হোশিয়ারপুর (পঞ্জাব), 13 ফেব্রুয়ারি: একে কী বলবেন ? বাহাদুর সিংয়ের বাহাদুরি ? নাকি দামি বেসরকারি হাসপাতালের চরম অবহেলা ও গাফিলতি? বাহাদুর সিং পঞ্জাবের (Punjab) হোশিয়ারপুরের (Hoshiarpur) নঙ্গল শহিদ গ্রামের রাম কলোনির বাসিন্দা ৷ অসুস্থতার কারণে ভরতি হন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৷ সেখানে তাঁকে 'মৃত' বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷ প্রিয়জনকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাহাদুর সিংয়ের আত্মীয় ও পরিজনেরা ৷ কিন্তু, তারপরই তাঁরা খেয়াল করেন বাহাদুর সিংয়ের শরীরের নানা অংশ খুব ধীরে হলেও নড়ছে ! সঙ্গে সঙ্গে বাহাদুর সিংকে চণ্ডীগড়ের পিজিআইএমইআর (Post Graduate Institute of Medical Education and Research)-এ নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পরবর্তীতে সেখানেই জ্ঞান ফেরে বাহাদুর সিংয়ের !
বাহাদুরের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই সর্দি, কাশিতে ভুগছিলেন তিনি ৷ বাড়াবাড়ি হওয়ায় তাঁকে স্থানীয় আইভিওয়াই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ কিন্তু, 4 ঘণ্টা পরই ওই বেসরকারি হাসপাতালে তরফে জানানো হয়, বাহাদুর সিং মারা গিয়েছেন ৷ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, আত্মীয়রা যেন হাসপাতালের বিল মিটিয়ে বাহাদুরের 'দেহ' বাড়ি নিয়ে যান ! কিন্তু, এরপরই আত্মীয়রা বাহাদুরের শরীরে প্রাণের স্পন্দন দেখতে পান !
আরও পড়ুন: পুরীতে দুর্ঘটনার কবলে পুর্ণ্যাথীদের বাস, আহত বাংলার 14 জন পর্যটক
পিজিআইএমইআর সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থতা ও ক্লান্তির জন্য বাহাদুর সিং কেবলমাত্র অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁর মধ্যে মৃত ব্যক্তির কোনও লক্ষণ ছিল না ৷ প্রশ্ন হল, তাহলে কী দেখে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মনে হল, বাহাদুর সিং প্রয়াত ? এই ঘটনার পর বেজায় চটেছেন বাহাদুর সিংয়ের পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁরা আইভিওয়াই হাসপাতালের বাইরে ধরনায় বসেন ৷ তাঁদের দাবি, ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে এবং এই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে ৷ সবথেকে আজব বিষয় হল, যে বাহাদুর সিংকে নিয়ে এত কাণ্ড, তিনিও এই ধরনায় সামিল হন !
বাহাদুর সিংয়ের স্ত্রী কুলবিন্দর কউর এই প্রসঙ্গে জানান, তাঁর স্বামীকে আইভিওয়াই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করে নেওয়া হয় ৷ বাহাদুর সিংয়ের শরীরে একটি নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ৷ প্রায় 4 ঘণ্টা বাহাদুরকে ওভাবেই রাখা হয় ৷ সেই সময় বাড়ির সদস্যদেরও সেখানে থাকতে দেওয়া হয়নি ৷ এমনকী, কর্তব্যরত নার্সরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন বলে অভিযোগ ৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্য়েই সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ঘটনার তদন্ত চলছে ৷