কলকাতা, 19 নভেম্বর: আগামী 26 নভেম্বর ভারতীয় সংবিধান দিবস (Constitution Day) । তা উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি (UGC) দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষ বক্তৃতার আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন । ইউজিসি চেয়ারম্যান এম জগদীশ কুমার দেশের সমস্ত রাজ্যপালদের চিঠি দিয়ে রাজ্যের কলেজ (College) ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে (University) ভারতীয় দর্শনে 'আদর্শ রাজা', 'খাপ পঞ্চায়েত' ও 'গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য'-সহ 15টি বিষয়ে বক্তৃতা সভার আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে । আর এই নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করল সিপিএমের (CPIM) পলিটব্যুরো । এই নির্দেশ প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে ।
সিপিএমের পলিটব্যুরোর বক্তব্য, "ইউজিসির এই উদ্যোগ পুরোপুরি সংবিধান বিরোধী এবং ইউজিসির নীতি লঙ্ঘন করছে । এই জাতীয় উদ্যোগ বন্ধ করার দাবিতে দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক সংগঠন ও গণতন্ত্র প্রিয় মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান ও জানানো হয়েছে ।’’
-
The UGC chairperson’s ridiculous claim is that ancient India was unique because there was no autocracy or aristocratism. This is a negation of the reality of Varnashram and the caste based social hierarchy that is a major challenge in the evolution of our modern democracy. pic.twitter.com/HVXA3tCD5V
— Sitaram Yechury (@SitaramYechury) November 18, 2022 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">The UGC chairperson’s ridiculous claim is that ancient India was unique because there was no autocracy or aristocratism. This is a negation of the reality of Varnashram and the caste based social hierarchy that is a major challenge in the evolution of our modern democracy. pic.twitter.com/HVXA3tCD5V
— Sitaram Yechury (@SitaramYechury) November 18, 2022The UGC chairperson’s ridiculous claim is that ancient India was unique because there was no autocracy or aristocratism. This is a negation of the reality of Varnashram and the caste based social hierarchy that is a major challenge in the evolution of our modern democracy. pic.twitter.com/HVXA3tCD5V
— Sitaram Yechury (@SitaramYechury) November 18, 2022
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির (Sitaram Yechury) বক্তব্য, "ইউজিসি চেয়ারম্যানের হাস্যকর দাবি হল, প্রাচীন ভারতের দারুণ অবস্থা ছিল। কারণ, সেই সময় কোনও স্বৈরতন্ত্র বা অভিজাততন্ত্র ছিল না । আসলে ইউজিসির এই নির্দেশ দেশে বর্ণাশ্রমের বাস্তবতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে । এতে যে জাতভিত্তিক সামাজিক প্রাধান্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তা আসলে আধুনিক গণতন্ত্রের বিকাশের বিরুদ্ধে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে ।"
তাঁর আরও অভিযোগ, "ভারত গণতন্ত্রের জননী শিরোনামে যে বক্তৃতায় বেদের সময় গণতন্ত্র কেমন ছিল, ভারতীয় দর্শনে আদর্শ রাজার কথা তুলে ধরা, খাপ পঞ্চায়েত দেশের যে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য বহন করছে, তা তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে ।’’
সবমিলিয়ে ইউজিসি 15টি বিষয়ের উপরে বক্তৃতার আয়োজন করতে বলেছে । এর মধ্যে রয়েছে আদর্শ রাজার ধারণা, বেদের সময় থেকে ভারতের গণতন্ত্র, বিশ্বের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার নির্মাণে অগ্রবর্তী ছিল হরপ্পাবাসী, খাপ পঞ্চায়েত এবং তাদের গণতান্ত্রিক পরম্পরা, অশোকের আক্রমণের সময়ে কলিঙ্গে গণরাজ্যের অস্তিত্ব, প্রাচীন সংস্কৃত ধর্ম শাস্ত্রে গণতন্ত্র, প্রাচীন ভারতের রাজকীয় গণতন্ত্র: সংস্কৃত সাহিত্যে গণতান্ত্রিক প্রবণতার পরীক্ষা, প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় তামিলনাড়ুতে স্থানীয় শাসিত সংস্থা, অর্থশাস্ত্রে গণতান্ত্রিক চিন্তা এবং ঐতিহ্যের প্রতিফলন ইত্যাদি ।
এর বিরুদ্ধে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বক্তব্য, "ইউজিসি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সংবিধানের নিয়ম মতো নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল ৷ তা মানেনি ৷ আইন লঙ্ঘন করে সরাসরি আরএসএস-বিজেপির নিযুক্ত রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কর্মসূচি রূপায়ণ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে । এতে দেশের নয়া শিক্ষানীতির স্বরূপ প্রকাশ পাচ্ছে । বোঝা যাচ্ছে কেন্দ্র তাদের শিক্ষানীতিকে বৈজ্ঞানিক ভাবনা চিন্তা ও যুক্তিবোধকে ধ্বংস করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে ।"
আরও পড়ুন: নভেম্বর-ডিসেম্বর জুড়ে রাজ্যের প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে বৃত্ত বাড়াতে চায় সিপিএম