নয়াদিল্লি, 30 ডিসেম্বর : ভোটের প্রচারে রাজনীতির কারবারিরা যদি কোভিডবিডি ভাঙেন (Covid Norms violation in Political Rallies), তাহলে তাদের কিছু করার নেই ! এক্ষেত্রে যা করার, তা করতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই (Election Commission of India) ! বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তরে কার্যত এভাবেই নেতা, মন্ত্রী ও রাজনৈতিক কর্মীদের কোভিডবিধি ভাঙার দায় এড়িয়ে গেলেন নীতি আয়োগের (Niti Aayog) সদস্য (স্বাস্থ্য) ড. ভি কে পল (Dr. V K Paul) ৷
আরও পড়ুন : Corona Update in India : দৈনিক সংক্রমণ 70 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছাল 13 হাজারে, ওমিক্রন 961
অতিমারির আবহে দেশে কার্যকর করা হয়েছে মহামারি আইন ৷ যদি কোনও ব্যক্তি, সংস্থা বা সংগঠনের দ্বারা কোভিডবিধি লঙ্ঘিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট আইন ব্যবহার করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষপ করা যেতে পারে ৷ যদিও বাস্তবে তার প্রয়োগ নগণ্য ৷ এই প্রেক্ষাপটে একের পর এক রাজ্যে ভোটের মরশুম শুরু হয়েছে ৷ পশ্চিমবঙ্গে পৌর নির্বাচন ও পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন ৷ অন্যদিকে, আগামী বছর থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোট ৷ রাজনৈতিক দলগুলি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, করোনার দোহাই দিয়ে ভোট বন্ধ করা চলবে না ৷ নির্বাচন কমিশনও সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ৷
সমস্যা হল, ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন খাতায়-কলমে কোভিডবিধি পালনের কথা বলা হলেও বাস্তবে তার কিছুই মানা হচ্ছে না ৷ দলমত নির্বিশেষে নেতা, কর্মী এমনকী মন্ত্রীরাও স্বাস্থ্যবিধি পালনের ধার ধারছেন না ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে বড় বড় জমায়েত, মিছিল করা হচ্ছে ৷ সেইসব কর্মসূচিতে অধিকাংশের মুখ মাস্কটুকুও থাকছে না ৷ অথচ দেশে ওমিক্রনের (Omicron Variant) সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে ৷ স্কুল, কলেজ খুলেও বন্ধ করে দিতে হচ্ছে ৷ এর জেরে আগামী দিনে আবার নাইট কার্ফু, কনটেইনমেন্ট জোন এমনকী প্রয়োজনে লকডাউন পরিস্থিতিও তৈরির সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ কিন্তু, তারপরও হুঁশ নেই রাজনীতির কারবারিদের ৷ বরং তাঁদের এমন আচরণে সাধারণ মানুষের মধ্যেও গা-ছাড়া মনোভাব বাড়ছে ৷ ফলে ফের একবার দেশের করোনা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
বৃহস্পতিবার নীতি আয়োগের সাংবাদিক সম্মেলনে এনিয়েই প্রশ্ন তোলেন এক সাংবাদিক ৷ তাঁর জিজ্ঞাস্য ছিল, রাজনীতিকদের এমন আচরণ বন্ধ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক কী পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে ? জবাবে স্পষ্টতই যাবতীয় দায় ও দায়িত্ব এড়িয়ে যান নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ড. ভি কে পল ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা নির্বাচন কমিশনের দেখার বিষয় ৷ এই মঞ্চ এই আলোচনার জন্য সঠিক নয় ৷’’
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যেখানে এত মানুষের বিপদ আসন্ন, সেখানে নীতি আয়োগের একজন সদস্যের এমন উত্তর কি আদৌ অভিপ্রেত ? দেশবাসীর স্বাস্থ্য, দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অবশ্যই রাষ্ট্রের দায়িত্ব ৷ কিন্তু, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাঁরা দেশবাসীর ভোট নিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছে যান, তাঁরাই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করলে, তাঁদের শোধরানোর দায় কার ? নির্বাচন কমিশন অনেক নিয়ম-নীতির কথা ঘোষণা করলেও বাস্তবে তা কতটা মেনে চলা হয়, তার নিদর্শন ইদানীংকালের বিভিন্ন ভোটে দেখা গিয়েছে ৷ তাহলে এখনও কেন বিধিভঙ্গের ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ করা হচ্ছে না ? এর উত্তর অজানা ৷