হাওড়া, 25 অক্টোবর : পুজোর কয়েকদিন কিছুটা শিথিলতার পর ফের রাজ্য ফিরছে পুরনো কড়া বিধিনিষেধ । বিশেষ করে নবান্নের কড়া বার্তা, উৎসবের পর থেকেই যেভাবে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে । কাজেই আবার সক্রিয় হচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসন । মূলত এই পর্বে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মাস্ক পরার উপর । কারণ সম্প্রতি যে সংক্রমণ লক্ষ্য করা গিয়েছে তার মধ্যে একটা বিরাট অংশ উপসর্গহীন । কাজেই মাস্ক ছাড়া রাস্তায় ঘোরা লোকজনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন । একইসঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের উপর । নবান্নের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি মাসে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে তাতে এই মুহূর্তে রাত্রিকালীন নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন:Mann Ki Baat : চাইলে অসাধ্য সাধন করতে পারে ভারত, 100 কোটি টিকাই তার প্রমাণ, ‘মন কি বাত’-এ মোদি
রাত 11টা থেকে ভোর 5টা পর্যন্ত রাস্তায় চলাফেরার উপর শুরু হয়েছে নজরদারি । প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আগামী দিনে রাত 11টা নয়, আরও দু’ঘণ্টা আগেই বিধি কার্যকরের পক্ষপাতী নবান্ন । সেক্ষেত্রে রাত 9টা থেকে ভোর 5টা পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে রাতের বিধিনিষেধ জারি থাকবে । নবান্ন সূত্রে এমনটারই ইঙ্গিত মিলেছে । এ প্রসঙ্গে নবান্নের এক পদস্থ আমলা বলেন, দুর্গাপুজোয় করোনা বিধি মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে । রাস্তায়, পুজো মণ্ডপের বাইরে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন । তাঁদের অধিকাংশই মাস্ক ছাড়া উৎসবে শামিল হয়েছেন । অসচেতন নাগরিকদের উদাসীনতার জন্যই আজ ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা ।
তিনি বলেন, করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হতেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রশাসনের শীর্ষ মহল । তাঁদের পরামর্শ, অবিলম্বে রাতের বিধির সময়সীমা বাড়াতে হবে । অর্থাৎ ভিড় যথাসম্ভব কমাতে হবে । সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সব জেলা প্রশাসনকে বাড়তি তৎপর হতে বলেছেন মুখ্যসচিব । একইসঙ্গে করোনা পরীক্ষা বাড়াতে ও টিকাকরণে গতি আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । যদিও ওই আমলার দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে এমন অনেক আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যাঁরা দু’টি টিকাই নিয়েছেন । এই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে নবান্নকে । সেক্ষেত্রে প্রকাশ্য জায়গায় মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে পুলিশকে আরও বেশি সক্রিয় হতে বলা হয়েছে ।
এদিকে কালীপুজোর আগে উত্তর 24 পরগনায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিও চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের । উত্তর 24 পরগনা বারাসাত, মধ্যমগ্রাম-সহ একাধিক জায়গায় কালীপুজোয় রাস্তা-ঘাটে বেশ ভিড় হয় । তাই কালীপুজোর আগেই মিনি কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরি করা হয়েছে বারাসতে । বারাসাত পৌরসভার 4 নম্বর ও 10 নম্বর ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন । আজ থেকে এই দুই ওয়ার্ডে যে যে বাড়িতে আক্রান্ত রয়েছে তাদের বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করেছে প্রশাসন । সরকারের পরিভাষায় এগুলি হল মিনি কনটেনমেন্ট জ়োন । ইতিমধ্যে বারাসতে বড় থেকে ছোট কালীপুজো কমিটিগুলো মণ্ডপ তৈরি শুরু করে দিয়েছে । প্রশাসনের তরফ থেকে পুজো কমিটিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভিআইপি পাস করা যাবে না ও তিন দিক খোলা প্যান্ডেল বানাতে হবে ।