নয়াদিল্লি, 14 সেপ্টেম্বর: সাংবিধানিক ন্যায়ালয় হিসেবে সংবিধান রক্ষার দায় সুপ্রিম কোর্টের ৷ ফলে মৌলিক অধিকারগুলি অক্ষুণ্ণ রাখার দায়িত্ব তাদেরই ৷ এই আধারে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শীর অভিন্ন সাক্ষ্য তাদের একই ভূমিকায় অভিযুক্ত করলে, আদালত একজন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত এবং অন্যকে বেকসুর খালাস করতে পারে না ।
জাভেদ শওকত আলি কুরেশি বনাম স্টেট অব গুজরাত মামলায় শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ । বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং সঞ্জয় করোলের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যখন দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শীর অনুরূপ বা অভিন্ন প্রমাণ থাকে, তখন আদালত একজন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত এবং অন্যকে খালাস করতে পারে না ।’’ বেঞ্চ জানিয়েছে, এক্ষেত্রে উভয় অভিযুক্তের মামলা সমতার নীতি দ্বারা পরিচালিত হবে ।
বিচারপতি ওকা বলেন, ‘‘এই নীতির অর্থ হল, ফৌজদারি আদালতের মামলাগুলির মতো একইভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ৷ এই ধরনের ক্ষেত্রে আদালত দুই অভিযুক্তের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না ৷ করলে তা বৈষম্যের সমতূল্য ৷’’
শীর্ষ আদালতে এদিন 2016 সালের গুজরাত হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আবেদনের শুনানি চলছিল । এই মামলায় কয়েকজন আসামীর সাজা বহাল রেখে অন্যদের খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট । গুজরাত হাইকোর্টের ওই আদেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এক ব্যক্তি মামলা করেন ।
অ্যামিকাস কিউরি (একজন ব্যক্তি বা সংস্থা যিনি একটি আইনি মামলার পক্ষ নন , কিন্তু যাঁকে তথ্য, দক্ষতা বা অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে আদালতকে সহায়তা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ) শোয়েব আলম সুপ্রিম কোর্টকে জানান যে আবেদনকারীকে শুধুমাত্র একজন সাক্ষী সনাক্ত করেছিল ৷ যিনি অভিযোগ করেছিলেন যে ‘কেউ’ তার সোনার চেন টেনে নিয়েছিল ৷ আলম উল্লেখ করেন যে সাক্ষী আসামিকে চেনেন না এবং অভিযুক্তকে সঠিকভাবে সনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা করা হয়নি । আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অপরাধের জায়গায় জড়ো হওয়া জনতার মধ্যে প্রায় 100 জন লোক ছিল ।
অভিযুক্ত নম্বর 6 জাভেদ শওকত আলি কুরেশি গুজরাত হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ওই আবেদন করেছিলেন । জানানো হয়েছে, ওই মামলায় প্রাথমিকভাবে মোট 13 আসামীর বিচার হয়েছিল ৷ সাতজনকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছিল । ভারতীয় দণ্ডবিধির 149 ধারা-সহ 396 ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাজা ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড । হাইকোর্ট তাদের দোষী সাব্যস্ত করলেও সাজা কমিয়ে 10 বছর করে দেয় । তিনজন অভিযুক্ত 2016 সালে সর্বোচ্চ আদালতে ফৌজদারি আপিল করে ৷ 9 আগস্ট, 2018-এ তারা মুক্তি পায় ।
আরও পড়ুন: 30 বছর আগে ডাইনি অপবাদে হত্যা, সাজা মকুবের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে