লুধিয়ানা, 21 নভেম্বর: দিল্লির বাতাস যত বিষময় (Delhi Air Pollution) হয়ে ওঠে, ততই তার দায় এসে পড়ে পঞ্জাবের উপর । কিন্তু সেখানে ফসলের গোড়া পোড়ানোর (Stubble Burning) সঙ্গে রাজধানীর দূষণের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের । তাঁদের দাবি, বাতাসে বিষের জন্য দিল্লি নিজেই দায়ী ।
পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বিজ্ঞানী প্রভজ্যোত কউর সিধু জানিয়েছেন, গত চার বছর ধরে বাতাসের গতিবিধির উপর নজরদারি চালিয়েই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তাঁরা ।
প্রভজ্যোত বলেন, ‘‘গত চার বছর ধরে 1 থেকে 16 অক্টোবর পর্যন্ত নজরদারি চালিয়ে যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখেছি আমরা ৷ এই সময়ে বর্ষা কেটে যায় ৷ তাপমাত্রা নীচে নামতে থাকে ৷ এর ফলে হাওয়ার গতি সর্বোচ্চে 2 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় অথবা তার নীচেই ঘোরাফেরা করে ৷ দূষণ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে হাওয়ার গতি থাকতে হয় অন্তত 5 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ৷’’
পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রভজ্যোত বলেন, ‘‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2019 থেকে 2020, এই এক বছরে মাত্র চার বার হাওয়ার গতি 5 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বা তার বেশি ছিল ৷ সেই সময় হাওয়ার গতি ছিল দক্ষিণমুখী, অর্থাৎ দিল্লিমুখী নয় ৷ তাই পঞ্জাবে ফসলের গোড়া পোড়ানো থেকেই দিল্লিতে দূষণ বাড়ছে বলাটা ঠিক নয় ৷’’
পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃষি আবহাওয়া বিভাগেরও প্রধান প্রভজ্যোত ৷ তাঁর যুক্তি, উচ্চগতিসম্পন্ন বাতাসে ভর করেই দূষণ সৃষ্টিকারী উপাদান এক জায়গা থেকে অন্যত্র যায় । এক্ষেত্রে দিল্লি নিজেই নিজের দূষণের জন্য দায়ী । তা ছাড়া পঞ্জাবের থেকে দিল্লির বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা ঢের বেশি ।
বছরের পর বছর দিল্লিতে দূষণ যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে গোটা দেশে । কৃষিপ্রধান দুই পড়শি রাজ্য, পঞ্জাব এবং হরিয়ানাকে এর জন্য অনেকাংশে দায়ী করা হয়ে থাকে । শীতের আগে সেখানে ফসলের গোড়া পোড়ানোয় দিল্লি ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এবং তাতে বাতাস আরও বিষাক্ত হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ ।
আরও পড়ুন: Ashok Gehlot Cabinet Resigned : রাজস্থানে গেহলত মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ সমস্ত মন্ত্রীর
যদিও সম্প্রতি পাঞ্জাবের উপর দোষ চাপানোর তীব্র বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্ট । শীর্ষ আদালতের যুক্তি ছিল, পঞ্জাবে ফসলের গোড়া পোড়ানো যদিও বা দিল্লি দূষণের জন্য দায়ী হয়, তার প্রভাব খুবই সামান্য । বরং যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া, কল-কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, বাজি পোড়ানো থেকেই দিল্লির বাতাসে বিষ মিশেছে, যা রুখতে সে ভাবে কোনও পদক্ষেপই করেনি কেন্দ্র এবং দিল্লির সরকার ।