নয়াদিল্লি, 27 নভেম্বর: এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় (Aircel-Maxis Case) এ বার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং তাঁর ছেলে কার্তি চিদম্বরমকে সমন পাঠাল দিল্লির আদালত (P Chidambaram Summoned) । সমন পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি মামলায় (Aircel-Maxis Corruption Case) অভিযুক্ত অন্যদেরও । আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), দুই সংস্থায় দুর্নীতি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে (CBI-ED Investigate Aircel-Maxis Case) । বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে পিতা-পুত্র এবং বাকিদের । সেই মতো 20 ডিসেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে হবে ।
শনিবার দিল্লির বিশেষ আদালতে বিশেষ বিচারক এমকে নাগপালের এজলাসে শুনানি চলছিল । সিবিআই এবং ইডি-র তরফে সেখানে প্রতিনিধিত্ব করছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সঞ্জয় জৈন । তিনি জানান, দুর্নীতির তদন্তে সহযোগিতা চেয়ে সিঙ্গাপুর এবং লন্ডনের মতো দেশের আদালতে লেটার্স রোগেটরি (এলআর) পাঠিয়েছে সিবিআই এবং ইডি । তাতে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে । সেই নিয়েই অভিযুক্তদের আদালতে হাজির হওয়া প্রয়োজন । তাতেই চিদম্বরম, কার্তি এবং বাকিদের সমন পাঠায় আদালত ।
তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা নিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই এবং ইডি । সেই সময়ও আদালত জানায়, চিদম্বরম এবং কার্তির বিরুদ্ধে তদন্তকারী দুই সংস্থার অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর ।
আরও পড়ুন: Tractor March Postponed: সংসদে ট্রাক্টর অভিযান স্থগিত রাখল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা
এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই টানাপড়েন চলছে । ইউপিএ আমলে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তি এবং আইএনএক্স মিডিয়া সংস্থাকে বিদেশি লগ্নি-প্রসার বোর্ড (এফআইপিবি)-এর ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কারচুপি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ । তদানীন্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন বলে দাবি সিবিআই এবং ইডি-র । তাদের দাবি, সেই সময় এয়ারসেল সংস্থায় মরিশাসের ম্যাক্সিস সংস্থা 3 হাজার 200 কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ।
তদন্তকারী দুই সংস্থার দাবি, সরকারি নীতি অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী হিসেবে সেই সময় বিদেশি লগ্নি উন্নয়ন পর্ষদের কাছে 600 কোটি টাকা পর্যন্ত ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা ছিল চিদম্বরমের । বিনিয়োগের পরিমাণ তার বেশি হলে, বিষয়টি মন্ত্রিসভার অর্থ কমিটির কাছে পাঠানোই নিয়ম ছিল । তা না করে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ কমিয়ে 180 কোটি টাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের ।
তদন্তকারীদের দাবি, এই বিদেশি বিনিয়োগের সঙ্গে যুক্ত ছিল চিদম্বরমের ছেলে কার্তির সংস্থা । কার্তির সংস্থাকে ঘুষ দিয়েই চিদম্বরমের কাছে ছাড়পত্রের জন্য যায় দুই বিনিয়োগ । সব কিছু জেনেও, ছেলের সংস্থার স্বার্থেই বিনিয়োগের অঙ্ক কমিয়ে চিদম্বরম তাতে ছাড়পত্র দেন বলে অভিযোগ সিবিআই এবং ইডি-র । আইএনএক্স মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর স্বামী পিটার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে চিদম্বরম আলাদা করে সাক্ষাৎ করেন বলেও অভিযোগ । যদিও চিদম্বরম এবং কার্তি শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন । তাঁদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তদন্তকারীদের নামিয়ে তাঁদের হেনস্থা করছে ।