিতে ক'দিন কাজ বন্ধ থাকলে অবস্থাপন্ন ধোপাদের হয়তো তেমন সমস্যা হবে না ৷ কিন্তু তাঁদের কাছের যে সমস্ত ধোপা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন তাঁদের অবস্থা শোচনীয় হয়েছে উঠেছে ৷ একে করোনার ধাক্কা চলছে গত প্রায় পনেরো মাস ধরে ৷

ধোবি কল্যাণ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সন্তোষ কনোজিয়া জানান, করোনার পর থেকে মানুষ নিজেরাই বাড়িতে কাপড় কেচে নিতে চাইছেন ৷ ধোপাদের কাপড় পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না অনেকেই ৷ তাতে ব্যবসা খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে ৷ তার উপর আবার লকডাউনে স্বাভাবিক যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা কাপড় আনা এবং কাচা কাপড় পৌঁছনোর ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের ৷ তার ফলেও হাতে আসছে না অনেক কাজই ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
এবছরও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় মাস দেড়েক বন্ধ থাকে কাজ ৷

ওয়াশিং মেশিন বা শহরের অলিতে গলিতে ড্রাই ক্লিনিংয়ের দোকান গজিয়ে ওঠার পরও ব্যবসা কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বটে ৷ তবে তারপরও কীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এখানকার ধোপারা? তার কারণ খুব সোজা ৷ এমনিতে ড্রাই ক্লিনারের কাছে একটি জামা বা প্যান্ট কাচার খরচ যেখানে 50 টাকা বা তার বেশি, সেই জায়গায় এখানকার ধোপাদের কাছে এখনও অবধি তা পাঁচ-সাত টাকার মধ্যেই মিটে যায় ৷ মুম্বইয়ের মতো জনসমুদ্রের মধ্যে এমনিতে তাঁদের কাস্টমার ধরে রাখতেও বেগ পেতে হয় না ৷

অচল মায়ানগরীতে ধুঁকছে ধোবি ঘাট
একটা দিনও কাপড় কাচা বন্ধ থাকা ধোবি ঘাটে বেশ অস্বাভাবিক ৷

আড়াই একর জমিতে তৈরি হয় সেই ব্রিটিশ আমলে ৷ সালটা 1890 ৷ মুম্বইয়ের মহালক্ষ্মীতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওপেন এয়ার লন্ড্রি এই ধোবি ঘাট স্বাভাবিক ভাবেই গ্রেড-থ্রি হেরিটেজ তকমা পেয়েছে ৷ 731টি কংক্রিটের মাপ মতো চৌবাচ্চায় প্রতিদিন আট হাজার ধোপা দিনে অন্তত কুড়ি ঘণ্টা করে কাজ চালিয়ে যান এখানে ৷ দৈনিক ধোওয়া হয় এক লক্ষের বেশি কাপড় ৷ 2018-র মে মাস নাগাদ বৃহনমুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (BMC) (Brihanmumbai Municipal Corporation) তরফে ধোবি ঘাটের ভোল বদলে দেওয়ার জন্য তিন বছরের একটি পরিকল্পানা নেওয়া হয় ৷ সাড়ে বারো একর জমিতে তৈরি হয় নতুন ধোবি ঘাটের ব্লু-প্রিন্ট ৷ ওয়াশিং মেশিন এবং যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাপড় শুকনো করার ব্যবস্থার পরিকল্পনাও নেওয়া হয় ৷ তবে সেই পরিকল্পনা খুব বেশি এগোতে পারেনি পরবর্তী নানা সমস্যায় ৷ তার মধ্যে অবশ্য প্রধান হল দেশে করোনা পরিস্থিতি ৷

তবে সেই কাজ ব্যাহত হয় বর্ষায় ৷ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা তলানিতে ঠেকলে যা হয় তাই ঘটে প্রতি বছর জুন মাস নাগাদ মুম্বইতে ৷ রাজপথে নৌকা চলার দৃশ্য দেখা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় নগরীকে ভেনিসের সঙ্গে তুলনা করে ঠাট্টা করা হয় ৷ সেখানে শতাব্দী প্রাচীন ধোবি ঘাট জলমগ্ন হয়ে ধাক্কা খাবে এটা হয়তো স্বাভাবিকই ৷

আরও পড়ুন : Weather Forecast : বর্ষা এল বঙ্গে, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

Last Updated : Jun 12, 2021, 1:57 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.